বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই নারীদের বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট বয়সের একটা ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তবে আধুনিক সমাজে নারীদের শিক্ষাগত, পেশাগত এবং ব্যক্তিগত বিকাশের কারণে অনেকেই অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে বিয়ে করছেন। কিন্তু বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে কিছু শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্যগত সমস্যা
নারীর সন্তান ধারণের উপযুক্ত সময় সাধারণত ২০-৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়। বেশি বয়সে বিয়ে হলে সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
১. গর্ভধারণের জটিলতা: বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে মিসক্যারেজ, প্রি-একল্যাম্পসিয়া, এবং ডাউন সিনড্রোমের মতো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
২. স্বাস্থ্যঝুঁকি: বেশি বয়সে প্রথম সন্তান নেওয়া নারীদের উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. বন্ধ্যাত্বের সমস্যা: ৩৫ বছরের পর নারীদের প্রজনন ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়।
মানসিক চাপ ও একাকীত্ব
১. সামাজিক চাপ: বাংলাদেশে বেশি বয়সে বিয়ে করাকে অনেক সময় নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়, যা মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
২. পরিবার গঠনে দেরি: বেশি বয়সে বিয়ে হলে সন্তানের লালন-পালন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় চাপ অনুভব হতে পারে।
৩. সম্পর্কে সমঝোতা: বেশি বয়সে মানসিকভাবে স্থির হওয়ার কারণে দম্পতির মধ্যে সমঝোতা তৈরি করা কঠিন হতে পারে।
সামাজিক চ্যালেঞ্জ
১. পরিবার ও সমাজের প্রতিক্রিয়া: বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে পরিবার এবং সমাজ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হয় অনেক নারীকে।
২. প্রতিযোগিতা: একই বয়সে থাকা অন্যদের তুলনায় দেরিতে বিয়ে করায় অনেক সময় সামাজিক মেলবন্ধন কমে যেতে পারে।
৩. পেশাগত চ্যালেঞ্জ: কর্মজীবনে সফল নারীরা অনেক সময় বিয়ে এবং ক্যারিয়ারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।
সমাধান ও সচেতনতা
বয়স নিয়ে সমাজের প্রচলিত ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। একজন নারী কবে বিয়ে করবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি, বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নারীর বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও সচেতনতা, সঠিক পরিকল্পনা এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো অনেকাংশে এড়িয়ে চলা সম্ভব। বিয়ে একটি ব্যক্তিগত বিষয়, এবং সেটি কখন হবে তা নির্ধারণের অধিকার নারীর নিজস্ব।
রিফাত