
গাজা শহরের সরু গলি। সেখানে অনুচ্চ ভবনগুলোর ছাদে সূর্যের সোনালি আলো লুটোপুটি খাচ্ছে। দূরে তাকালে সাগর। তাতে নীল পানি এসে যেন পা ধুয়ে দিচ্ছে গাজার। বাইরে সরু গলিতে ছোট ছোট বাচ্চারা খেলা করছে। কোথাও একটু ফাঁকা জায়গায় তারা আনন্দে মেতে আছে। এরই মাঝে একটি ভবনের ছাদে ইউসুফ নামের একটি বালক দাঁড়িয়ে আছে। ঘরেই সে বানিয়ে নিয়েছে একটি ঘুড়ি। তা হাতে ধরা ইউসুফ। তার বয়স নয় বছর। তীক্ষè চোখ তার। মাথায় কোঁকড়ানো চুল। দোকানে পিতাকে কাজে সাহায্য করায় রুক্ষ হয়ে আছে হাত। ইউসুফ পুরনো প্লাস্টিকের ব্যাগ আর খবরের কাগজ দিয়ে বানিয়েছে তার ঘুড়ি। এর রং লাল, সবুজ, কালো আর সাদা। এই রং ফিলিস্তিনের। তাই এই ঘুড়িটি ইউসুফের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
স্কুল শেষে এবং কাজ শেষে প্রতিদিন ভবনের ছাদে ওঠে ইউসুফ। সেখানে দাঁড়িয়ে চারদিক তাকায়। দূরে ধুলোয় ঢাকা জায়গাগুলোতে ফুটবল খেলছে বাচ্চারা। কোথাও উড়ছে ফিলিস্তিনের পতাকা। আরও দূরে নীল সমুদ্র। বিশাল সেই সমুদ্রের বুক। কংক্রিটের ফাটল ধরা ছাদে পা ঠোকাঠুকি করে ইউসুফ। ঘুড়ি বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে দৌড় দেয়।
নিচে উঠোন থেকে তার দাদু মায়াভরা কণ্ঠে বলে ওঠেন- আরও উপরে, হাবিবি। আরও উপরে। ঘুড়িটা আকাশকে ছুঁয়ে যাক!
আকাশকে ইউসুফ খুব ভালোবাসে। তার কাছে একমাত্র মুক্ত, স্বাধীন জায়গা হলো ফিলিস্তিন আর ওই দূরের আকাশ। তাই ঘুড়ি হয়ে আকাশের খুব কাছে চলে যেতে চায় সে।
একটি সংকীর্ণ, ভাঙাচোরা এপার্টমেন্টে পিতামাতা, দুই বোন এবং দাদার সঙ্গে বসবাস করে ইউসুফ। প্রায়ই তার দাদা নানা গল্প করেন সবাইকে নিয়ে। অনেক আগে তাদের বড় বড় বাগান ছিল। জলপাই চাষ করতেন। গ্রামের পর গ্রাম ছিল। সবার মধ্যে ভালোবাসা ছিল। একের কষ্টে অন্যে এগিয়ে আসতেন। এখনো আসেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। যেকোনো মুহূর্তে ঠুনকো অজুহাতে গাজার ওপর বোমা হামলা চালানো হয়। তাতে নিহত হন নিরীহ মানুষ। ঘরবাড়ি, দালানকোঠা সব মাটিতে মিশে গেছে। চারদিকে শুধু হাহাকার। দাদুর এ গল্প শুনে চোখ ভিজে ওঠে সবার। এখন ইচ্ছে হলেই তাদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। পানি থাকে না। ওষুধ থাকে না। খাবার থাকে না। মানুষের অতি দরকারি জিনিসের সরবরাহ নেই। চোখের সামনে কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। এই যে হতাশা, এর পরেও ইউসুফ স্বপ্ন দেখে। তার স্বপ্নকে তো কেউ কেড়ে নিতে পারে না।
তার স্বপ্ন ছিল ঘুড়ি নিয়ে। স্বপ্ন ছিল রকেট নিয়ে। এই রকেট দিয়ে কোনো হামলা নয়, মানুষ হত্যা নয়। সে স্বপ্ন দেখে রকেট নিয়ে চাঁদের দেশে পাড়ি দেবে। দেশ, জাতি ও মানুষের জন্য বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে। ইউসুফ একজন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। এমন জিনিস বানাতে চায়, যা তার ঘুড়ির মতো ওড়ে। এমন জিনিস বানাতে চায়, যা সব কাঁটাতারের বেড়াকে অতিক্রম করবে। সব সীমান্তকে অতিক্রম করবে। উড়বে বিশ্বময়।
কিন্তু গাজায় বসে এই স্বপ্ন দেখা ছিল অনেকটা অলিক কল্পনা।
একদিন সকালে ইউসুফ তার স্কুলব্যাগ গোছাচ্ছে। ঠিক এ সময় মৃদু একটি গর্জনে দেয়াল কেঁপে ওঠে। ইউসুফ নিথর হয়ে পড়ে গেল। তার বোনেরা থরথর করে কাঁপতে লাগলো। বাইরে তখন সাইরেনের শব্দ।
তার মা জোর গলায় চিৎকার করে বললেন- ঘরের ভিতর থাকো।
জানালা থেকে একটু দূরে করিডোরে জড়ো হলো সবাই। ঠিক তখনই আকাশে যুদ্ধবিমানের শব্দ। তারপর আরেকটা শব্দ। আরেকটা শব্দ। সঙ্গে সঙ্গে মাটি কেঁপে উঠলো। ইউসুফদের ছাদ থেকে উড়ে পড়তে লাগলো ধুলো। এভাবে কেটে গেল কিছু সময়। আসলে এই কয়েকটি মিনিটকে তাদের কাছে মনে হচ্ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চারদিকে নিস্তব্ধতা ফিরে এলো।
পরের দিন তারা জানতে পারলো বাজারের সড়কটিতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। আবারও ইউসুফের স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ওই সপ্তাহে আর ঘুড়ি উড়াতে পারলো না ইউসুফ।
ড্রোনে ভরে গেল আকাশ। পোকামাকড়ের মতো ড্রোনের গুঞ্জন শোনা যেতে লাগলো। প্রতিবেশী একটি বাড়ি মোমের মতো ধসে পড়ল। বাতাসে তখন ধোঁয়া। সবার মনে ভয় আর আতঙ্ক। সেই ধ্বংসস্তূপ সরাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করলেন ইউসুফের পিতা। পাশাপাশি মসজিদ থেকে মানুষের মাঝে খাবার পৌঁছে দিতে লাগলেন। সেই কাজে সাহায্যের হাত বাড়াল ইউসুফও। স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে পানির বোতল এগিয়ে দিতে লাগল সে। পুরানো কাপড় থেকে কাঁথা সেলাইতে মাকে সাহায্য করতে লাগলো। কখনো ঘুড়ি হাতে ছাদে উঠে যায়। যেন, সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল বাতাস।
দূরে সমুদ্রের দিকে তাকালো ইউসুফ। ভাবতে লাগলো তার ঘুড়ি কি ওই ভারি মেঘের নিচ দিয়ে উড়ে যেতে পারবে? যদি কেউ এটাকে ভয়ানক কিছু মনে করে? তারা যদি মনে করে এই ঘুড়ির মাধ্যমে সে কোনো বার্তা পাঠাচ্ছে, তখন কী হবে।
তবে তাকে ঘুড়ি ওড়াতেই হবে।
হাতে ঘুড়ি ধরে দৌড় দিল।
প্রথমে ঘুড়িটি কাঁপল। তারপর আস্তে আস্তে আকাশের ওপরে উঠে যেতে লাগল। আরও উপরে, আরও উপরে উঠে যেতে লাগল। সে ঘুড়ির সুতা ধরে টান দিল। তাতে সর্পিলভাবে, এদিক-ওদিক দুলে দুলে ঘুড়িটি উপরে উঠে যেতে লাগল। ইউসুফ কল্পনা করতে লাগল- ঘুড়িটি একটি মহাকাশযান। অজস্র তারার ভেতর দিয়ে তা ছুটে চলেছে। আর তা পরিচালনা করছে সে। এমন সময় কিছু একটা লক্ষ্য করলো সে। দেখলো আরেকটা ছাদ থেকে দ্বিতীয় আরেকটি ঘুড়ি বাতাসে নাচানাচি করছে। এর রং নীল আর সাদা। দেখতে পাখির মতো।
বিস্ময়ে চোখ পিটপিট করলো ইউসুফ। যে ভবন থেকে ঘুড়িটি উড়ছে তা তো কয়েক সপ্তাহ ধরে ফাঁকা।
সেখানে দাঁড়ানো একটি মেয়ে। দেখে মনে হয় তার বয়স ইউসুফের মতোই। তার পরনে ফ্যাকাশে সবুজ রঙের একটি পোশাক। বাতাসে উড়ছে তার স্কার্ফ। মেয়েটি তার ঘুড়ির সুতা ধরে আছে। ইউসুফকে দেখে হেসে দিল।
জবাবে ইউসুফও হাসল। তারপর ঘুড়ির সুতা ধরে টান দিল। মাথা নিচু করে তাকে শুভেচ্ছা জানালো।
একই কাজ করলো মেয়েটিও।
এরপরই তাদের মধ্যে নীরব ভাষা বিনিময় হয়। তারা ঘুড়িতে লুপ সৃষ্টি করে। ডাইভ দেয়। দৌড়ায়। তাদের মধ্যে কোনো কথা হয়নি। শুধু অঙ্গভঙ্গি আর হাসি বাতাসে মিলিয়ে গেল। সেই হাসির রেণু যেন গাজার প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দিল মৃদু বাতাস। এরপর প্রতিদিন বিকেলে যতক্ষণ আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং ড্রোনগুলো দূরে থাকে, ততক্ষণ তারা ঘুড়ি ওড়ায়।
ইটের দেয়ালে নানারকম আঁকিবুকি করে মেয়েটি। চক দিয়ে তার পাশে একটি শব্দ লেখা ছিল। তা দেখে ইউসুফ বুঝতে পারে মেয়েটির নাম আমিরা। দেয়ালে একটি হৃদয় আর একটি ঘুড়ির পাশে আরবিতে নিজের নাম লিখেছিল আমিরা। পরের দিন জবাবে নিজের ঘুড়িতে নিজের নাম লিখে আমিরাকে ইউসুফ জানালো তার নাম ইউসুফ। মাঝে মাঝেই তারা পানির ট্যাংকে নানারকম বার্তা লিখে রাখে। কখনো কাগজের ক্রেন, রকেট এঁকে রাখে। কখনো কাগজে মোড়ানো ক্যান্ডি বারের ছবি।
ইউসুফ জানতে পারে খালা ও এক ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকে আমিরা। দুই বছর আগে রাতের বেলা তাদের বাড়ি ঘেরাও দেয় শত্রুপক্ষ। সে অভিযানে তারা আমিরার পিতামাতাকে হত্যা করে। কখনো স্কুলে যেতে পারেনি আমিরা। তবে সে অনেক বই পড়ে। তার কাছে কয়েক ডজন বই আছে। তা পড়ে পড়ে নিজে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখে আমিরা।
এ কথা জানার পর একদিন আমিরাকে চিঠি লেখে ইউসুফ। তাতে জানতে চায়- তুমি পাইলট হতে চাও? কিন্তু এখানে তো মেয়েরা বিমান চালায় না।
‘আমিই হবো প্রথম’, বলল আমিরা। ‘আমি পাইলট হয়ে তোমাকে আমার বিমানে চড়াবো।’
একদিন সকালে আবার আকাশে গর্জন শুরু হলো। জোর থেকে জোরে হতে লাগলো সে শব্দ। একটানা শব্দ। সেদিন আর কেউ ঘুড়ি উড়াতে যায়নি।
এর পরের সপ্তাহে যুদ্ধ শুরু হয় সীমান্তের কাছে। আবার বোমাবৃষ্টি। আবার ভবনগুলোর জানালা ভেঙে যায়। ধসে পড়ে অনেক ভবন। মারা যায় ইউসুফ-আমিরা বা তার চেয়েও কম বয়সী অনেক শিশু। তিনদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তারা। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে ছাদে ওঠে ইউসুফ। চারদিকের বাতাস কেমন যেন গুমোট মনে হয় তার কাছে। পাশের সেই ভবনে আমিরা নেই। তার নীল ঘুড়িটিও নেই।
আমিরার জন্য প্রতিটি দিন অপেক্ষায় থাকে ইউসুফ। কিন্তু চারদিকে যেসব ছাদ দেখা যায়, সেখানে নেই আমিরা। সব ফাঁকা।
তারপর এক সন্ধ্যায় আকাশ কমলা রং ধারণ করলো। ইউসুফ দেখতে পেল একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে একটি ছোট্ট শিশু। শিশুটি পিছনের দিকে তাকিয়ে তার ছোট্ট হাতে কিছু একটা ধরে আছে।
তার দিকে চোখ টিপে তাকালো ইউসুফ।
দেখলো সেটা ছিল কাগজে তৈরি একটি ক্রেন।
সে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল। তার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। দরজাটি অর্ধেকটা ভাঙা। সে নেমে যাওয়ার সময় সিঁড়িতে মচমচ শব্দ হলো। ছাদের ওপরে ছোট্ট শিশুটি এককোণে কিছু একটা ইশরা করেছে। ভাঙা পানির ট্যাংকের পাশে কাপড়ে বাঁধা ছোট্ট একটি নোটবুক আর একটি ঘুড়ি। এসব আমিরার। নোটবুকটিতে বিভিন্ন জিনিস আঁকা- বিমান, পাখি, তারকা আর একটি গল্প। নির্ভেজাল ও পরিষ্কার আরবিতে লেখা- আমার নাম আমিরা। আমি উড়তে চাই।
পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা এতে তার স্বপ্ন, ভয় আর স্মৃতিকথা লেখা। ইউসুফকে নিয়েও লিখেছে- ইউসুফ এত ভালো ঘুড়ি উড়ায়। অন্য কেউ তার মতো ঘুড়ি ওড়াতে পারে না। এমনিতে আকাশ থাকে নিঃসঙ্গ, একা। কিন্তু ইউসুফ যখন ঘুড়ি ওড়ায় আকাশ তখন আর একা থাকে না। আকাশের সঙ্গী হয়ে ওঠে তার ঘুড়ি।
শেষ পৃষ্ঠায় আমিরা লিখেছে- যদি আমি চলে যাই, কথা দাও তুমি আমাদের দুটো ঘুড়িই উড়াবে। কথা দাও তুমি মনে রাখবে আকাশটাও আমাদের।
অনেক বছর পর প্রথমবারের মতো সেই রাতে ভীষণ কাঁদল ইউসুফ। পরের দিন সকালে আমিরার এবং নিজের দুটি ঘুড়ি একটি সুতা দিয়ে বেঁধে দিল। যেন তাদের দু’জনের আশা এক হয়ে মিলে গেছে।
সূর্য ধীরে উদিত হলো। শহরে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা স্পষ্ট হতে লাগলো।
ইউসুফ মই বেয়ে উপরে উঠল। কোমল বাতাস এসে তার গা জুড়িয়ে দিচ্ছে। যেন পুরানো বন্ধুকে আতিথেয়তা জানানো হচ্ছে।
দুটি ঘুড়ির সুতা এক হাতে ধরে দৌড় দিল ইউসুফ।
একসঙ্গে ঘুড়ি দুটি আকাশ ভেদ করে উপরে উঠে যেতে লাগলো। একটির রং লাল, সবুজ, কালো ও সাদা। অন্যটি দেখতে পাখির মতো নীল আর সাদা।
প্রতিবেশীরা জানালা দিয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলেন। হাততালি দিল কতগুলো বাচ্চা। ইউসুফের দাদা হাত তুলে স্যালুট দেয়ার মতো ভঙ্গি করলেন। কয়েক মিনিটের জন্য আকাশটা যেন তাদের কাছে আশার এক ক্যানভাসে পরিণত হলো।
কয়েক বছর কেটে গেল। ইউসুফ ঘুড়ি ওড়ানো কখনো বন্ধ করেনি। সে মোমবাতির আলোয় পড়াশোনা করে। ফেলে দেয়া ভাঙা জিনিসপত্র থেকে নানারকম জিনিস তৈরি করে। এক পর্যায়ে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পায় সে। ইস্তান্বুলে চলে যায় ইউসুফ। সেখানে সে মহাকাশ বিষয়ক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করে। সেখানে স্নাতক ক্যাপের ওপর দুটি ছোট্ট ঘুড়ি এঁকে নিয়েছে সে। অনেক বছর পর সীমান্ত খুলে দেয়া হলো। ইউসুফ ফিরে এলেন নিজের দেশে। দেখতে পেলেন গাজা বিধ্বস্ত। এমন দৃশ্য নিকট অতীতে কোথাও দেখা যায়নি। যুদ্ধ হয়েছে, তাই বলে এভাবে নির্বিচারে একটি দেশকে, একটি দেশের জনগণকে হত্যা করার এমন নজির তার আর জানা নেই। গাজা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলেও এখনো নিঃশ্বাস নিচ্ছে গাজা।
যে পুরনো ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে সে ঘুড়ি উড়াতো, আমিরাকে দেখেছিল, তা এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
ইউসুফ এখন পরিপূর্ণ যুবক। ধীরে ধীরে সে ছাদে গেল। ব্যাগের ভিতর থেকে বের করল একটি নতুন ঘুড়ি। তা কমল, মসৃণ, শক্তিশালী, হাতে তৈরি। তাতে হাতে লেখা দুটি বাক্য- আমিরার জন্য। আমাদের সবার জন্য।
ঘুড়ি বাতাসে ভাসিয়ে দিয়ে সে দৌড় দিল।
ঘুড়িটি আকাশে উড়ল।
অনেক উঁচুতে উঠে গেল।
ইউসুফ ঝাঁপসা চোখে তাকিয়ে রইল। মনে হলো আমিরার স্বপ্ন বাতাসে উড়ছে। আর জানান দিচ্ছে পৃথিবী থেকে নতুন কিছু আবার আকাশে জেগে উঠেছে। আশা উড়ছে। বোমা আর বুলেটে ভয় দেখানো যায়, জেতা যায় না সেই আশার বিরুদ্ধে।
প্যানেল