ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

২৫-৩০ বছর বয়সী তরুণরাই উগ্রবাদে জড়িত হচ্ছে ॥ মনিরুল

প্রকাশিত: ০২:৫২, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

২৫-৩০ বছর বয়সী তরুণরাই উগ্রবাদে জড়িত হচ্ছে ॥ মনিরুল

অনলাইন ডেস্ক ॥ সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া জঙ্গীদের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, এদের মধ্যে কেউ আগে থেকে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েছে, কেউ নতুন করে জড়িয়েছে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীর ‘লুকরেটিভ ও অ্যাট্রাকটিভ’ প্যাকেজ থেকে তরুণরা আকৃষ্ট হচ্ছেন। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম কম, দায়িত্ববোধ নেই, মতাদর্শে দুর্বল, যারা বাস্তবতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছেনা এবং মানসিকভাবে দুর্বল, তারাই নতুন করে র‌্যাডিকালাইজড হচ্ছে। আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। উগ্রবাদ নির্মূলে সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিসার্ফ) উদ্যোগে ‘ঢাকা পিস টক’ নামে একটি কর্মসূচি শুরুর বিষয়টি জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ কর্মসূচিতে সার্বিক সহযোগিতা করবে সিটিটিসি এবং অর্থায়ন করছে ইউএসএআইডি। ‘ঢাকা পিস টক’ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হলেও বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকিতে পড়েছে। সহিংস ও উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রম একটি লংটার্ম প্রসেস। উগ্রবাদ দমনে শুধু পুলিশই নয়, পরিবার, সিভিল সোসাইটিসহ সবার সম্মিলিত প্রয়াস থাকতে হবে। সিটিটিসি উগ্রবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করছে, মামলার তদন্ত করছে। পাশাপাশি উগ্রবাদে প্রিভেন্টিভ উদ্যোগ হিসেবে ঢাকা পিস টক কাজ করবে বলেও জানান তিনি। ‘২৫-৩০ বছর বয়সী তরুণরাই উগ্রবাদে জড়িত হচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উগ্রবাদ একটি মতবাদ। এটিকে রুখতে পাল্টা মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করবে। ঢাকা পিস টকের মতো কার্যক্রম ঢাকার বাইরে শুরু করা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় এ প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। ঢাকায় সফল হলে দেশের অন্য কোথাও চালুর চিন্তা করা হবে। এ ধরনের কার্যক্রম আরও বেশি আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, হলি আর্টিজান পরবর্তী সময়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদ কমে যাওয়ায় এ কার্যক্রম কমে গেছে। কিন্তু জঙ্গীবাদের ঝুঁকি কমে যায়নি, এটা রিয়াল থ্রেট। এখনো বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও সুসংহতভাবে কাজ করবে ঢাকা পিস টক। সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভআকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিসার্ফ) প্রধান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শবনম আজিম বলেন, প্রথমে সমাজের ৩৬ জন বিশিষ্ট নাগরিকের একটি প্যানেল তৈরি করা হবে। এরপর ১২টি ইস্যুতে অনুষ্ঠেয় ডায়ালগে অংশগ্রহণ করবে অভিভাবক, শিক্ষক, বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, সরকারি প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক এনজিও, থিংক ট্যাংক, নারী নেত্রী, সিভিল সোসাইটি সংগঠন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, আদিবাসী গ্রুপ, তরুণসমাজ, লেখক, ব্লগারসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা। যেসব বিষয় নিয়ে সেমিনারে আলোচনা হবে সেগুলো হলো- মতাদর্শিক সহিংসতা প্রতিরোধে পরিবার ও উন্নত অভিভাবকত্ব, শিক্ষা ব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচি পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধ, তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে র‌্যাডিক্যালাইজেশন প্রতিরোধে জাতীয় নীতি প্রণয়ন, উগ্রবাদ প্রতিরোধে নারীর ভূমিকা, উগ্রবাদে জড়িতদের সামাজিক পুনর্বাসন, শান্তির পথে আন্তঃধর্ম সমন্বয়, উগ্রবাদের খবর পরিবেশনে গণমাধ্যমের ভূমিকা, উগ্রবাদ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঝুঁকি প্রবণতা, আগামীতে করণীয় ইত্যাদি।
×