সংবাদ সম্মেলন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত স্মৃতি পুনঃসৃজন করতে রাজধানীর রাজপথে আসছে গণ-অর্থায়নে নির্মিতব্য রাজপথ-গণপরিবেশনা ‘লাল মজলুম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি সুইমিং পুলে এক সংবাদ সম্মেলনের একথা জানানো হয়। আগামী শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাবি ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এই ‘লাল মজলুম’। যেখানে রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শিত হবে নৃত্য,পথনাটক, পোস্টারনাটক, ইনস্টলেশন,চিত্রকর্ম,বিভিন্ন ঘরানার সংগীত।
এছাড়াও থাকবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা পরিবেশনা। এই গণপরিবেশনার ভাবনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. শাহমান মৈশান।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. শাহমান মৈশান বলেন, লাল মজলুম পরিবেশনাটি একদিকে শিক্ষার্থী-শ্রমিক জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তাক্ত স্মৃতি যেমন পুনঃসৃজন করে, তেমনি এই জনপদে ইতিহাসের বিভিন্ন চিরায়ত অভ্যুত্থানকেও একসূত্রে গ্রথিত করে।
এছাড়াও, বর্তমান সময়ে দেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক-সামাজিক সংকটগুলোকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। আঙ্গুল তোলে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। পরিবেশনাটি প্রশ্ন উত্থাপন করে সমাজে টিকে থাকা কতৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক রাগীব নাঈম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিজয়গাঁথার একদিনের ফসল নয় বরং এর পেছনে রয়েছে বিরাট এক ইতিহাস। সেই ইতিহাসেরই বিস্ফোরণ এই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এবং বিজয় অর্জন। কিন্তু আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি বিজয় অর্জিত হওয়ার পর পরই আমরা আবার আগের মতো আলাদা হয়ে যাচ্ছি। দেশজুড়ে ঘটছে অসংখ্য সহিংসতার ঘটনা। অঞ্চল কেন্দ্রীক কে ক্ষমতা পেল কে পেল না এই নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক।
আমরা এই পরিবেশনাটির মাধ্যমে এই মেসেজটি পৌঁছে দিতে চাই যে, আলাদা হওয়ার মাধ্যমে কখনও ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। এতে বরং আমাদের বিভেদ সৃষ্টি হয়, এখন বিভেদের সময় নয়। আমরা যেমন করে স্বৈরাচারী হাসিনার মূলোৎপাটন করেছে এক সাথে হাতে হাত রেখে সেভাবেই সামনের দিকে দেশটিকে এগিয়ে নিতে চাই।
এ বিষয়ে আরেক আয়োজক আশরাফুল ইসলাম সায়ান বলেন, এই পরিবেশনাটির মাধ্যমে আমরা ঐকের শক্তি আরও একবার দেশের মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই৷ আমাদের এই আয়োজনে স্থান পেয়েছে সেই সকল দুর্বিষহ সময়ের ঘটনাগুলো যা আমাদেরকে তারিত করেছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য। আমাদের এই আয়োজনের মাধ্যমে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষদের এই বার্তা দিতে চাই যে, আওয়াজ তুলুন সকল বৈষম্য, বিভেদ,জুলুম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
আমরা বিনির্মাণ করতে চাই এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু নয় বরং গুরুত্ব পাবে মনুষ্যত্ত্ব। আমরা সকল আগ্রাসী মনোভাবকে উপরে ফেলে হাতে হাত ধরে এগিয়ে যেতে চাই সামনের দিকে। সাংস্কৃতিক বিপ্লব হোক মজলুমের কন্ঠ, প্রতিবাদের ভাষা এবং অন্যায়ের আপোষহীন জয়ধ্বনি।
এসআর