ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

সাহিত্যে নোবেল

বিজয়ী যত নারী

বাসার তাসাউফ

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বিজয়ী যত নারী

২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নারী লেখক হান কাং

২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নারী লেখক হান কাং। ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াঙ্গজুতে জন্ম হানের। কবিতা দিয়েই সাহিত্যে হাতেখড়ি তার। ১৯৯৩ সালে তার পাঁচটি কবিতা মুনহাক-গুয়া-সাহো লিটারেচার অ্যান্ড সোসাইটিতে ছাপা হয়েছিল। পরের বছর ১৯৯৪ সালে ঔপন্যাসিক হিসাবে হাতেখড়ি হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে তার প্রথম ছোটগল্প সংকলন প্রকাশিত হয়। ‘ইয়োসু’ ছিল তার প্রথম ছোটগল্প সংকলনের নাম।

এর পর ‘ফ্রুটস অফ মাই ওম্যান’ (২০০০), ‘স্যালাম্যান্ডার’ (২০১২) ছোটগল্প সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৭ সালে। এ ছাড়াও ‘ব্লাক ডিয়ার’ (১৯৯৮), ‘ইওর কোল্ড হ্যান্ডস’ (২০০২) ‘ব্রিদ ফাইটিং’ (২০১০)-এর মতো উপন্যাস তিনি লিখেছেন। ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’-এর জন্য ২০১৬ সালে বুকার পুরস্কার পেয়েছেন। ‘আই ডু নট বিড ফেয়ারওয়েল’- উপন্যাসের জন্য ২০২৩ সালে ফ্রান্সে মেডিসিস পুরস্কার লাভ করেন।
মানুষের জীবনের ভঙ্গুরতা, যন্ত্রণার কথা বারবার হানের কলমে উঠে এসেছে আর গদ্য হয়ে উঠেছে কবিতা। 
হান কাং সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন এশিয়ার প্রথম নারী হিসেবে। 
১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার চালুর পর মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পাওয়া নারী লেখকদের মধ্যে তিনি অষ্টাদশ। 
সেলমা লাগেরলফ 
নারী লেখকদের মধ্যে সর্বপ্রথম নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন সেলমা লাগেরলফ। সেলমার জন্ম ১৮৫৮ সালের ২০ নভেম্বর। সুইডেন ও নরওয়ে রাজ্যের মারবাকা অঞ্চলের ভার্মল্যান্ডে। পক্ষাঘাতে পঙ্গু সেলমা স্কুলে যেতে পারেননি। তবে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেছেন। ছোটবেলায় বাবা, মা, দাদি ও প্রিয় নার্স কায়সোর কাছ থেকে গল্প শুনতে খুব পছন্দ করতেন। তার প্রথম বই ‘দ্য স্টোরি অব গোস্টা বার্লিং’ প্রকাশিত হয় ১৮৯১ সালে। পরের বই ‘ইনভিজিবল লিংক’ প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে।

লেখালেখির প্রয়োজনে কয়েকটি দেশও ভ্রমণ করেন তিনি। ইতালি ভ্রমণ শেষে লেখেন ‘দ্য মিরাকলস অব এন্টি ক্রাইস্ট’। প্যালেস্টাইন সফর শেষে লেখেন ‘জেরুজালেম : আই ডালারেন’। তিনি বিখ্যাত হন ‘নিলস হোলগারসন’স ওয়ান্ডারফুল জার্নি থুরু সুইডেন’ বা ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব নিল’ লিখে। বইটি প্রকাশিত হয় ১৯০৬ সালে। বইটি ৩০টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এ বইয়ের জন্য সেলমা লাগেরলফ ১৯০৯ সালে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।
গ্রাৎসিয়া দেলেদ্দা
সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী দ্বিতীয় নারী লেখকের নাম ইতালিয়ান লেখক গ্রাৎসিয়া দেলেদ্দা। তিনি ১৯২৮ সালে নোবেল পান। তার ‘লা-মাদ্রে’ (মা) উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে। এ উপন্যাসের কাহিনী গড়ে উঠেছে এক যাজক ও তার মাকে নিয়ে। অপরিসীম কষ্ট স্বীকার করে মা তার ছেলে পলকে বড় করেছেন। বড় হয়ে পল যাজকত্ব গ্রহণ করেন। এ অতি কঠিন দায়িত্ব। মায়ের মনে সদাই ভয়, পল তার কর্তব্যের সীমা পেরিয়ে পাপের পথে যেন পা না বাড়ায়। কিন্তু সুন্দরী এজনিসের সঙ্গে দেখা হয় পলের। একদিকে কর্তব্য ও অন্যদিকে প্রেমের আকুতির মধ্য দিয়ে কাহিনী বেড়ে ওঠে। এবং শেষ হয় একটি করুণ মৃত্যুতে। সে মৃত্যু পলের মায়ের।
 ১৯২৬ সালে মূলত এ উপন্যাসের উৎকর্ষের বিচারে তিনি নোবেল পুরস্কার পান।                 
সিগ্রিড উন্দসেট
নরওয়ের উপন্যাসিক সিগ্রিড উন্দসেট ১৯২৮ সালে নোবেল পুরস্কার পান। মধ্যযুগে নরওয়ের মানুষের জীবনের শক্তিশালী বর্ণনা সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য তাকে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল নোবেল কমিটি। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো, ক্রিস্টিন ল্যার্ভযান্সডেটার, দ্য ব্রাইডাল রেথ, জেনি, দ্য ক্রস।     
পার্ল এস বাক
পার্ল সিডেনস্ট্রিকার বাক বা পার্ল এস বাক। মানবতাবাদী  এক ঔপন্যাসিক। ১৮৯২ সালে ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ার হিলসবরোতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের কাছে ইংরেজি ও কিং নামের এক চীনা ব্যক্তির কাছে চীনা ভাষা শিখেন পার্ল। ১৯১৪ সালে তিনি জন লসিং বাক নামের একজন মিশনারিকে বিয়ে করেন। নিজেও মিশনারি হয়ে বসবাস শুরু করেন চীনের সজোতে। পরে তিনি মিশনারির কাজ ছেড়ে দেন। সেখানকার পটভূমিতে লেখেন ‘দ্য গুড আর্থ’। 
তার রচিত উপন্যাস দ্য গুড আর্থ ১৯৩১ ও ১৯৩২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক বিক্রীত কল্পকাহিনী বই ছিল এবং তিনি ১৯৩২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন।
‘চীনের কৃষক শ্রেণির জীবনের পরিপূর্ণ ও মহাকাব্যিক বর্ণনা এবং তার আত্মজৈবনিক শ্রেষ্ঠকর্মের জন্য’ ১৯৩৮ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। 
গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল
গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল একজন চিলির কবি এবং প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান- যিনি ১৯৪৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন। তার আসল নাম লুসিলা গোদোয় আলকায়াগা। ছদ্মনাম গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল। চিলির এই কবি, কূটনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও নারীবাদী ১৯৪৫ সালে নোবেল পান। দক্ষিণ আমেরিকার কবিতায় আধুনিকতার সূচনা যাদের হাতে, তাদের অন্যতম তিনি। তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে, ডেসোলেশন, রোনদাস ডি গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল, দিস 
নেলি শ্যাকস
জার্মান সুইডিশ কবি ও নাট্যকার নেলি শ্যাকস ১৯৬৬ সালে শমুয়েল ইউসেফ আগননের সঙ্গে যৌথভাবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হন।  
নাদিন গর্ডিমার
১৯২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার গাউটেংয়ে জন্ম নাদিন গর্ডিমারের। ছোটগল্প এবং উপন্যাস লিখেছেন সমান তালে। তিনি ১৯৭৪ সালে পান বুকার আর ১৯৯১-এ নোবেল। বর্ণবৈষম্যের জমানায় নিষিদ্ধ হয় তার তিনটি বই। ‘এ ওয়ার্ল্ড অব স্ট্রেঞ্জার্স,’ জোহানেসবার্গে ১৯৫০-এর দশকে এক অরাজনৈতিক ব্রিটিশ নাগরিকের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের বন্ধুত্বের গল্প নিষিদ্ধ হয়। ১৯৬৬-র ‘দ্য লেট বুর্জোয়া ওয়ার্ল্ড’ এবং ১৯৭৯-র ‘বার্গার্স ডটার’ বইটিও নিষিদ্ধ করা হয়। শেষ বইটিতে রয়েছে নিজের পরিচয় খুঁজে পেতে মরিয়া এক মহিলার গল্প। 
টনি মরিসন
ঔপন্যাসিক টনি মরিসন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর লরেনে একটি শ্রমজীবী পরিবারে ১৯৩১ সালে জন্ম জন্মগ্রহণ করেন। মরিসন ওয়াশিংটন ডি.সিতে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং পড়িয়েছেন। ১৯৬৪ সালে একটি প্রকাশনা সংস্থার সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭০ সালে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে তিনি প্রিন্সটনসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন। আফ্রিকান-আমেরিকান ঐতিহ্য থেকে নেওয়া তার বাবার গল্প, পরে তার নিজের লেখার একটি উপাদান হয়ে ওঠে। টনি মরিসন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ১৯৯৩ সালে। এছাড়া পেয়েছেন প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং পুলিৎজার পুরস্কার।
মরিসনের উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’, ‘সং অব সলোমন’ এবং ‘বিলাভড’। 
ভিসওয়াভা সিম্বোরস্কা 
একজন পোলিশ কবি, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদক। তাঁর কবিতাগুলো অন্যান্য ইউরোপিয়ান ভাষা ছাড়াও এর আগে অনুদিত হয়েছে চাইনিজ, জাপানিজ, হিব্রু আর আরবী ভাষায়। ১৯৯৬ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
এলফ্রিডে ইয়েলিনেক
ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার এলফ্রিডে ইয়েলিনেকের জন্ম ১৯৪৬ সালে অস্ট্রিয়ায়। উপন্যাস ও নাটক ছাড়া সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবাধ বিচরণ করেন ইয়েলিনেক। কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ, চিত্রনাট্য, গীতিনাট্য লিখেছেন। কবিতার মাধ্যমে নিজের ভেতরের বিচ্ছিন্ন বাস্তবতা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। সমালোচকরা মনে করেন, অস্ট্রিয়ার স্খলনের অস্থির চিত্রায়ণ দেখতে পাওয়া যায় তাঁর সাহিত্যে। তিনি চারবার পেয়েছেন মুলহেইমার ড্রামাটিস পুরস্কার, ফ্রান্জ কাফকা পুরস্কার, স্টিগডাগারমান পুরস্কার। তিনি ২০০৪ সালে নোবেল পান। তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস ‘ডি ক্লাভিরস্পিলারিন’ পৃথিবীজুড়ে ‘দ্য পিয়ানো টিচার’ নামে সুপরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য অন্যান্য বই হলো, উইমেন এজ লাভার্স, গ্রিড, লাস্ট, ‘ওয়ান্ডারফুল, ওয়ান্ডারফুল টাইমস’।    
ডরিস লেসিং 
১৯১৯ সালের ২২ অক্টোবর, কেরমানশাহ, পারস্য বা বর্তমানে ইরানে জন্মগ্রহণ করেন। তার উপন্যাস এবং ছোট গল্পে মূলত সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্থানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিত্র বর্ণিত হয়েছে। তিনি ২০০৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৪ সালে তার আত্মজীবনীর প্রথম খ- ‘আন্ডার মাই স্কিন’ প্রকাশ করেন ; দ্বিতীয় খ- ‘ওয়াকিং ইন দ্য শেড’ ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। তার প্রথম প্রকাশিত অন্যান্য বই হলো, দ্য গ্রাস ইজ সিংগিং (১৯৫০), সিরিজ চিলড্রেন অব ভায়োলেন্স (১৯৫২-৬৯), দ্য গোল্ডেন নোটবুক (১৯৬২), দ্য মেমোয়ার্স অব আ সারভাইভার (১৯৭৫), দ্য স্টোরি অব আ নন-ম্যারিং ম্যান (১৯৭২) এবং স্টোরিজ (১৯৭৮); দিস ওয়াজ দ্য ওল্ড চিফস কান্ট্রি (১৯৫১) এবং দ্য সান বিটুইন দ্যার ফিট (১৯৭৩) এ তার আফ্রিকান গল্প সংগৃহীত হয়েছে ।
হার্তা মুলার 
হার্তা মুলার ২০০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি ৩২ বছর পর্যন্ত রোমানিয়ায় ছিলেন। প্রথম বই ‘লাল্যান্ডস’ ছাড়াও আরো কিছু লেখা রোমানিয়ায় থাকতেই লিখেছিলেন। এ উপন্যাসের পটভূমি পশ্চিম রোমানিয়ার বানাত এলাকা। এখানে এবং আরো অনেক লেখায় প্রধান বিষয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে স্বৈরাচার। চসেস্কুর দমনমূলক শাসনামলের সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রোমানিয়ার পটভূমিতে মুলারের লেখায় উঠে আসে অত্যাচার, নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা, ত্রাস- এসব। নিজের অভিজ্ঞতায় সে সময়ের অবস্থা ভালো করে দেখা ছিল বলেই তাঁর পক্ষে এগুলো নিয়ে লেখা সহজ হয়েছে।

‘দ্য হাঙ্গার অ্যাঞ্জেলে’ উপন্যাসে রোমানিয়ার জার্মান সংখ্যালঘুদের রোমানিয়ায় সোভিয়েত দখলদারির সময়ের চিত্র দেখানো হয়েছে। ১৯৪৫ সালে এবং তার পরে জার্মান সংখ্যালঘুদের সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘জবরদস্তি শ্রমে’ পাঠানো হয়। হার্তা মুলারের মা ১৭ থেকে ২২ বছর বয়স পর্যন্ত পাঁচ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নে এ রকম জবরদস্তিমূলক শ্রম দিতে বাধ্য হন। তাঁদের গ্রামের এবং রোমানিয়ায় জার্মান সম্প্রদায়ের অনেক পরিবারের সদস্যদের এ রকম অভিজ্ঞতা হয়। ছোটবেলার এ রকম অভিজ্ঞতা তাঁর লেখার ওপর প্রভাব ফেলে।
এলিস মুনরো
এলিস মুনরোর জন্ম ১৯৩১ সালের ১০ জুলাই, কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায়। সেখানকার গ্রাম্য ও শান্ত পরিবেশেই তাঁর বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন খামারের মালিক, মা স্কুলশিক্ষক।  
১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’, ১৯৭৮ সালে ‘হু ডু ইউ থিংক ইউ আর’ এবং ১৯৮৬ সালে ‘দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ’ বইয়ের জন্য তিনি তিনবার গভর্নর জেনালের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও তিনি ২০০৯ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন। ‘দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন’ বইয়ের জন্য তিনি ওই পুরস্কার পান।

মুনরোর প্রকাশিত অন্যান্য ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে ‘লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান’ ১৯৭১, ‘সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ’ ১৯৭৪, ‘দ্য মুনস অব জুপিটার’ ১৯৮২, ‘ফ্রেন্ড অব মাই ইয়ুথ’ ১৯৯০, ‘ওপেন সিক্রেটস’ ১৯৯৪, ‘দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান’ ১৯৯৮, ‘হেটশিপ ফ্রেন্সশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারিজ’ ২০০১, ‘রানঅ্যাওয়ে’ ২০০৪, ‘টু মাচ হ্যাপিনেস’ ২০০৯ এবং ‘ডিয়ার লাইফ’ ২০১২। ২০১৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ
বেলারুশের অনুসন্ধানী সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ ২০১৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তার লেখাকে দুর্ভোগের স্মারক এবং সময়ের সাহসী লেখনী বলে উল্লেখ করেছে নোবেল কমিটি। তিনিই বেলারুশের প্রথম লেখক যিনি সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন। ‘ভয়েস ফ্রম চেরনোবিল তার সাড়া জাগানো’ একটি বই। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া কয়েকশ’ নারীর সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন, ‘দ্য আনউইমেনলি ফেস অব ওয়ার: অ্যান ওরাল হিস্ট্রি অব উইমেন ইন ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু’।     
ওলগা নাওয়াজা তোকারচুক
পোলিশ লেখক ওলগা নাওয়াজা তোকারচুক, যিনি তাঁর বিখ্যাত নভেল ‘ফ্লাইটস’ এর জন্য ২০১৮ সালে নোবেল পুরস্কার পান। ওলগা নাওয়াজা তোকারচুকের জন্ম হয় ১৯৬২ সালের ২৯ জানুয়ারি, পোল্যান্ডের সুলেখোফ শহরে। তার উপন্যাস ‘বাইগুনি’ ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়ে ‘ফ্লাইটস’ নামকরণ হয়, যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। ‘ফ্লাইটস’ উপন্যাসের জন্য তোকারচুককে ‘ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ’ও দেয়া হয়। উপন্যাসটি যদিও ফিকশনের ওপর রচিত, কিন্তু তারপরেও এখানে থিওরি, সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ব এবং স্মৃতিচারণের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জার্নি অব দ্য বুক-পিপল’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে।
লুইস গ্লিক
কবি লুইস গ্লিকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ এপ্রিল নিউ ইয়র্ক সিটিতে। বড় হয়েছেন লং আইল্যান্ডে। ছোটবেলা থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন গ্লিক। লুইস গ্লিকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘র্ফাস্টবর্ন’ প্রকশিত হয় ১৯৬৮ সালে। এ পর্যন্ত ১২টি কাব্যগ্রন্থ এবং বেশ কিছু প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে কাব্য সংকলন দ্য ট্রায়াম্ফ অব একিলিস এবং ১৯৯০ সালে আরারাত প্রকাশিত হওয়ার পর দেশ-বিদেশে গ্লিকের পাঠক বাড়তে থাকে। দ্য ভয়েস অব ডিডো, পার্সিফোনি, ইউরিডাইস, কিংবা দ্য অ্যাবানডানড, দ্য পানিশড, দ্য বিট্রেইড উল্লেখযোগ্য বই।
১৯৯৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কার, ২০১৪ সালে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড এবং ২০২০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।  
আনি এরনো
২০২২ সালে সাহিত্যে নোবেল পাওয়া প্রথম ফরাসি নারী আনি এরনো। জন্ম ১৯৪০ সালে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলের নরমান্ডিতে। 
আনি এরনোর লেখালেখির মূল প্রতিপাদ্য ছিল- শরীর ও যৌনতা; অন্তরঙ্গ সম্পর্ক; সামাজিক অসমতা ও শিক্ষার মাধ্যমে শ্রেণি পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা, সময়, স্মৃতি এবং জীবনাভিজ্ঞতা।
১৯৭৪ সালে যখন তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়, সে সময় একটি ফরাসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াতেন এরনো। ২০০০ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়ে পুরোদমে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন।
তার ‘দ্য ইয়ার্স’ বইটি ২০০৮ সালে ফ্রান্সের প্রি রেনোদোঁ এবং ২০১৬ সালে ইতালির প্রিমিও স্ট্রেজা পুরস্কার পায়। এর পরের বছর মার্গারেটে ইয়োরকেনার পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ‘দ্য ইয়ার্স’ বইটি ২০১৯ সালে ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল। 

তথ্যঋণ :  উইকিপিডিয়া, ফিকশন ফ্যাকটরি, দৈনিক কালের কণ্ঠ, আনন্দবাজার পত্রিকা এবং, ইন্টারনেট

×