
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলা গানের প্রথিতযশা শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় শনিবার কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
হাসপাতালে থাকাকালীন তার একটি অপারেশন করা হয়েছিল। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। এ বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক ছিল।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের চিকিৎসার সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী তাকে দেখতে হাসপাতালে যান। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সামাজিক মাধ্যমে মমতা ব্যানার্জী লিখেছেন, "যতদিন বাংলা গান থাকবে, ততদিন 'আমি বাংলায় গান গাই' বাঙালির মুখে মুখে ফিরবে।"
তার বিখ্যাত গান 'আমি বাংলায় গান গাই' ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার এক শ্রোতা জরিপে 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গান' তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিল। যদিও মূল গানটি তার গলায় জনপ্রিয় হয়েছিল, তবে বাংলাদেশের শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবুর পরিবেশনায় গানটি শ্রোতারা ওই জরিপে বেছে নিয়েছিলেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায় মৃত্যুর আগে তার দেহ দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাই তার মরদেহের সৎকার না করে তা এসএসকেএম হাসপাতালে গবেষণার জন্য দান করা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় দিয়েছে।
তার মরদেহ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রবীন্দ্র সদনে নিয়ে আসা হয়, যেখানে হাজারো ভক্ত এবং সাধারণ মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া 'বঙ্গ-বিভূষণ', 'সঙ্গীত সম্মান', 'সঙ্গীত মহাসম্মান', এবং 'নজরুল স্মৃতি পুরস্কার' সহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
বরিশালে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তার বাবা ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক। দেশভাগের পর তিনি পরিবারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কোনো প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা না থাকলেও, তার পরিচিতরা বলেন, গান ছিল তার জন্মগত প্রতিভা। তার মৃত্যুতে বাংলা সঙ্গীত জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
সায়মা ইসলাম