ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

পদ্মানদীর মাঝি

জলজীবনের ক্রন্দন

আ. শ. ম. বাবর আলী

প্রকাশিত: ২২:৩০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জলজীবনের ক্রন্দন

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

জীবনবোধক বাংলা উপন্যাসে শরৎচন্দ্রের পরে যে দু’জন বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তাঁরা হচ্ছেন, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবচেয়ে সার্থক এবং উল্লেখযোগ্য দুটি উপন্যাসের নাম ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ও ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। দুটি উপন্যাসই প্রকাশিত হয় একই বছরে, ১৯৩৬ সালে। 
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের রচিত সর্বমোট ২৬টি উপন্যাসের সবই জীবনঘনিষ্ঠ হলেও তার মধ্যে এ দুটি উপন্যাস কাহিনী, বর্ণনাচিত্রণ ও রচনাশৈলীতে বিশেষভাবে শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে। দুটি উপন্যাসই রচিত গ্রাম্য পটভূমিতে।
তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সর্বজন পরিচিত পদ্মানদী এবং তার তীরবর্তী মানুষের জীবন যাপনের কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসটি। 
এখানে আছে অনেক জেলে পরিবার। এই জেলেদের প্রাত্যাহিক নিয়মিত জীবনযাত্রা সম্পর্কে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় উপন্যাসে বলেন, ‘জেলেপাড়ার ঘরে শিশুর ক্রন্দন কোনদিন বন্ধ হয় না। ক্ষুধা-তৃষ্ণার দেবতা, হাসিকান্নার দেবতা, অন্ধকার আত্মার দেবতা, ইহাদের পূজা কোনদিন সাঙ্গ হয় না। এদিকে গ্রামের ব্রাহ্ম ও ব্রহ্মণেতর ভদ্র মানুষগুলো তাহাদের দূরে ঠেলিয়া রাখে, ওদিকে প্রকৃতির কালবৈশাখী তাহাদের ধ্বংস করিতে চায়, বর্ষার জল ঘরে ঢোকে, শীতের আঘাত হাড়ে গিয়া বাজে কনকন। আসে রোগ, আসে শোক। টিকিয়া থাকার নির্মম অনমনীয় প্রয়োজনে নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করিয়া তাহারা হয়রান হয়।’ 
এমনি একটি জেলে পরিবারের জীবনযাত্রার সামাজিক কাহিনী চিত্রিত হয়েছে ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসে। এই পরিবারের কেন্দ্রীয় চরিত্র কুবের। অতি দরিদ্র পরিবারের অভিভাবক সে। পদ্মা নদীতে জাল টেনে মাছ ধরে সে সংসার চালায়। কিন্তু নিজস্ব কোনো জাল নেই তার। নেই নিজের নৌকাও। অন্যের কাছে থেকে এ দুটো ভাড়া করে নিয়ে অতিকষ্টে সে সংসার চালায়।

ঔপন্যাসিক এই জেলে কুবের পরিচিতি দিয়েছেন এমনিভাবে, ‘একহাতে একখানি কাপড়কে নেংটির মত কোমরে জড়াইয়া ক্রমাগত জলে ভিজিয়া শীতল  জলোবাতাসে শীতবোধ করিয়া বিনিদ্র আরক্ত চোখে লণ্ঠনের মৃদু আলোয় নদীর অশান্ত জলরাশির দিকে চাহিয়া থাকিয়া কুবের ও গণেশ সমস্ত রাত মাছ ধরে।’ 
তার সামাজিক অবস্থান বর্ণিত হয়েছে এভাবে, ‘গরিবের মধ্যে সে গরিব, ছোটলোকের মধ্যে আরও বেশি ছোটলোক। এমনিভাবে তাহাকে বঞ্চিত করিবার অধিকারটা সকলের তাই প্রথার মত, সামাজিক ও ধর্ম সম্পর্কীয় দশটা নিয়মের মত, অসংকোচে গ্রহণ করিয়াছে। সে প্রতিবাদ করিতে পারিবে না। মনে মনে সকলেই যাহা জানে মুখ ফুটিয়া বলিবার অধিকার তাহার নাই।’
কুবেরের শাীরিকভাবে পঙ্গু স্ত্রী মালা। সংসারের অনেক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে সে মালার প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারে না, অনেক অবহেলা করে সে স্ত্রীর প্রতি। এমনকি অকারণে-বিনা কারণে মালার মধ্যে সে অনেক দোষ খোঁজে। কিন্তু ব্যবহারে যা-ই করুক না কেন, স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসার কমতি নেই্ অনেক সময় তা প্রকাশিতও হয়ে পড়ে।

অভাবের সংসারে স্ত্রী মালার সন্তান প্রসবের সংবাদ শুনে সে খুশি হওয়ার বদলে অভিযোগ করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। যেন এজন্য সব দায় মালারই। আবার পরবর্তীতে এক সময় সদ্যপ্রসূত সেই সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করে। সোহাগ করে স্ত্রীকে। এ যেন আবহমান বাংলার অভাবী সংসারের এক চিরচিত্র। স্ত্রী মালাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভুল বোঝে। আবার সে ভুল বোঝার অবসান হয়। অনুশোচনা হয় মালার প্রতি এমন আচরণের জন্য। এইতো সংসার, বিশেষ করে গ্রামের গরিবের সংসার। কঠিন শ্রম সত্ত্বেও অভাবী নৈরাশ্যময় জীবনে যা ঘটে। 
মালার বোন, অর্থাৎ কুবেরের শ্যালিকা কপিলা। তাকে নিয়ে অনেক কথা। এক রহস্যময়ী নারী সে। তার মনের কথা খুঁজে পায় না কুবের। মাঝে মাঝে কপিলার প্রতি তার আকর্ষণ হয়। আবার নির্দোষ মালার কথা মনে পড়লে নিজকে সে দোষী ভাবে। কপিলার চরিত্রও কুবেরের কাছে দুর্বোধ্য। কখনো তার কাছে মনে হয়, কপিলা একজন ছলনাময়ী নষ্টনারী।

অনেক পুরুষের সাথে তার সম্পর্ক এই স্বামী পরিত্যক্তা নারীর। এটা কুবেরের কাছে সহনীয় নয়। তার কারণ কি? সে কি কপিলার এমন চরিত্রের জন্য? নাকি অন্য কিছু? সেটা কি? সন্দেহটা তখনই দানা বাঁধে, যখন শ্যামাদাসের সাথে কপিলা চলে যাবার পর কুবেরের মনটা ভারী হয়ে পড়ে। এক অন্য রকম চিত্তচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় তার মাঝে। এই চিত্তচাঞ্চল্যের কারণ ঔপন্যাসিক খোলাখুলিভাবে না বললেও বিছুটা ইংগিত আছে তাঁর বর্ণনায়, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘পদ্মানদীর বোকা মাঝি সে, একহাটে কিনিয়া কপিলা তাহাকে আর একহাটে বেচিয়া দিয়াছে - অনেক দিন আগে।’
আবার কপিলার বিয়ের পর একদিন কপিলাকে দেখার জন্য কপিলার শ^শুরবাড়িতে যেয়ে হাজির হয় কুবের। শ্যালিকাকে দেখতে সে যেতেই পারে। কিন্তু যখন তাকে নিভৃতে অনেক আবেগি কণ্ঠে বলে, ‘তোর লাইগা দিবারাত্র পরানডা পোড়ায় কপিলা’, তখন কপিলার প্রতি তার মনের গহীনের দুর্বল অনুভূতিটা কি প্রকাশ পায় না?
কিন্তু এর কারণ কি? কুবের তো একজন ভালো মানুষ। কোনো রকম ঝুটঝামেলার মধ্যে সে তো নেই। চারিত্রিক দুর্বলতাও তার মধ্যে নেই। তবে কেন কপিলার প্রতি তার এ আকর্ষণ? তবে তার মধ্যে আছে পরম  প্রেমসত্তা। সে সত্তার পূর্ণ সাফল্য সে পায়নি শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম ও দুর্বল স্ত্রীর কাছ থেকে। এটাই কি তার এ নীতিভ্রমের কারণ? মানসিক শান্তি আর স্বস্তির জন্য অন্যপথ খোঁজা? 
তবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, কুবের মানসিক পথভ্রষ্ট হয়ে অন্যায় করলেও সে দুষ্টচরিত্র নয়। তাই যদি হতো, তাহলে সে কপিলার প্রতি মানসিক দুর্বল এবং ব্যর্থ হয়ে অন্য কোনোখানে যেয়ে তার মানসিক তৃপ্তি মেটাতো। আর এ কথাও সত্যি যে, কপিলার প্রতি তার মানসিক দুর্বলতা থাকলেও শারীরিক দুর্বলতার সামান্যতন অনুভূতিও ছিল না। 

তবে কি এ কথা আমরা ধরে নিতে পারি যে, দাম্পত্য জীবনের ভালোবাসার ঘাটতিকে মেটানোর জন্য অন্য কোথাও না, শুধুমাত্র শ্যালিকাকে উপলক্ষ করেছে সে? কিন্তু এটাও সত্য যে, কপিলার প্রতি তার দুর্বলতা থাকলেও কপিলাকে কখনো সে বুঝতে দেয়নি। কখনো কোনোভাবে প্রকাশ করেনি তার কাছে। হয়তো এ এক অসহ্য অতৃপ্তির বেদনা কুবেরের মধ্যে। তবে তা যা-ই হোক, কুবের যে সমাজের একজন অনুভূতিশীল সাধারণ মানুষের প্রতিচ্ছবি, প্রতিনিধি, এ কথা কি অস্বীকার করা যাবে?
কিন্তু কুবেরের স্ত্রী মালা কোনদিক দিয়ে অনুপোযুক্ত। তার একটা পা ভাঙা। এ ছাড়া একজন সৎ, উপযুক্ত, নীতিবান, আদর্শবতী নারীর যেসব বিশেষত্ত্ব থাকা দরকার তার সবই আছে, শুধু পায়ের পঙ্গুত্বটাই তার দুর্বলতা। এ কথা নিজেই ভালোভাবে জানে মালা। 
কুবেরও যে তা স্বীকার করে না, তা নয়। মালাকে নিয়ে তার গর্বও কম নয়। মালা সম্পর্কে তার প্রকাশিত মনোভাব, ‘মালার রং কালো নয়, তামাটেÑ মাঝে মাঝে তাহাকে বাবুদের বাড়ির মেয়েদের মত ফরসাই দেখিয়া বসে। জেলেপাড়ার কোন স্ত্রীলোকের গায়ে এমন চামড়া নাই। একটা পা যদি ওর হাঁটুর কাছ হইতে দুমড়াইয়া বাঁকিয়া না যাইত, কুবেরের ঘরে ও পায়ের ধূলা হইতে আসিত না।’
মালার রূপ যৌবনে মুগ্ধতা সৃষ্টি করে কুবেরের মনে। বিশেষ মুহূর্তে কুবেরের মনে হয়, মালার রঙ যেন আরও ফরসা হইয়া আসিয়াছে, একমুষ্টি যৌবন অতিরিক্ত আসিয়াছে মালার দেহে।’
অর্থাৎ স্ত্রী মালাকে নিয়ে কুবেরের মোহময়তা ও সৌভাগ্যগর্ব কম নয়। তবু কেন তার মধ্যে এমন চিত্তবৈকল্য? এর কি কোনো সঠিক হিসেব মেলে? এমনই হয়। অনেক সময় কঠিন বাস্তবতার সাথে মনস্তাত্ত্বিক সূত্রের সংজ্ঞা মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেও অনেকটা তাই।
এদিকে মালা নিজেও জানে স্বামীর কাছে তার দুর্বলতার কারণ। ওই পায়ের পঙ্গুত্ব ছাড়াও স্বামীর কাছে আর কোনো দুর্বলতা তার নেই। তাই নিজের সে পঙ্গুত্বের চিকিৎসা করে। কিন্তু যখন সে ডাক্তারের কাছে শোনে, তার পা আর ভালো হবে না কোনোদিন, তখন সে একেবারেই নিরাশ হয়ে পড়ে। তবু স্বামীর ওপর তার অধিকার নিয়ে সে বেঁচে থাকতে চায়। এ যেন শুধু পদ্মানদীপারের জেলেপাড়া নয়, গোটা বাঙালি নারীর এক চিরন্তন রূপ।
‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসে আছে আরো বেশ কয়েকটি চরিত্র, যেগুলো এই জেলে পরিবারের সাথে অনেকটা মিলে যায়। তাদের মধ্যে উল্লেখ করা যেতে পারে শ্যামদাস, গণেশ দাস, পীতম মাঝি, সিধু দাস, মেজবাবু, আমিনুদ্দির নাম। এসব চরিত্র এসেছে মূল কাহিনীর অনুষঙ্গ হয়ে। 

আবার অনেক চরিত্রের আচরণ-চরিত্র এদের সাথে মেলে না।  তাদের কেউ কেউ মহাজনী মেজাজের, কেউ কেউ কূট চরিত্রের এবং ওই ধরনের ব্যক্তিরা। এই ধরনের ব্যক্তির মধ্য হোসেন মিয়া অন্যতম। নদীপারের সহজ-সরল মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। অবশ্য এই হোসেন মিয়া যে সব সময় সমাজের জন্য ক্ষতিকর তা নয়, পদ্মাপারের কোনো এক এলাকাকে সমৃদ্ধ করে তোলায় তার প্রচেষ্টাও কম নয়।

কিন্তু সেটা করতে যেয়ে যখন অসহায় মানুষরা তার স্বার্থের শিকার হয়ে পড়ে, সেটাই দুঃখজনক। কিন্তু তা সত্ত্বেও হোসেন মিয়ার মধ্যে এমন কিছু গুণাবলী রয়েছে, যে জন্য হোসেন মিয়ার প্রতি কুবেরের কিছু ভয় থাকলেও আছে অনেকখানি শ্রদ্ধা।
পদ্মানদীর আশে-পাশের অনেক সৌন্দর্যচিত্র বর্ণিত হয়েছে এ উপন্যাসে। যেমন, হোসেন একখানা ম্যাপ বাহির করিল। আঙুল দিয়া কুবেরকে চিনিয়া দিতে লাগিল মেঘনার মোহনার দ্বীপগুলিÑ সিদ্ধিদ্বীপ, বিদৌ দ্বীপ, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, প্রভৃতি। আরও পশ্চিমে মানুপুর দ্বীপ, দক্ষিণ সাবাজপুর বন্দোরা দ্বীপ। আর ওই যে ছোট ছোট বিন্দুগুলি দেখা যায় বাইশ নম্বর মোটা লাইনটার উপরে, ওগুলি মাণিক দ্বীপপুঞ্জ... উত্তর-দক্ষিণের একানব্বই নম্বর লাইনটা যে বিন্দুতে পরস্পরকে অতিক্রম করিয়াছে, ওই বিন্দুটার কিছু উত্তর-পূর্বে ওই যে একটা সবুজ বিন্দু দেখা যায়, ওর নাম ময়না দ্বীপ।’
আবার সেই ময়না দ্বীপের বর্ণনা দিয়েছেন ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসের লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এমনিভাবে, ‘দ্বীপের খানিকটা ডিম্বাকৃতি, খানিকটা ত্রিকোণ। দ্বীপের দীর্ঘতম পরিসর এগার মাইল।... খানিকটা পরিষ্কার করিয়া বসতি স্থাপন হইয়াছে, চাষ হইতেছে, বাকী অংশ জঙ্গলে ঢাকা। পশ্চিম দিকে অসংখ্য নারিকেল গাছ, সমস্ত দ্বীপে ছড়াইয়া না পড়িয়া গাছগুলি এবস্থানে ঘন হইয়া মাথা তুলিয়াছে কেন বোঝা যায় না। ’

এখানকার কৃষিজমির বিবরণ দেওয়া হয়েছে এভাবে, ‘জমি অত্যন্ত নীচু, এত নীচু যে আশংকা হয় যেদিন খুশি সেই দিনই সমস্ত দ্বীপটিকে সমুদ্র গ্রাস করিয়া ফেলিবে। দ্বীপের মাঝখানে এক মাইল পরিমিত একটা লোনা জলা আছে,সমুদ্রের চেয়েও ওখানটা বুঝি নীচু, খাল কাটিয়া যোগ করিয়া দিলে সমুদ্রের জল আসিয়া ভরিয়া ফেলিবে। জলের ধারে খানিকটা ধানের জমি করা হইয়াছে, বিস্ময়কর ফসল ফলে।’
এ ছাড়া পদ্মাতীরবর্তী কেতবপুর গ্রামের যে চিত্র বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, তা আমাদের গ্রামবাংলারই চিরন্তন রূপই। সে চিত্র এমন-
‘কেতবপুর গ্রাম ও জেলেপাড়ার মাঝামাঝি খালটা শুকাইয়া গিয়াছে। পদ্মার জলও কমিয়াছে অনেক।  ক্রমে ক্রমে মাঠগুলি ফসলশূন্য খাঁ খাঁ করিতে লাগিল, পায়েচলা পথগুলি স্পষ্ট ও মসৃণ হইয়া আসিয়াছে অনেক আগে। আমগাছে কচি পাতা দেখা দিয়াছে। দেখিতে দেখিতে পাখির সংখ্যা বাড়িয়া গিয়াছে দেশে। ঝাঁক বাঁধিয়া বুনো হাঁসের দলকে উড়িতে দেখা যায়। .... চর হইতে কলসী ভরা দুধ আসিয়া বাজারে চার পয়সা সের বিকইয়া যায়।’
‘পদ্মাপারের এসব চিত্র বর্ণনা অতি প্রাঞ্জল, স্বচ্ছ ও মনোগ্রাহী। সম্পূর্ণ বাস্তবতার বিবরণ। যার জন্য উপন্যাসটি এত বেশি পাঠকপ্রিয়তা লাভে সক্ষম হয়েছে।

×