
ছবি: সংগৃহীত
অমর একুশে বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রি করায় একটি স্টল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
তবে মেলা পরিচালনা কমিটি বলছে, স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়াপার বিষয় নয়। অনুমোদন না থাকায় স্টলটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
স্টলটি মেলার নীতিমালা লঙ্ঘন করে পণ্য বিক্রি করছিল, বলেছেন কমিটির সংশ্লিষ্টরা।
বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে রোববার বিকেলে স্টলটি বন্ধ দেখা গেছে।
ফেইসবুকে কেউ কেউ পোস্ট লিখেছেন, ‘ইসলামিস্ট গ্রুপের মব’ এর ভয়ে স্টলটি বন্ধ করেছে মেলা কমিটি।
স্টল বন্ধ সংক্রান্ত একটি চিঠিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যেখানে লেখা হয়েছে, ‘বেশ কিছু ইসলামিস্ট গ্রুপ’ স্টলটিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রিতে আপত্তি জানায়।
তবে বইমেলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই চিঠি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে।
‘মব’ এর শঙ্কা থেকে এবং স্পন্সর কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে স্টল দুটি অন্য পণ্য (যেমন শিশু শিক্ষা সরঞ্জাম) দিয়ে প্রতিস্থাপনের অনুমতির কথাও বলা হয়।
ওই চিঠিতে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেডমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম মন্তব্য করেছেন, “এ পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। অতি দ্রুত এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব সরকার আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, “নীতিমালা অনুযায়ী, বইমেলায় বই এবং খাবার ছাড়া অন্য কোনো পণ্য বিক্রি করার সুযোগ নেই।”
আর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলছেন, “এই স্টলটি মেলায় নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদন নেয়নি। এজন্য বন্ধ করা হয়েছে। এর সঙ্গে স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়াপারের কোনো বিষয় নেই।”
তবে মেলায় স্টলটি এলো কীভাবে- প্রশ্নে মোহাম্মদ আজম বলেন, “বইমেলায় কিছু কাজের জন্য আমরা ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিই। তারা টয়লেটসহ মেলার অবকাঠামোর জন্য কিছু কাজ করে থাকে। এর জন্য মেলা কমিটিকে জানিয়ে তারা ছোট ছোট স্পন্সর সংগ্রহ করার সুযোগ পায়।
“যেমন টয়লেট ক্লিনিংয়ের কাজ করছে ‘ডেটল’। তারা মেলা কমিটিকে জানিয়ে টয়লেটে সেবা দিচ্ছে। কিন্তু এই স্টলটি ইভেন্ট প্রতিষ্ঠানের লোকজন মেলা কমিটিকে না জানিয়েই দিয়েছে।”
স্টলটি অনুমোদন ছাড়াই দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন বইমেলার ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান ড্রিমার ডংকি প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী রাকিব হাসান।
তিনি বলেন, “আমরা মেলার কাজের সহায়তা হয় এমন কিছু কোম্পানি থেকেই স্পন্সর সংগ্রহ করি। মেলা কমিটি আমাদেরকে জায়গা দেখিয়ে দেয়। টয়লেট ক্লিনিং ‘ডেটল’ এর মতোই স্যানিটারি ন্যাপকিন আর ডায়াপারের জন্য এই স্টলটি দিয়েছিলাম টয়লেটের পাশেই।”
স্টলটিতে নীতিমালা ভঙ্গ করে স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে রাকিব বলেন, “তারা ফ্রি দিচ্ছিল, তবে কেউ কিনতে চাইলে বিক্রিও করছিল।”
শিহাব