রুশ কবি ও ঔপন্যাসিক অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিৎসিনের জন্ম ১১ ডিসেম্বর ১৯১৮ সালে। সোলঝেনিৎসিনের জন্মের ছয় মাস আগে রুশযুদ্ধে তাঁর বাবা মারা যান। মায়ের কাছে তিনি মানুষ হন। সোলঝেনিৎসিন পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন সাহিত্য নিয়ে। কিন্তু তার শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সুযোগ ছিল না, তাই পড়াশোনা করলেন অঙ্কশাস্ত্রে।
কোনো সাংঘাতিক বিষয়ও যে খুব সহজ করেই লেখা যায়, তার প্রমাণ রুশকবি ও ঔপন্যাসিক অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিৎসিনের গদ্য কবিতাগুলো। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় তার লেখার মূল প্রতিপাদ্য। তাঁর উপন্যাস ওয়ান ডে ইন দ্য লাইফ অব ইভান ডেনিসোভিচ (১৯৬২) তাঁকে বিখ্যাত করে তোলে।
সোলঝেনিৎসিন ১৯৭০ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি কমিউনিজমের শাসননীতি পছন্দ করতেন না। ফলে, তাঁর দেশে তাঁর লেখা বহুদিন নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭৪ সালে তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয় ও নির্বাসিত করা হয়। নির্বাসিত হয়ে তিনি আমেরিকাতে চলে যান। ১৯৯০ সালে তাঁর নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিলে তিনি জন্মভূমিতে ফিরে আসেন। ২০০৮-এর ৩ আগস্ট অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিৎসিনের মৃত্যু হয়।
মাইকেল গ্লেনি অ্যালেক্সান্ডার সোলঝেনিৎসিনের কিছু কবিতা রুশ ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন।
কুকুরছানা
আমাদের বাড়ির পেছনের উঠানে একটা ছেলে
তার পোষা কুকুরছানা বেঁধে রাখে, যার নাম ছিল শারিক।
তুলোর মতো তুলতুলে একটা বল কুকুরটার সঙ্গী, সেই ছোট্টবেলা থেকে।
একদিন আমি তাকে মুরগির কিছু হাড়গোড় খেতে দিতে এলাম
যা ছিল উষ্ণ, সুস্বাদু এবং গন্ধ মাখা।
ছেলেটা অসহায় কুকুরটার গলার শিকল খুলে শুধু উঠোন জুড়ে ছুটতে দিল
উঠোনে তুষার ছিল, পাখির পালকের মতো গভীর তুষার।
শারিক খরগোশের মতো লাফালো প্রথমে তার পিছনের পায়ে,
তারপর তার সামনের পায়ে, উঠোনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে,
সামনে পিছনে, বরফের ভেতর মুখ গুঁজে রাখে।
সে আমার হাতের কাছে ছুটে এলো, তার গায়ের লোম সব এলোমেলো,
আমার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল, হাড়গোড় শুঁকে আবার চলে গেল,
তার পেটের ভেতর খিদে।
তবু সে বললো, তোমার দেয়া হাড়গোড় প্রয়োজন নেই আমার।
আমাকে শুধু আমার স্বাধীনতা দাও...
আইসক্রিমের দোকান
মন্টি আর মার্শাদের আইসক্রিমের দোকান।
দোকানে ওরা নানান রঙের আইসক্রিম সাজিয়ে রাখতো ফ্রিজে।
লাল, সবুজ, হলুদ বরফখণ্ডগুলোতে জিহ্বা ছোঁয়াতেই
হৃদয় শীতল হতো।
আমাদের হৃদয় এখন আর শীতল হয় না,
মন্টিদের সে দোকান এখন নেই।
আমাদের শৈশবও হারিয়ে গেছে। যদিও লাল, সবুজ, হলুদ
আইসক্রিম দেখে মনে পড়ে ছোটবেলা।