দুই বাংলার বিশিষ্ট কবি আশিস সান্যাল আর নেই। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টায় কলকাতায় নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশাস ত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
কবি আশিস সান্যালের বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি তার স্ত্রী, একমাত্র কন্যা কলকাতা ডিডি-৭ এর ইংরেজি খবরপাঠক শ্রীমতী দূর্বা ভট্টাচার্য ও নাতনি মৃত্তিকা ভট্টাচার্যসহ বাংলাদেশ ও ভারতে অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী রেখে গেছেন।
কবি আশিস সান্যালের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমরা এই মহৎ কবির প্রয়াণে তার আত্মার শান্তি কামনা করি ও তার পূণ্য স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তিনি তার অসাধারণ সুন্দর কবিতা, শিশুসাহিত্য, মননশীল সাহিত্য এবং কলকাতায় দীর্ঘদিন বিশ্ব কবিতা উৎসব আয়োজনের জন্যে বাংলা ভাষাসাহিত্য ও পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে থাকা কবিতা অনুরাগীদের ভালোবাসায় স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বাংলা ভাষাসাহিত্যে তার অবদান বাংলা ভাষাভাষী মানুষ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
কবি আশিস সান্যাল ১৯৩৮ সালের ৭ জানুয়ারি অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিংহ জেলার দুর্গাপুরের সুসং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নাম দ্বিজেন্দ্রনাথ সান্যাল এবং মাতার নাম তরুলতা দেবী। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর হয়ে তিনি অধ্যাপনাকে নিজের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। তার বিশাল রচনাসম্ভারের মধ্যে রয়েছে কবিতা, উপন্যাস ও গল্প, ভ্রমণ কাহিনি। পাশাপাশি তিনি অনেক বইয়ের সম্পাদনা ও অনুবাদও করেছেন। কবির কবিতা ও উপন্যাস হিন্দী ও গুজরাটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
কবি আশিস সান্যাল বহু সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে প্রথম সর্বভারতীয় বেসরকারী কবি সম্মেলন-এর তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন ১৯৭১ সালে, প্রথম পূর্বাঞ্চলীয় সাহিত্য সম্মেলন-এর সম্পাদক, ১৯৭১ সালে দিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে আফ্রো-এশিয় লেখক সম্মেলনে অন্যতম সংগঠক, ১৯৮০ সালে প্রথম সার্ক লেখক সম্মেলন-এর সম্পাদক, কলকাতার আফ্রো-এশিয় সম্মেলন-এর সম্পাদক, হলদিয়ায় প্রথম বিশ্ব বাংলা কবিতা উত্সব-এর সভাপতি, ২০০৪ সালে প্রেমেন্দ্র মিত্র জন্ম শতবর্ষে আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনের অন্যতম সম্পাদক, ইন্টারন্যাশনাল বেঙ্গলি পোয়েট্রি ফেস্টিভ্যাল-এর সভাপতি (২০০৬)। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড পোয়েট্রি ফেস্টিভ্যাল-এর সভাপতি ছিলেন। তিনি নবকল্লোল, দ্বীপবাণীসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন।
রাজু