ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

আমার এ ঘর বহু যতন করে...

শিউলী আহমেদ

প্রকাশিত: ১৮:১২, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আমার এ ঘর বহু যতন করে...

ড্রইংরুম : ড্রইংরুমে রাখতে পারেন বাঁশ বা বেতের তৈরি সোফা, বুকশেলফ। মেঝেতে রাখতে পারেন শতরঞ্জি। দেওয়ালে কাঁথার ফোঁড়ের ওয়ালম্যাট, হাতে আঁকা গ্রাম-বাংলার দৃশ্যও থাকতে পারে।
ছোট ঘরের ড্রইংরুম : অনেক সময় ছোট বাসা হলে সোফা ও অন্যান্য আসবাব দিয়ে সাজানো কঠিন হয়ে পড়ে। অথবা যাদের নতুন সংসার, এখনই আসবাব কিনতে চাইছেন না- তারা ঘরের একটা কোনে দুই সিটের একটা সোফা অথবা অথবা দুটো চেয়ার দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন। সামনে ছোট একটি টেবিলে ইনডোর প্ল্যান্ট বা ছোট ছোট শোপিস দেওয়া যেতে পারে।
সিঁড়ির খোলা জায়গা : গৃহে প্রবেশ পথটিতে কিছু গাছ ও শোপিস দিয়ে সাজিয়ে রাখুন। দেখেই মন জুড়িয়ে যাবে। সিঁড়ির নিচে শুধু নিজেদের ব্যবহারের জায়গা থাকলে সেখানে দেওয়ালে প্রকৃতি বা গাছের ছবি এঁকে নিতে পারেন। একপাশে বেতের ফ্রেমে বাঁধানো আয়না অথবা অন্য কোনো পছন্দসই দেশীয় মোটিফের শোপিস রাখতে পারেন। ঘরের ভেতরে ডুপ্লেক্সের সিঁড়ি হলে সেখানে বসার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।
গৃহে প্রবেশের খোলা জায়গা : কিছু বাসায় ভেতরে ঢুকেই লনের মতো খোলা একটু জায়গাটা থাকে। ওখানে সাধারণত আমরা জুতার আলমারি রেখে থাকি। আলমারির ওপর বাঁশ-বেতের ফ্রেমে বাঁধাই করা আয়না বসিয়ে দিতে পারেন, পাশে ছোট গাছ রাখতে পারেন। রিক্সা বা দেশীয় নক্সায় আঁকা কোনো শোপিসও রেখে দিতে পারেন। উপরে ঝুলিয়ে দিতে পারেন ল্যাম্পশ্যাড।
ফ্যামিলি লিভিং : আজকাল প্রায় এপার্টমেন্টেই ড্রইংরুমের পাশাপাশি সিটিংরুম থাকে, যেখানে আড্ডায় মেতে উঠে সবাই। সিটিংরুমে আলাদা করে আসবাব না দিয়ে ফোম বা শতরঞ্জি বিছিয়ে, তার ওপর কুশন দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়া যেতে পারে। পাশের দেওয়ালে বিভিন্ন ঝালর, ওয়াল হ্যাঙ্গিং রাখতে পারেন। নানা নকশার টুল দিয়ে তার ওপর শোপিস বা বড় কুশন বসিয়ে দিতে পারেন। বড় পটারি দিয়ে তাতে শুকনো ফুল রেখে দিতে পারেন। সঙ্গে তাজা গাছও রাখতে পারেন।
ড্রেসিং টেবিল : ড্রেসিং টেবিলের পাশে বাঁশ বা বেতের তৈরি রেক বা ফুলের টব রেখে তাতে গাছ ও ফুল রাখতে পারেন। পরিবেশটাই বদলে যাবে। তাছাড়া একরাশ সবুজ চোখে ও মনে প্রশান্তি বয়ে আনবে। আয়নার চারপাশে কৃত্রিম লতা গাছও জড়িয়ে দিতে পারেন।
শোবার ঘর : বসার ঘর আর খাওয়ার ঘর সাজাতে গিয়ে অনেক সময় শোবার ঘরটি আড়ালেই থেকে যায়। গৃহের সব সাজ যে শুধু মেহমানদের জন্যে, তা কিন্তু নয়। খেয়াল করুন সম্পূর্ণ সাজ কিন্তু আপনি আপনার মনের মতোই করেছেন। তাহলে শোবার ঘরটি কেন বাদ যাবে! সারাদিনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে যখনই বিশ্রামের জন্যে শোবার ঘরে ঢুকবেন, ঘরটি যদি মনের মতো সাজানো থাকে, সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। শুধু বৈশাখ নয়, গতানুগতিক সাজের বাইরে শোবার ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারেন বাঙালি ঐতিহ্যে। এমন পাটের তৈরি ঝালর, ওয়ালম্যাট, তালপাতার খোলের তৈরি ওয়াল হ্যাঙ্গিং, কিছু লতা গাছ ইত্যাদি অল্প খরচে ছোট ছোট জিনিস দিয়ে মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন। ঘরের পরিবেশটাই বদলে যাবে। দুই ধরনের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন, ভারি আর পাতলা নেট। গরমে ভারি পর্দা টেনে রাখলে বাইরের গরম তাপ কম আসবে। আবার বিকেলে বা কোমল আবহাওয়ায় পাতলা পর্দাটি টেনে রাখলে মৃদু বাতাসে পর্দাটা যখন উড়বে, মনও কেমন দুলে উঠবে। হালকা বাতাসে ঘরের ভেতর শীতল পরিবেশ বিরাজ করবে।


বারান্দা : আজকাল বাসার বারান্দাগুলো খুব ছোট হয়। তাই খুব শখ করে কিছু গাছ ছাড়া আর কিছু সেখানে করা যায় না। যদি আপনার বারান্দাটা একটু বড় হয়, সেখানে গাছের পাশে ম্যাট বিছিয়ে দিতে পারেন। দেওয়ালে কিছু ঝুলানো শোপিস লাগিয়ে দিতে পারেন। বিকেলে বা সন্ধ্যায় সেখানে চা-নাস্তা নিয়ে অল্পক্ষণ গল্প করা যেতে পারে।
ডাইনিং : বৈশাখে ডাইনিং টেবিল সেজে ওঠে নানারকম মুখরোচক খাবারে। তার মধ্যে থাকে নানা পদের ভর্তা, পান্তা ভাত, ইলিশ, নানা রকম ভাজাপোড়ায়। সঙ্গে থাকে খুদের ভাত, পোলাও, খিচুড়ি। আর এসব খাবারের পরিবেশন যদি হয় মাটির পাত্রে, তাহলে তো কথাই নেই। আগে দর্শনদারি পরে গুণ বিচারী। দেখে মন ভরে যায়।
চায়ের টেবিল : ঘরের কোনো একটা পাশে ছোট টেবিল রেখে তাতে চা-কফির সরঞ্জাম রেখে ‘টি কর্ণার’ বানাতে পারেন। টি সেটটি রাখতে পারেন রিক্সা নকশায় ফুল-লতা-পাতা আঁকা। অবসরে দু’জনে বা কাছের বন্ধু বেড়াতে এলে তার সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন কর্ণারটি।
কর্ণার : প্রায় বাসাতেই ঘরের মাঝে বা কর্ণারে একটু ফাঁকা জায়গা থাকে, যা কোনো কাজে লাগে না। ফাঁকা জায়গাটায় একটা দোলনা বসিয়ে দিতে পারেন। ল্যাম্পশ্যাড বা আয়না রেখে সাজিয়ে নিলে ঘরের চেহারাটাই বদলে যাবে।

×