ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সুশীল সমাজের আহ্বান

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ঋণ নয়, অনুদান চাই

প্রকাশিত: ০৭:৫৩, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ঋণ নয়, অনুদান চাই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশের সুশীল সমাজ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংকের কাছে ঋণের পরিবর্তে অনুদান চেয়েছে। সম্প্রতি সফরে এসে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশকে দুই শ’ কোটি ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে দেশের সুশীল সমাজ বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুত ওই সহায়তা বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। সেমিনারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে দুই শ’ কোটি ডলার দিতে চায়। বিশ্বব্যাংক এই টাকা অনুদান হিসেবে দিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তিনি বলেন, এতদিন আমরা উন্নত দেশগুলোর কাছে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ চেয়ে এসেছি। এখন এই ক্ষতিপূরণ ঋণ হলে আমাদের আপত্তি আছে। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিবর্তন ঠিক হবে না। সরকার, সুশীল সমাজ ও এনজিওদের জলবায়ু সম্মেলনে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সরকার ও সুশীল সমাজ এক হয়ে গেলে সুশীল সমাজ গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। তাই সম্মেলনে সরকার ও সুশীল সমাজকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা কোন সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে যেতে চাই না। সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে আমাদের কেউ গুরুত্ব দেবে না। উগ্র মনোভাব নিয়ে আমরা আমাদের দাবি অর্জন করতে পারব না। তবে আমদের সবাইকে বাংলাদেশের স্বার্থেই কথা বলতে হবে। সাবেক পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ব্যবসার ক্ষেত্রে তৈরি করছে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক যে কোন ব্যবসার চেষ্টাকে রোধ করা উচিত। তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্র কবে থেকে কার্বন কমানো শুরু হবে তার একটি ‘পিকিং ইয়ার’ ঠিক করা উচিত। এই পিকিং ইয়ারের ব্যাপারে উন্নত, উন্নয়নশীল ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য তিনটি প্রস্তাব থাকা উচিত। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে। আসন্ন মারাকাশ সম্মেলন প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এবারের সম্মেলনে জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে বিধি তৈরি হবে। ওই বিধি তৈরির সময় আমাদের মাইগ্রেশন ইস্যুকে জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। আটটি অধিকারভিত্তিক নগরিক সংগঠন বৃহস্পতিবার সকালে ‘বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর পক্ষে সুশীল সমাজের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এতে বক্তব্য রাখেন ইক্যুইটি বিডির সমন্বয়ক রেজাউল করিম চৌধুরী, সিএসআরএলের সমন্বয়কারী শারমিন্দ নিলর্মি, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন ধারার নির্বাহী পরিচালক আমিনুর রসুল, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জিয়াউল হক, বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী পরিচালক ড. নিলুফার বানু ও অক্সফামের মোজাহিদুল ইসলাম নয়ন। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের দেশে এবং বিদেশে আলোচনা প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত।
×