
ছবি:সংগৃহীত
জন এলিয়া ছিলেন সেই কবি, যিনি একে একে সব কল্পনা বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন।
জন এলিয়া (১৯৩১–২০০২) ছিলেন প্রখ্যাত পাক-ভারতীয় উর্দু কবি ও দার্শনিক। তাঁর কবিতায় ‘প্রেম ও বিরহের অনন্ত দুঃখ’ প্রধানভাবেই প্রতিফলিত হয়। এর পাশাপাশি, তিনি কৃষক-শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। দর্শনের দৃষ্টিকোণ থেকে, জন এলিয়া ছিলেন নৈরাশ্যবাদী, এবং তাঁর কবিতায় সেই ভাবনা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
তার জীবনচরিত অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, যে পরিমাণে নিজেকে তাড়িত করার সাহস একজন মানুষে থাকে, তা সত্যিই বিরল। বিশেষত তার রচিত গজল, শে’র ও নযমগুলিতে যে জীবনের প্রতি অবর্ণনীয় এক হাহাকার ফুটে উঠেছে, তা পাঠককে একদিকে যেমন চমকে দেয়, তেমনি অবাক করে দেয়। প্রতিটি পঙক্তি গভীরভাবে ভাবনার জন্ম দেয়। মাত্র আট বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করা জন এলিয়া, জীবনের এক দীর্ঘ সময় কবিতায় নিমগ্ন থেকেও তার প্রথম কবিতা সমগ্র প্রকাশিত হয়েছিল ষাট বছর বয়সে। কিন্তু সে জীবনে কবিতাই ছিল তার অঙ্গ।
২০০২ সালে সত্তর বছর বয়সে জন এলিয়া মৃত্যুবরণ করেন। তার সমাধিতে খোদিত রয়েছে তারই বিখ্যাত একটি পঙ্ক্তি—‘ম্যা ভি বহুত আজীব হুঁ, ইতনা আজীব হুঁ ক্যা ব্যাস/খুদ কো তাবাহ কার লিয়া অর মালাল ভী নেহি।’ (আমি এমন অদ্ভুত, যে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলেছি, অথচ এতে কোনো দুঃখ নেই)। এই পঙ্ক্তি মূলত জন এলিয়ার এবং ডক্টর খালিদ সুহাইলের কথোপকথনের একটি অংশ, যা পরে খালিদ আহমেদ আনসারি ‘ম্যা ইয়া ম্যা’ শিরোনামে পুস্তক আকারে প্রকাশ করেন।
এতো কাছে এসে যাচ্ছ যে
ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছ নাকি
বহোত নযদিক আতি জা রহি হো
বিছাড়নে কা ইরাদা কর লিয়া কেয়া
ভাবি যদি তো ভালবাসায় জীবন কেটে গেলো
দেখি যদি তো একজনও আমার হলো না
সোচুঁ তো সারি উমর মুহাব্বত মেঁ কাট গ্যায়ি
দেখুঁ তো ইক শখস ভি মেরা নেহিঁ হুয়
আমি প্রেমকে কঠিন ভেবেছিলাম
এও দেখি সহজ, এখন কী করি!
হাম সামঝে থে ইশক কো দুশওয়ার
য়ে ভি আসান হ্যায় কেয়া কি জায়ে
কী বললে? প্রেমে পড়ে গেছ?
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
কেয়া কাহা? ইশক কর ব্যায়ঠে?
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
*
আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছ?
বোসো, ডেকে আনছি
মুঝ সে মিলনে কো আপ আয়ে হো
ব্যায়ঠিয়ে বুলা কে লাতা হুঁ
আঁখি