ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ধা রা বা হি ক

মর্গ স্ট্রিটের হত্যা রহস্য

মূল: এডগার অ্যালান পো, অনুবাদ: খুররম মমতাজ

প্রকাশিত: ২২:২০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মর্গ স্ট্রিটের হত্যা রহস্য

মর্গ স্ট্রিটের হত্যা রহস্য

(পূর্ব প্রকাশের পর)
আছে কি-না তাও জানা যায়নি। বাড়ির সামনের দিকের জানালাগুলো সবসময় বন্ধ থাকতো। পেছনের দিকেও সব জানালা বন্ধ থাকতো, শুধু চারতলার বড় ঘরটা বাদেÑ যেটাতে মা-মেয়ে থাকতেন। বাড়িটা বেশ মজবুত ধরনের একটা বাড়ি, পুরনো নয়। 
ইসিডোর মুসে : পুলিশ। রাতে টহল দিচ্ছিল সে। তিনটার দিকে বাড়ির সামনে ভিড় দেখতে পায়। প্রায় তিরিশ-চল্লিশজন লোক গেট ভেঙে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে চেষ্টা করছিল। ইসিডোর তার বেয়নেট দিয়ে গেটটা খুলতে সক্ষম হয়Ñ হ্যাঁ শাবল-টাবলের সাহায্যে না, বেয়নেট দিয়ে। তখনো উপর থেকে চিৎকার ভেসে আসছিলÑ খুব কষ্ট পাওয়া মানুষের (এক বা একাধিক) একটানা চিৎকার। গেটটা খোলা মাত্র চিৎকার থেমে গেল।

সিঁড়ি টপকে উঠতে থাকে ইসিডোর। পেছনে অনেক মানুষ। প্রথম ল্যান্ডিংয়ে পৌঁছে সে দুজনের গলা শুনতে পায়। মনে হচ্ছিল যেন রাগারাগি করে কথা বলছে তারা। একটা গলা গম্ভীর, অন্যটা তীক্ষè- দ্বিতীয় গলাটা কেমন যেন অন্যরকম মনে হয় তার। প্রথমজনের দুই একটা কথাও সে বুঝতে পেরেছে- পুরুষের গলা, লোকটা ফ্রেঞ্চম্যান। দুটো শব্দ বুঝতে পেরেছে ইসিডোর- ‘ঝধপৎবফ’ৃ ‘উবারষ’. 
দ্বিতীয় গলাটা খুবই অদ্ভুত। বেশ তীক্ষè। পুরুষ না নারীর গলা বুঝতে পারেনি ইসিডোর। কী বলছে তাও বোঝা যায়নি। ভাষাটা স্প্যানিশ মনে হয়েছে তার। ঘরের অবস্থা ও অন্য যা কিছু বর্ণনা করেছে ইসিডোরÑ সেসব অন্যদের সঙ্গে মিলে যায়। 
হেনরি দুভাল : প্রতিবেশী, পেশায় রূপার গহনার কারিগর। বািড়র ভেতরে যারা ঢুকেছে, সে তাদের একজন। ঢুকেই তারা গেট বন্ধ করে দেয়। পুলিশ ইসিডোরের সঙ্গে তার কথা প্রায় সবই মিলে যায়। শুধু দ্বিতীয় তীক্ষè কণ্ঠস্বরটাকে তার মনে হয়েছে ইতালিয়ান হতে পারে। সে অবশ্য ইতালিয়ান ভাষা জানে না। ইসিডোরের মতো সে-ও বুঝতে পারেনি সেই কণ্ঠস্বর কী কোনো পুরুষের নাকি মেয়ের। তবে মা-মেয়ে তার পরিচিত, তাদের কণ্ঠস্বর সে ভালো করেই চেনে। হেনরি নিশ্চিত ওই অদ্ভুত কণ্ঠস্বর মা কিংবা মেয়ে দুজনের কারোরই না। 
ওডেনহাইমার : রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। আমস্টারডামের বাসিন্দা। ফ্রেঞ্চ ভাষা জানে না। একজন ইন্টারপ্রেটারের মাধ্যমে সে তার জবানবন্দি দিয়েছেÑ বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল রাতের ঘটনার সময়। রাস্তা থেকে সে নারীকণ্ঠের চিৎকার শুনতে পায়Ñ তীব্র প্রাণঘাতী চিৎকার। অন্যদের সঙ্গে বাড়ির ভেতরে ঢুকেছে ওডেনহাইমার। তখন নারীকণ্ঠের চিৎকার থেমে গেছে, চারতলা থেকে ভেসে আসছিল অন্য দুটো কণ্ঠস্বর। গম্ভীর কণ্ঠস্বরটা কিছু বলছিল। ঝধপৎবফ, উবারষ শব্দ দুটো সে-ও শুনেছে। আরও একটা শব্দ শুনেছেÑ গু এড়ফ! 
এই পর্যন্ত অন্যদের সঙ্গে তার বক্তব্য মিলে যায়। গরমিল হয় দ্বিতীয় কণ্ঠস্বরের বেলায়। ওডেনহাইমারের মতে দ্বিতীয় কণ্ঠস্বরটা পুরুষের এবং লোকটা হয়তো ফ্রেঞ্চম্যানÑ কী বলছিল বোঝা যায়নি। তার গলায় ছিল ভয় আর রাগ। তবে স্বরটাকে সে ঠিক তীক্ষè বলতে রাজি নয়Ñ তার মতে, স্বরটা যত না তীক্ষè, তার চেয়ে বেশি কর্কশ। 
জুল মিগনড : ব্যাংকার। (চলবে...)

×