ছবিঃ সংগৃহীত
মানুষের মন এক রহস্যময় গোলকধাঁধা। কখনো কখনো আমরা নিজেদের এমন এক অবস্থায় আবিষ্কার করি, যেখানে চারপাশের পৃথিবীর সঙ্গে যেন কোনো সংযোগই নেই। আমরা নিজেদের বুদবুদে আটকে যাই, যেন সবকিছু থেকে আলাদা।
তবে এই বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি আসলে সহজভাবে বোঝা যায় না। কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস আমাদের এই সংযোগহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। চলুন, সেই ৮টি অভ্যাসের কথা জেনে নেওয়া যাক।
১) নিজের জগতে বাস করা
অনেক সময় আমরা নিজেদের ভাবনার জগতে এতটাই মগ্ন হয়ে যাই যে, বাইরের পৃথিবী যেন ঝাপসা হয়ে যায়। শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকলেও মানসিকভাবে আমরা অনেক দূরে। এভাবে নিজের দুনিয়ায় বন্দি হওয়া আরামদায়ক হলেও একসময় এটি আমাদের একাকিত্ব বাড়িয়ে তোলে।
২) সম্পর্ক বজায় রাখতে কষ্ট হওয়া
বিচ্ছিন্ন মানুষেরা সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রায়ই সমস্যার সম্মুখীন হয়। তারা অন্তরঙ্গতা চাইলেও, অভ্যন্তরীণ দ্বিধা ও ভাবনার কারণে সম্পর্কগুলো বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
৩) একাকীত্বে আনন্দ খুঁজে পাওয়া
একাকীত্ব এমন ব্যক্তিদের জন্য আশ্রয়স্থল। একা থাকা তাদের জন্য মুক্তির মতো। এই সময়টায় তারা চারপাশের কোলাহল থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে।
৪) সহানুভূতি প্রকাশে সমস্যা
এমন মানুষরা প্রায়ই অন্যদের আবেগ বুঝতে ও অনুভব করতে কষ্ট পায়। তবে এটি তাদের অসতর্ক বা অমায়িক করে না। বরং তারা নিজেরাই নিজেদের জগতে এতটা ব্যস্ত থাকে যে অন্যদের আবেগ বুঝে উঠতে পারে না।
৫) বিচ্ছিন্নতা বাড়ায় এমন কাজ পছন্দ করা
পড়া, আঁকা, বা আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে থাকা এমন কাজ মানুষকে বাস্তবতা থেকে সাময়িকভাবে দূরে নিয়ে যায়। যারা বিচ্ছিন্ন বোধ করে, তারা এমন কাজের মধ্যেই শান্তি খুঁজে পায়।
৬) সত্যিকারের সম্পর্কের খোঁজ
যদিও তারা সংযোগহীন মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের মধ্যে সত্যিকারের সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা প্রবল। তারা গভীর, অর্থপূর্ণ কথোপকথন এবং আন্তরিক সংযোগ চায়।
৭) আশেপাশের ব্যাপারে অতিরিক্ত সচেতনতা
বিচ্ছিন্ন মানুষরা প্রায়ই আশেপাশের ক্ষুদ্রতম বিষয়গুলো খেয়াল করে। তারা জীবনের প্রতিটি অংশকে একজন দর্শকের মতো দেখেন, কিন্তু তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন না।
৮) গভীর আত্মচিন্তা
নিজেকে বোঝার প্রচেষ্টায় তারা গভীর চিন্তায় মগ্ন থাকে। এই আত্মচিন্তা তাদের জীবনের অর্থ এবং সংযোগহীনতার কারণ অনুসন্ধানে সাহায্য করে।
বিচ্ছিন্নতা মানেই সবসময় খারাপ কিছু নয়। এটি একধরনের আত্ম-আবিষ্কারের যাত্রা। সুইস মনোবিজ্ঞানী কার্ল জুং বলেছিলেন, “যারা বাইরে দেখে, তারা স্বপ্ন দেখে। আর যারা ভেতরে দেখে, তারা জেগে ওঠে।”
রিফাত
