
সাকুরা সন্ধ্যা
বশির আহমেদ
আমি গ্লাইকোলের মতো মিশে যাই বাতাসের ভেতর,
সুলভ মূল্যে মানুষের দুঃখ কিনি।
মিথাইলের আগুনে পোড়া দেহ!
পাথর ঘেঁষে অনুরাগের ফুল ফোটাই। নিদ্রাবনে স্বপ্নের ভেতর দুঃখ মুছে ফাল্গুনী চাঁদ,
উর্বর চোখে মনের শাইনেস! মধ্যদুপুরে মাঝে মাঝে সাইরেন বাজায় হাফাজার্ড বেদনা,
পুলকিত মুনিয়া প্রেমের মজমা জমে সাকুরা সন্ধ্যায়!
আজ বসন্ত ডেকেছে
সৈয়দ নূরুল আলম
নদীর ওপাড় থেকে বসন্ত ডেকেছে চোখ-ইশারায়, মধ্য রাতের হিম বাতাস কাঁপুনি দিয়ে যায় বুকের বন্ধ দরজায়, কে আসে কে যায় খেয়াঘাটে, রেখে যায় নগ্ন পায়ের ছাপ। পাড়ানি ছাড়া কেউ কি যাবে ওপাড়ে? খেয়ামাঝি পারে না হিসাব মেলাতে। অসমাপ্ত গল্পটার শিরোনাম লেখা হয় না জলপাতায়।
আমার বাংলাদেশ
মোহাম্মদ আবদুল মাননান
কী সব ভয়ংকর শব্দে ঘুম ভেঙে যেতো
আমার। ডানা ঝাপটায় নিশি জাগা পাখি
তীব্র বিভ্রম সময়,
নিয়ত সকাল হতো বোমায় আহত নিহত
বীভৎস সব দৃশ্য দেখে দেখে...
শুশ্রƒষার প্রবঞ্চনা ছিলো
হায় আমার স্বদেশ !
সাপ, সিংহ, বাঘ কিংবা হাতির পৃষ্ঠচাপ
যেনো কোনো ভয়ই নয়
মানুষ মারে মানুষ
হায়! আমার বাংলাদেশ
সকল দেশের সেরা যে দেশ।
ফারেন-হাইট
মোস্তফা মহসীন
বিষাদের সেই সারারাত আমি ঘুমাইনি; আমারই রক্তচাপ বশীভূত করেছে জ্বর ও যাদু। তোমার রাগ ও ক্রোধে তৈরি খাবার গিলতে গিয়ে তিক্ততায় ভারীমন, নির্বোধের মতো মনে হয় নিজের মস্তিস্ক। অন্তহীনভাবে পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি যার কাজে, বলো গোবেচারা সেই মানুষের পক্ষে অযথা জেনে কী লাভ নগরীর স্বরধ্বনি ও প্রাণচাঞ্চল্য?
মানুষটাকেও আর জড়িয়ে ধরো না পেশিশক্তি হ্রাসের ক্রমশ অবসাদগ্রস্ত দুই বাহূর ভেতরে। ঠোঁটের উথলে ওঠা অভিযোগ- স্রোতবাষ্প ভেবে যে এগোয় মৃদু দুলুনির অনুভূতি নিয়ে, অধিক উচ্ছ্বাসে বলোনা আবার তাঁকেÑ গোঁয়ারগোবিন্দ! স্মৃতিকে যতটা সম্ভব তোমার কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টাটা করো তাহলে অন্তত বন্ধুদের উদ্বেগের দঙ্গল হবে না অনুরাগে ক্ষত ও বিক্ষত!
হাহাকার
পার্থ আপন
তোমার চলে যাওয়ার পর
কোন সার্থক উৎসব আসেনি আর
দূরের পাহাড়, পাহাড়ের নীল
কিছুতেই টানেনি আবার।
অরণ্য, বৃক্ষ শাখা প্রশাখায়
লেগে গেছে শীতের শুষ্কতা,
গভীর শূন্যতায় জড়িয়ে গিয়েছে চারিপাশ
আকাশ যেন ধূসর বিছানা।
এক একটি রাত কাঁধে করে নিয়ে আসে
গুচ্ছের তীব্র জঞ্জাল
যেন আদিবাসী কোন সুর বেজে যাচ্ছে
রাজধানীর বুকে বর্গী সেনার রণহুংকার।
তোমার চলে যাওয়ার পর
দু’টুকরো কাগজ রাখি শিয়রে
যেন আমি চলে যাওয়ার আগে
লিখে যেতে পারি, আমাদের গল্পের ঘর।