ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

সুবা ইস্যুতে ফেসবুক কমেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২৩:৩৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সুবা ইস্যুতে ফেসবুক কমেন্ট

ছবি: সংগৃহীত।

সম্প্রতি ১১ বছর বয়সী সুবার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তার পরিবার যখন অসহায় অবস্থায় ছিল, তখন সাধারণ মানুষ মানবিকতা দেখিয়ে পোস্ট শেয়ার করে এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করে। পরে জানা যায়, সুবা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছিল, যা নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

সুবা ফিরে আসার পর তাকে নিয়ে নানা নেতিবাচকতার চর্চা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট কিংবা কমেন্টে। তেমনই কিছু কিছু কমেন্ট তুলে ধরা হলো:

১. সুবা’র এই ঘটনায় সবচেয়ে হতাশাজনক দিক হলো, তার বাবা শুরু থেকেই জানতেন যে মেয়েটি পালিয়ে গিয়ে নওগাঁয় ছেলেটির বাড়িতে আছে। ছেলেপক্ষ তাকে বিষয়টি আগেই জানিয়েছিল। তবু তিনি সত্যটা গোপন করেছেন—পুলিশসহ সবার কাছ থেকে। বরং তিনি ছেলেপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন কোনোভাবেই মেয়েটিকে পুলিশের হাতে তুলে না দেওয়া হয়। অন্যদিকে, পুলিশ একাধিক দল গঠন করে দিনরাত চেষ্টায় ব্যস্ত, দেশজুড়ে মানুষ বিভিন্নভাবে মেয়েটিকে খুঁজছে। অথচ তার বাবা ইচ্ছাকৃতভাবে এই পুরো তল্লাশি প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটাকে কী বলা উচিত? এদের জন্যই, মানুষের যখন আসলেই উপকারের প্রয়োজন হবে তখন তারা আসল উপকার পাবে না। Like Cowboys and the villagers story.

২. ১১ বছর বয়সে রস, কস, সিঙ্গারা, বুলবুলি মস্তক খেলতাম। আর ১১ বছরের মেয়ে পুরো বাংলাদেশ রে নিয়ে খেললো।

৩. এই প্রথম মোহাম্মদপুর থেকে কোনো কিছু হারানোর পর সেটা পূনরায় খুঁজে পাওয়া গেছে।

৪. সুবা এখন বাংলাদেশের সেলেব্রেটি হয়ে যাবে। এখন তাকে নিয়ে মিম, টিকটক, ভক্ল হবে। এভাবেই সবাই নষ্টামি করে ভাইরাল হয়ে যায়।

৫. একদিন বার্সা জিতবে, একদিন মাদ্রিদ জিতবে কিন্তু সুবাহাকে  যে পাবে সে সারাজীবন  জিতবে....!!

৬. কি ভয়ংকর একটা প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে!

৭. গত দুই দিন ধরে মেয়েটার হারিয়ে যাওয়ার খবর নিয়ে গোটা দেশ উদ্বিগ্ন ছিল। তার অসহায় বাবা চোখের জল ফেলছিলেন, মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য কত আকুতি করছিলেন! তার মা ক্যান্সারের শেষ স্টেজে, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছেন, আর এদিকে তার মেয়ে অন্য এক ছেলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিল! কল্পনা করো, বাবা-মা কতটা দুশ্চিন্তা আর কষ্টের মধ্যে ছিলেন!

৮. আর আজ? মেয়েটা হাসিমুখে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে—যেন কিছুই হয়নি! কতটা অসংবেদনশীল আর দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে এমনটা সম্ভব?

৯. এইসব বয়ান তৈরি না করে জড়িত ছেলেটি ও সুবাকে জিজ্ঞাসা করা হোক সাথে পরিবারকেও। এটি লীগের টাকা খেয়ে সরকারের ইমেজ নষ্টে পরিকল্পিত আয়োজন ছিলো কী না?

১০. অনেকেই বলছেন, মেয়েটির এই কাণ্ডের কারণে ভবিষ্যতে আর কোনো মেয়ে হারিয়ে গেলে কেউ এমন উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা দেখাবে না। খোঁজাখুঁজিও করবে না। 

সুবা ভুল করেছে, কিন্তু সমাজের উচিত তাকে আরেকটি সুযোগ দেওয়া—যাতে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। তার পরিবারও কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাই তাদের প্রতি দয়া ও সমর্থন দেখানো জরুরি। সমাজ ও আত্মীয়দের কঠোর সমালোচনার শিকার না হয়ে, সুবা যেন ভবিষ্যতে বুঝতে পারে জীবনের সত্যিকারের অর্থ কী।

গতকাল যারা সুবাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, তারা লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই। এটি নিছক কোনো পারিবারিক ঘটনা নয়, বরং মানবিক দায়িত্ববোধের বিষয়। একজন শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া, তার খোঁজে এগিয়ে আসা—এটাই প্রকৃত মানবতা। 

সায়মা ইসলাম

×