ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

উপন্যাস ॥ ভেতরে বাইরে

সরকার মাসুদ

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ১৮ জুলাই ২০২৪

উপন্যাস ॥ ভেতরে বাইরে

জাপানের কোনো এক পার্কে স্থাপিত একটি ভাস্কর্যের ছবি

জাপানের কোনো এক পার্কে স্থাপিত একটি ভাস্কর্যের ছবি দেখেছিলাম কয়েক বছর আগে। ওই ভাস্কর্যে দেখানো হয়েছে, ঢেঁকিকলের এক প্রান্তে বসে থাকা একজন হৃষ্টপুষ্ট লোকের ওজন অপর প্রান্তে বসে থাকা কৃশকায় লোকটির চেয়ে অনেক কম। ওই কৃশকায় লোকটি বই পড়ছে, অন্যদিকে মোটা লোকটির হাতে বই নেই। তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে? মানুষ যদি জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা না করে এবং পাঠক হতে না পারে তাহলে তার ভেতরটা ফাঁপা থাকে। তার ওজন অনেক কমে যায়। অন্যদিকে মানুষের ওজন বাড়ায় তার অর্জিত বিদ্যাবুদ্ধি ও জ্ঞান-গরিমা। 
বৃহদায়তন বাংলা উপন্যাসগুলোর কথা মনে হলে আজকাল আমার ওই ভাস্কর্যটির কথা মনে পড়ে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পূর্ব-পশ্চিম’, বুদ্ধদের গুহর ‘মাধুকরী’, শীর্ষেন্দুর ‘পার্থিক’, শামসুদ্দীন আবুল কালামের ‘কাঞ্চনগ্রাম’,  রশীদ করীমের ‘মায়ের কাছে যাচ্ছি’, সমরেশ বসুর ‘যুগ যুগ জিও’- সবই পৃথুল। এসব গ্রন্থ পড়ে শেষ করাও এক কঠিন কর্ম। ‘পূর্ব-পশ্চিম’ ও ‘কাঞ্চনগ্রাম’ পড়তে আরম্ভ করে আমি বেশি দূর এগোতে পারিনি। হ্যাঁ, এসব উপন্যাসে নিখাঁদ গল্প আছে।

সেই গল্প আবার নানান দিকে শাখা-প্রশাখা ছড়ায়। সমরেশ, সুনীল, শীর্ষেন্দুরা তো দুর্দান্ত গল্প বলিয়ে। সেটা তাদের পাঠকমাত্রাই জানেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, এরা অজস্র পাঠকের মুখের দিকে তাকিয়ে হাজার হাজার পৃষ্ঠা লিখে গেছেন। অনেক কিছুই বর্ণনা করেছেন সহজ-সরলভাবে। অসংখ্য চরিত্র তৈরি করেছেন। তারা প্রতিনিধিত্ব করছে বিভিন্ন শ্রেণির। এবং নানা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করেছেন সেসব চরিত্রপাত্রে। এমন এক ধরনের ভাষা ব্যবহারে এটা পটু যা গড়পড়তা পাঠক পছন্দ করবেই। 
আর যে ডিটেইল তারা গ্রয়োগ করেন তাও একমুখী ও শাদামাটা। না,  মনের গলি-ঘুঁজির বিচিত্র সংবাদ তারা ব্যতিক্রমী ভঙ্গিতে পরিবেশন করতে চান না বা করতে পারেন না। ওটা করতে গেলে ভাষার কম-বেশি মারপ্যাঁচের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। পাঠকের তা হজম হবে না। এসব উপন্যাস যে অনেক মোটা হয় তার একটা বড় কারণ এই যে, পাঠক একটা দীর্ঘ কাহিনী কিনে নিয়ে গিয়ে অনেক দিন ধরে তাড়িয়ে তাড়িয়ে পড়তে চান। এই পাঠকরা, এই একুশ শতকেও, কেবলই হৃদয়রোচক গল্প ভালোবাসেন। তারা শিল্প-অশিল্পের তোয়াক্কা করেন না। বেশিরভাগ পাঠকই সাহিত্যের শিল্প ব্যাপারটাই বোঝেন না। আর এই সুযোগটির সদ্ব্যবহার করে চলেছেন জনপ্রিয় কথাকারগণ।

কিন্তু এ বিষয়টি লেখকের জন্য ফাঁদের মতো যা তারা নিজেরাই তৈরি করেছেন। এই ফাঁদে যে কেবল হুমায়ূন আহমেদ বা তাঁর প্রজন্মের আরও কেউ কেউ পড়েছেন তা নয়; পরবর্তী প্রজন্মেরও কোনো কোনো লেখক একই ভুল করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ, যিনি প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’তে সত্যিকার বড় মাপের সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এবং যার অনেকগুলো ছোট গল্প শুধু বিষয়মাহাত্ত্বের নয় শিল্প সৌকর্যেও তুলনাহীন। তিনি কিভাবে তার প্রতিভাকে অপচয়িত ও নিঃশেষিত করে গেছেন আমরা সকলেই জানি। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের গোড়ার দিকের ঔজ্জ্বল্যের কথা অমি ভুলিনি।

এমন কি বছর দশেক আগেও তার গল্প উপন্যাসে কথা-বস্তু ও শিল্পিতার মধ্যকার যে ভারসাম্য লক্ষ্য করা গেছে তার অনেকখানিই এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। যে আনিসুল ‘মা’ এর মতো একটি ওজনী উপন্যাস লিখলেন তিনিই আবার পাঠক রঞ্জক উপন্যাসের ধারায় নিজেকে সমর্পণ করলেন এটা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। অনেকেই ভাবেন, এর মধ্যে লেখকরাও আছেন, জনপ্রিয় হলেই সেই লেখক নিচুমানের হন না। হ্যাঁ, কথাটা সত্য। আমরা এও জানি, টলস্টয় বা লজাক, ডিকেন্স, শরৎচন্দ্র, সুনীল প্রমুখ জীবিতকালেই অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

লক্ষ্য করুন, এরা সকলেই কম-বেশি মোটামুটা উপন্যাস লিখেছেন। তবে এখনকার কথাকারদের মতো জনপ্রিয় হওয়ার জন্য লালায়িত ছিলেন না তারা এবং সেজন্য এতো কাঠ-খড়ও পোড়াননি। অতীতে যারা অসংখ্য, পাঠকের হৃদয় জয় করেছেন তারা সেটা করতে পেরেছেন শুধুই কলমের শক্তিমত্তার গুণে। আজকের লেখকদের মতো পাঠক কী খাবে বা কী খেতে পছন্দ করতে পারে এ জাতীয় ভাবনা তাদের আচ্ছন্ন করেনি। 
খ্যাতি ও ক্ষমতাপ্রাপ্তিই প্রধান উদ্দেশ্য হতে পারে না একজন লেখকের। বড় মাপের বরেণ্য লেখকগণ ওই জাতীয় ক্ষমতার পেছনে ছোটেনওনি।

সাহিত্যিকের উচিত পাঠকের নয় প্রথমে নিজের সন্তুষ্টিবিধান করা। আজকের দিনে একজন সর্বার্থে সচেতন (যার মধ্যে শিল্প-অশিল্পের ধারণাও অন্তর্ভুক্ত) লেখক একটি টেক্সট লিখে যদি মোটামুটিও তৃপ্ত হতে পারেন, তাহলে সেই লেখা ভালোমানের হবে এটা ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু সেটা জনপ্রিয় হবে কিনা তা অনিশ্চিত। আমরা দেখে আসছি খুব উন্নতমানের কথাসাহিত্যিকরা, আধুনিক যুগে, অজনপ্রিয়।

দৃষ্টান্ত হিসেবে মার্শেল প্রুস্ত, জেমস জয়েস, হেনরি জেমস, জর্জঅরওয়েল, হেনরি মিলার, ফ্রানস কাফকা, আলবোর কামু, নাগিব মাহফুজ, চিনুয়া আকেবে, মানিক বঙ্গোপাধ্যায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,  দেবেশ রায়, দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, সৈয়দ শামসুল হক, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হাসান আজিজুল হক, বুলবুল চৌধুরী, কায়েস আহমেদ প্রমুখের নাম বলতে পারি। অন্যদিকে লরেন্স, হেমিংওয়ে, মার্কেজ, মোরাভিয়া, শীর্ষেন্দু, শ্যামল, সুনীলরা জনপ্রিয় হলেও গুরুত্বপূর্ণ লেখক। 
আমরা জানি, শরীর মনকে প্রভাবিত করে। শরীরের ভালো থাকা, না-থাকার ওপন নির্ভর করে মনের ভালো থাকা, না-থাকা। আর স্বাস্থ্য মানে তো স্থূলত্ব নয়। মোটামুটি নিরোগ থাকাটাই হচ্ছে স্বাস্থ্য। বৃহদায়ন উপন্যাসগুলোকে আমার ফুলে-ফেঁপে ওঠা অসুস্থ মানুষের মতো মনে হয় যার শারীরিক অসুবিধা মনকেও আক্রান্ত করতে বাধ্য। মোটা উপন্যাসগুলোর স্থূলত্বের কারণ কি? কারণ সেখানে একটা জমজমাট দীর্ঘ গল্প থাকে। সেই গল্পকে বিশ্বাস্য করে তোলার জন্য পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা বর্ণনা দেওয়া হয়। অসংখ্য চরিত্র থাকে। তাদের ফুটিয়ে তোলার জন্যও কম বাক্য ব্যয়িত হয় না। তাছাড়া আছে ডায়ালগ। ডায়ালগের জন্যও দরকার অনেকখানি জায়গা। 
তো এরকম যখন ঘটে, সহজ-সাবলীল বয়ানের ভেতর দিয়ে একটা উপন্যাস এগোতে থাকে; শত শত পৃষ্ঠা ব্যয়িত হয়ে অবশেষে পরিণতিপ্রাপ্ত হয় তখন তার মন সংকীর্ণ হয়ে যায়। মন বলতে আমি এখানে শিল্পিতা বুঝাচ্ছি। 
কথাভাষায় নিজত্ব, কাহিনী পরিবেশনের ভঙিতে অভিনবত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশিষ্টতা আনতে না পারলে সেই রচনা সনাতনরীতির উপন্যাস হিসেবেই বিবেচিত হবে, আধুনিক কথাসাহিত্য হিসেবে নয়! প্রসঙ্গত মনে পড়ছে ‘বিবর’-এর কথা। এই উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে একটি মাইলফলকের মতো। কেননা আদর্শবাদী নায়কের যে ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানিক-তারাশঙ্করদের হাতে, সমরেশ বসু তা ‘বিবর’-এ ভেঙে দিলেন। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র দায়িত্ব জ্ঞানহীন, লুচ্চা ধরনের- এক কথায় নেগেটিভ।

উপরন্তু পুঁজিবাদী সমাজে ব্যক্তির জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত ও আবেগের চিত্র এখানে অসধারণ দক্ষতায় পরিবেশিত হয়েছে। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘মহিষকুড়ার উপকথা’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো’, ‘আঁধারমহিষ’, মফস্বলী বৃত্তান্ত, কুবেরের বিষয়-আশয়, নিরাপদ তন্দ্রা, এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে (বুলবুল চৌধুরী) জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা (শহীদুল জহির) প্রভৃতি উপন্যাস শেষ হয়েছে দেড়শ’ দু’শ পৃষ্ঠার মধ্যেই। এসব গ্রন্থ তাদের আটোসাঁটো শরীরের ভেতর ধারণ করতে পেরেছে গভীর জীবনবোধ ও শিল্পীদৃষ্টি।

ভাষাব্যবহারের ক্ষেত্রেও এরা কম-বেশি ওস্তাদী দেখিয়েছেন। স্মরণ করুন ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’, ‘দ্য আউটসাইডার’, ‘টু উমেন’, ‘মেটামরফসিস’, ‘ডেথ ইন ভেনিস’, ‘মুন অ্যান্ড সিক্স পেন্স’, ‘দ্য পাম ওয়াইন ডাঙ্কার্ড’,- এর মতো প্রায় চটি উপন্যাসগুলো। কেবল বিষয় স্বাতন্ত্র্য ও ভাষার নৈপুণ্য নয়, কতখানি শৈল্পিক দক্ষতা ধারণ করে আছে এসব গ্রন্থ তা-ও ভাববার বিষয়।
উপন্যাসকে তাই দেখতে হবে ভেতর থেকে। ভেতর থেকে বাইরের দিকে এগোনোর মতো করে পাঠ করতে হবে উপন্যাসকে। তাহলেই বোঝা যাবে কেন আকৃতিতে বড় হয়েও একটি উপন্যাস ‘বড়’ হয়ে ওঠে না। আবার আকৃতিতে ছোট হলেও ‘বিবর’ ‘খেলার প্রতিভা’ ‘আউটসাইডার’ ‘দ্বিতীয় জন্ম’ (অসীম রায়), বা ‘নীল দংশন’  (সৈয়দ শামসুল হক) এর মতো গ্রন্থগুলো কেন ‘ছোট’ উপন্যাস নয় তা-ও অনুধাবন করা সম্ভব হবে।

ছোট গল্পের তুলনায় উপন্যাস অনেক বেশি স্বাধীনতা দিয়েছে লেখককে। ফলে কি ঘটেছে? অনেকেই তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বৃহতের প্রতি বেহুদা আকর্ষণ তাদের প্রগলভ ও অতিভাষী করে তুলেছে। এমনটা করার আগে তারা বোধহয় ভাবেন, চার/পাঁচ/ছ’শত পৃষ্ঠা লিখতে না পারলে উপন্যাসকে মহাকাব্যিক দেখায় না। কিন্তু তারা জানেন না, অথবা ভুলে যান যে, ক্ষমতাকে ঠিক মতো প্রয়োগ করতে পারলে দেড়শ/দু’শ পৃষ্ঠার ভেতরেও এপিক মাত্রা আনা সম্ভব। উদাহরণ দেব ‘ইভান দেনিসোভিচের জীবনের একদিন’ নামের উপন্যাসটির। এই গ্রন্থে সোলঝেনিৎসিন একদিনের বর্ণনার মাধ্যমে বন্দি জীবনের গ্লানি মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরেছেন। 

বহির্জগতের খুঁটিনাটি বিষয়ে নিবিষ্ট মন নিয়ে ছোট পরিসরের তাৎপর্য ভরা উপন্যাস লেখা বেশ কঠিন। রবীন্দ্রনাথের মতো শিল্পীকেও তাই ‘গোরা’ লেখার জন্য ৩৫০ পৃষ্ঠা খরচ করতে হয়েছে। আমি অবশ্য মনে করি ওটা নয়, ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথের সেরা কাজ ‘যোগাযোগ’ ও ‘ঘরে-বাইরে’ যেগুলো ১৫০ পৃষ্ঠার ভেতর শেষ হয়েছে। সেরা বললাম এজন্য যে, এই বই দুটোতে লেখক শুধু হৃদয়ের ধাঁধাসন্ধারী পথই নয়, মনের ভেতরের টানাপড়েনচিহ্নিত নানা অলিগলির কথাও অত্যন্ত সার্থক উপায়ে বলেছেন, যতটা ভালো করে তার বাকি দশটি উপন্যাসে বলতে পারেননি।
নভেলের ফরম্যাট নামে যে বস্তুটি উনিশ শতক ও বিশ শতকের অর্ধাংশ জুড়ে বিরাজমান ছিল, বহুকাল যাবত তা অন্তর্হিত। আধুনিক উপন্যাস কেবল আত্মজীবনী বা ইতিহাসই নয়, গ্রাস করে নিয়েছে কবিতা, ডায়েরি, চিঠিপত্র, চিত্রকলা, সিনেমার কলাকৌশল, নাটকের বৈশিষ্ট্য ও আরও বহু কিছু। কিন্তু এসব কিছুই ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে, হয়ও, যদি না ঔপন্যাসিক শেষ পর্যন্ত একটা সুলিখিত গ্রন্থ উপহার দিতে পারেন। জীবনের ঘটনাবহুলতা ও উপন্যাসের নির্মিতির মাঝখানে শিল্প নামের এক কাঁটা গাছ দাঁড়িয়ে আছে। ওই গাছটিকে এড়িয়ে আধুনিক উপন্যাসের দিকে এগোনো অসম্ভব। 
 লেখকমাত্রই কল্পনাশীল ব্যক্তি। সেই ব্যক্তিটি মননশীলও। 
আজকের দিনের পাঠকও কিন্তু নিঃসঙ্গ ও মননশীল। তবে মাত্রার তারতম্য আছে। কল্পনা করার জন্য পাঠককেও সুযোগ দিতে হবে। বৃহৎ আকারের উপন্যাসগুলো প্রায় সবকিছুই বলে দেয়। সেখানে পাঠকের কল্পনা করার জায়গা খুবই সীমিত। পক্ষান্তরে, ছোট আকারের উপন্যাসসমূহ প্রতীকধর্মী, ইঙ্গিতবহুল ও মিতভাষী। ফলে পাঠকেরও অনেক কিছু ভেবে নেওয়ার সুযোগ আছে। 
আর্টের অনেক ধর্মের একটি হলো, তা যতটা ব্যক্ত করে, অব্যক্ত রাখে তার চেয়ে বেশি। কিন্তু উপন্যাস, এমনকি ছোট গল্পও, যখন পৃথুল হয়ে ওঠে তার মনে সেই পৃথুলতার নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। কাহিনীর ডালপালার বা বিস্তারের ভার সে সইতে পারে না। বিশাল বপু ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পমন নিয়ে সে টিকে থাকে অল্প কিছু কাল।

×