
ছবি: সংগৃহীত
‘শাহ আলম নামের একজনকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি বিদেশ যাওয়ার জন্য, কিন্তু আমাকে বিক্রি করে দেন অন্য এক দালালের কাছে’। এভাবেই নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনীর বর্ণনা দেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা লোকমান হোসেন। আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান লোকমান ও তার পরিবার।
গত বুধবার (২ এপ্রিল) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের দালাল দাদন জমাদ্দারের মাধ্যমে লিবিয়াতে জিম্মি থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। লোকমান পিরোজপুরের সাপলেজা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলী জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লোকমান হোসেন বলেন, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য শুরুতে ১০ লাখ টাকা দিয়েছি সিলেটের হবিগঞ্জের শিরু ইসলাম নামের দালালকে। কিন্তু আমাকে ইতালি পাঠাননি। তারা অনেক নির্যাতন করত, বাঁচার জন্য বাড়িতে টাকা চাইতাম। বাড়ির বসতঘরের জমি বিক্রি করে দিয়ে মাদারীপুরের দাদন জমাদ্দারকে দিয়েছি ১২ লাখ।
লিবিয়ার কোন এলাকায় ছিলেন জানতে চাইলে দীর্ঘ ৯ মাস নির্যাতনের শিকার লোকমান আরো বলেন, আমাকে লিবিয়ায় ত্রিপলি জহুরাঘাট ওসামা ক্যাম্পের একটি রুমে বন্দি করে রাখে এবং মুক্তিপণের জন্য প্রতিদিন নির্যাতন করে। শরীরের সব জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে প্রতিবেদককে জানান লোকমান।
লোকমান হোসেনের স্ত্রী রিমি আক্তার (২৮) বলেন, ‘স্বামীকে মুক্ত করার জন্য দালালের বাড়িতে গিয়ে আমরা অনেক দিন থেকেছি। আমার স্বামী নিশ্চিত মুক্তি পেয়েছেন সেটা জেনে সেখান থেকে আমরা এসেছি। আমার স্বামী আজ ১১ মাস পরে দেশে ফিরেছেন। সব হারিয়েও আজ আমাদের মনে একটু শান্তির দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাপলেজা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কাজল খান বলেন, লোকমান লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। শুরু থেকে পরিবারটির পাশে ছিলাম। লোকমানের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার এখন ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, লিবিয়া ফেরত লোকমানের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার সার্বিক বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেদী হাসান