
ছবিঃ সংগৃহীত
শিশুদের আচরণ সংশোধনের জন্য কঠোর শাস্তির পরিবর্তে এখন বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন কোমল কিন্তু কার্যকর শাসন পদ্ধতির। এই ধরণের শাসন পদ্ধতি শিশুর ভেতর আস্থা, সহানুভূতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণ গড়ে তোলে। এখানে তুলে ধরা হলো কোমলভাবে শিশুকে শাসনের ১০টি উপায়—
১. পরিষ্কারভাবে নিয়ম নির্ধারণ করুন
শিশুদের জন্য সহজবোধ্য ও স্পষ্ট নিয়ম তৈরি করুন। নিয়ম বারবার মনে করিয়ে দিলে তারা শৃঙ্খলার গুরুত্ব বুঝতে শিখবে এবং নিরাপত্তাবোধ ও দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে।
২. ইতিবাচক আচরণের প্রশংসা করুন
ভুল ধরার চেয়ে ভালো কাজের প্রশংসা করা শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। প্রশংসা, আলিঙ্গন বা ছোট পুরস্কারের মাধ্যমে উৎসাহিত করলে শিশুর মধ্যে ইতিবাচক আচরণ তৈরি হয়।
৩. নিজের আচরণের মাধ্যমে শিখান
শিশুরা যা দেখে তাই শেখে। দৈনন্দিন জীবনে ধৈর্য, সৌজন্য ও সহানুভূতির আচরণ দেখিয়ে তাদের ভিতরে এই গুণগুলো গড়ে তুলুন।
৪. সমস্যার সমাধানে সহায়তা করুন
শাস্তি দেওয়ার বদলে প্রশ্ন করুন, “পরের বার আমরা কীভাবে ভালো করতে পারি?” এতে শিশু ভাবতে শিখবে এবং নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে পারবে।
৫. টাইম-আউট নয়, টাইম-ইন ব্যবহার করুন
শিশুকে একা ফেলে না রেখে পাশে বসে তার অনুভূতির কথা শুনুন। এতে শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা হয় এবং সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
৬. আদেশ নয়, বিকল্প দিন
“এখন ঘর পরিষ্কার করবে, না খাবার পরে?”—এভাবে বিকল্প দিয়ে কথা বললে শিশু নিজে সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে এবং বিরোধ কমে যাবে।
৭. শান্ত থাকুন, কিন্তু দৃঢ় থাকুন
রাগ না দেখিয়ে ধৈর্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে কথা বলুন। চোখে চোখ রেখে শান্তভাবে কথা বললে শিশু সম্মান ও নিরাপত্তা অনুভব করে।
৮. প্রাকৃতিক পরিণতির শিক্ষা দিন
যদি জ্যাকেট না পরে বাইরে যেতে চায়, তবে হালকা ঠাণ্ডা অনুভব করুক। এতে সে বুঝতে শিখবে কেন জ্যাকেট পরা জরুরি।
৯. আবেগ বুঝতে সাহায্য করুন
শিশুর মনোভাব ও অনুভূতির ব্যাখ্যা দিন। “তুমি বিরক্ত হচ্ছো কারণ খেলনা কেড়ে নেওয়া হয়েছে”—এভাবে বললে সে নিজের আবেগ চিনতে ও বুঝতে শিখবে।
১০. ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন
শুধু আচরণ শোধরানোর চেষ্টা না করে, শিশুর সঙ্গে বিশ্বাস ও ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলুন। সম্পর্ক যদি দৃঢ় হয়, শাসনও সহজ হয়।
শিশুদের শাস্তি দিয়ে নয়, ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে শেখানোই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার সঠিক উপায়—বিশেষজ্ঞদের এমনটাই মত।
রিফাত