
হৃদয় পান্ডে
বারুদের ঋতু
কাল থেকে ফুল আর না ফুটুক,
বারুদ ফুটুক, ধোঁয়ার গন্ধে ভরে উঠুক আকাশ।
জুতোর তলায় চাপা পড়বে বিস্ফোরণের ছাই।
কাল থেকে শুধু বারুদের ঋতু, আগুনের বসন্ত।
ধুলোর জলোচ্ছ্বাস
কোনো ডানা নেই,
তবু মানুষ উড়ে যায় বাতাসে
বোমার শব্দে,
নামহীন ছিন্নভিন্ন পরিচয়ে।
মাটির টান হারায়,
নেমে আসে ধুলোর জলোচ্ছ্বাস,
আর আকাশ কেবল দেখে—
যেমন সবসময় দেখে।
অপেক্ষা
মানুষ উড়ে যায় বিস্ফোরণে,
কিন্তু কেউ বলতে পারে না
এই শহরে মানুষ ছিল।
তাদের গল্প সব ছিন্ন হয়ে
এখন উড়ে বেড়ায়
মৃত্যুর এই কৃত্রিম আকাশে।
গাজা কাঁদে না—
কারণ কান্নার শব্দও এখন নিষিদ্ধ।
শুধু পৃথিবীর এক কোণে রক্তমাখা শিশু
নীরব চোখে তাকিয়ে থাকে—
শুধু অপেক্ষা আরও একটি বিস্ফোরণের।
দেয়াল
মানুষ উড়ে যায় বিস্ফরণে—
কাঁপে মাটি, আকাশ, বুকের ভেতর।
একটা মসজিদের দেয়াল
ছাদ হয়ে ধসে পড়ে শিশুর উপর।
শোনো ইহুদিরা
কাজল নিশি
গাজায় খাদ্য খুঁজতে গিয়েছিল ক্ষুধার্ত দুই ফিলিস্তিনি বোন
হঠাৎ ইসরাইলি সেনার গুলি আসে ছুটে
ঝাঁঝরা হয় তাদের বুক!
মিটে যায়, আজন্মকালের ক্ষুধা!
নিশ্চয়ই আর পাঁচটি মেয়ের মতো,
ওদের মনেও ছিলো ঘর বাধার স্বপ্ন...
শুধু নারী পুরুষই নয়,
অবুঝ শিশুদের বুকে গুলি চালাতেও-
এতটুকু হাত কাঁপে না ওই ইসরাইলি সেনাদের।
শোনো ইহুদিরা-
মহান খোদা ছার দেয়, ছেড়ে দেয় না।
খুব শিগগিরই খোদার রোষানলে পড়বে তোমরা।
আর সেদিন গর্তে কিংবা জলে লুকিয়েও বাঁচতে পারবে না।
হায় আফসোস,
তোমরা শুধু মানুষের আকৃতি নিয়েই জন্মেছো-
মানুষ হতে পারোনি...
ধ্বংসস্তূপ
ইমন হোসেন
জেগেছে আবার ঘৃণ্য হায়না,জেগেছে ইহুদি খুনি,
গগনে-পবনে ভুবন কাঁপানো আহাজারি তাই শুনি!
রক্তের ঢলে ভেসে যায় ফের মৃত্যু মুখর গাজা,
মাতে উল্লাসে হিংস্র ঘাতক,পৃষ্ঠপোষক রাজা।
জাতিসংঘের কর্তারা সব কুলুপ এঁটেছে মুখে,
মানবতা আজ বড় লজ্জিত পরাজয়ে মরে ধুঁকে।
ফিলিস্তিনের সহস্র ফুল ঝরে যায় লহমায়,
ধরণীরে দেয় লাখো অভিশাপ সীমাহীন ঘেন্নায়।
ব্যথিত হিয়ায় করে চিৎকার স্বজন হারানো শিশু,
গুনছে প্রহর আসবে কখন শান্তির দূত যিশু!
বিধ্বস্ত এ উপত্যকায় নিভেছে সকল বাতি,
যেন কখনোই আসবেনা ভোর,কাটবেনা এই রাতি।
ভেঙে চুরমার বাড়ি,ঘর আর হাসপাতালের ছাদ,
বিদ্যালয়ের আঙিনায় জ্বলে দাবানল উন্মাদ।
বুলেট-বোমায় হলো ছারখার জীবনের আয়োজন,
নির্বাক চোখে চেয়ে দেখে শুধু চলে যায় প্রিয়জন।
মৃত্যুতে ওরা লিখে যায় জানি মুক্তির পয়গাম,
একটিও প্রাণ বেঁচে থাকে যদি,থামবেনা সংগ্রাম!
ব্যথিত হিয়ায় আগ্নেয়গিরি জ্বলে লেলিহান ক্রোধে,
এই রক্তের শোধ নেবে ওরা রক্তিম প্রতিশোধে।
পার হয়ে ওরা রক্তের নদী পোঁছাবে বিজয় তটে,
মুক্তির ফুল আঁকবেই জানি ধ্বংসস্তূপের পটে!