
পৃথিবীতে অজানা অনেককিছুই আছে। আছে এমনও কিছু প্রাণী যা আমরা খালি চোখে দেখি না বা আমাদের চোখে ধরা দেয় না। এমনও কিছু প্রাণী আছে যেগুলো আমাদের ধারণারও বাইরে। এরকমই এক বিস্ময়কর প্রাণী ‘টার্ডিগ্রেড’। আল্লাহ তায়ালা এই প্রাণীর ভেতর এমন একটা ক্ষমতা বা গুণ দিয়েছেনÑ বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবী যদি অন্যান্য প্রাণীর বসবাসের অনুপযুক্ত হয়েও যায় তবু টিকে থাকতে পারে টার্ডিগ্রেড। অদ্ভুত এই ক্ষুদ্র প্রাণী মাত্র আধ সেন্টিমিটার লম্বা। টার্ডিগ্রেড দেখতে অদ্ভুত চেহারার। এর রয়েছে আটটি পা। তাতে আবার নখঅলা থাবাও আছে। এদের দেখলে মনে হয় এটা এক ধরনের পতঙ্গ বা ইনসেক্ট। কিন্তু আসলে তারা ‘ওয়ার্ম’ বা কেঁচো-শুঁয়োপোকা জাতীয় প্রাণীর কাছাকাছি একটি প্রাণী।
এদের বলা হয় ‘ওয়াটার বিয়ার’ বা ‘পানির ভালুক’। এরা পানিতে ভাসমান থাকে। এই প্রাণীটির কথা সর্বপ্রথম জানা যায় ১৭৭৩ সালে । ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে টার্ডিগ্রেড। এদেরকে পাওয়া যায় পুকুরে শুকিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের মধ্যে। ৩০ বছর খাদ্য বা পানীয় ছাড়াও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে বলেও ধারণা গবেষকদের। এই অতিক্ষুদ্র প্রাণীটি তেজস্ক্রিয়তা, অতিমাত্রায় ঠাণ্ডা, চরম পানিশূন্যতা থেকে শুরু করে মহাশূন্যেও টিকে থাকতে পারে। তাছাড়াও এটি শূন্য ডিগ্রি থেকে হাজার ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে। এমনকি এটি মহাশূন্যেও বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, যদি এই প্রাণী খাদ্য না পায় তবে এর শারীরিক প্রক্রিয়া অনেকটাই স্থির হয়ে যায় যা একে বহু বছর বিনা আহারে বাঁচিয়ে রাখে।
এদের ডিএনএ সম্পর্কে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে পিএলওএস বায়োলজি নামের একটি সাময়িকীতে। এতে উঠে এসেছে, পৃথিবীতে যত রকম মহাজাগতিক দুর্যোগ ঘটতে পারে তার প্রায় সবগুলোই মোকাবিলা করে টিকে থাকার ক্ষমতা আছে এই টার্ডিগ্রেডের।