রাণী ভবানীর প্রতি বড় লাট ওয়ারেন হেস্টিংসের দুর্ব্যবহার
কাঁচা গোল্লার নাটোর, উত্তরা গণভবনখ্যাত নাটোর, জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেনের জন্মস্থান নাটোর, ইতিহাসের বিখ্যাত রাণী ভবানীর নাটোর কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।
নাটোর রাজবংশের রঘুনন্দন রায়ই সর্ব প্রথম রাজা যিনি নাটোর রাজবংশের সূচনা করেন। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন জমিদারি পরিচালনা করে স্বীয় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রাম জীবনের হাতে রাজ্যভার অর্পণ করেন। নাটোর রাজবংশে প্রতিষ্ঠাতা রঘুনন্দন মুর্শিদাবাদ নবাব সরকারের নায়েব কানুনগোর কাজ করে স্বীয়ভ্রাতা রাম জীবনের নামে প্রভূত জমিদারি লাভ করেন। এই রাম জীবনের পুত্র ছিলেন রামকান্ত। এই রামকান্তই হলেন ইতিহাস প্রসিদ্ধ ‘বঙ্গেশ^রী’ নামে খ্যাত রাণী ভবানীর স্বামী। তিনি ছিলেন নাটোরের রাজকুল লক্ষী। রাণী ভবানী নামে সমগ্র বাংলায় সমাধিক পরিচিত।
রাণী ভবানীর সঙ্গে রামকান্তের বিয়ে সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বগুড়া জেলার ছাতিয়ান গ্রামে রামকান্তের একটি কাছারি বাড়ি ছিল। জমিদারি কাজে অনেক সময় রামকান্তকে সেখানে যাতায়াত করতে হতো । কাচারিটি ছিল রাণী ভাবানীর পিতা আত্মারাম চৌধুরীর বাড়ির সন্নিকটে। রাণী ভবানীর বয়স যখন ১৩ বছর, সে সময় প্রায় তিনি কাছারি বাড়ি ফুলের বাগানে সকাল বেলায় ফুল তুলতে যেতেন। রাণী ভবানীর মাথায় সবসময় কাপড় থাকত। একদিন হঠাৎ বাতাসে তার মাথার কাপড় পড়ে গেলে সে সময় রাণী ভবানীর চেহারা রামকান্ত দেখতে পান। এরপর থেকে রাণী ভবানীর প্রতি রামকান্ত আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে রাণী ভবানী রামকান্তের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
তৎকালীন নাটোর রাজ্যের অধীনে সমগ্র বাংলায় ভূসম্পত্তির পরিমাণ ছিল মোট ১৩,০০০ হাজার বর্গ মাইলেরও অধিক। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামকান্ত রাণী ভবানী ও তার একমাত্র কন্যা সুন্দরী তারাকে রেখে ইহলোক ত্যাগ করেন। রামকান্ত মারা যাবার পরে সুবিস্তীর্ণ নাটোর রাজ্যের ভার রাণী ভবানীর ওপরে পড়ে। রাণী ভবানী সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী নিযুক্ত হন। তৎকালীন রাণী ভবানীর জমিদারিতে ১৬৪টি পরগনা ছিল। মোট রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১,৮৫,০৩,৩২২৫ টাকা। তন্মন্ধে প্রায় ৭০ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে প্রদত্ত হতো। সেকালে এত বড় জমিদারি আর কোথাও ছিল না বলে তাকে অর্ধ বঙ্গেশ^রী বলা হতো। উল্লেখ করা যেতে পারে দিনাজপুরেও রাণী ভবানীর দুটি পরগনার সন্ধান পাওয়া যায়। পরগনা দুটি হলো- ১) রাণীনগর ও ২) রাণীগঞ্জ।
রাণী ভবানীর কোন পুত্র সন্তান না থাকায় তিনি দত্তক পুত্র গ্রহণ করেন। রঘুনাথ লাহিড়ী নামক এক যুবকের সঙ্গে তিনি তার একমাত্র কন্যার বিবাহ দেন। পরবর্তীতে তিনি তার এই জামাতার নামেই রাজ্যভার অর্পণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, কিন্তু অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে স্বীয় জামাতার মৃত্যু হওয়ায় তিনি আবার রাজ্যভার গ্রহণ করতে বাধ্য হন।
তৎকালীন ইংরেজ কর্মকর্তা হলওয়েলের বিবরণী থেকে জানতে পারা যায় দীর্ঘ ৩৫ দিনের পথব্যাপী রাণী ভবানীর রাজ্য বিস্তীর্ণ ছিল। নাটোর রাজন্যকুল রাণী ভবানী ধন-ভা-ারে অতুলনীয় ঐশ^র্যশালিনী ছিলেন।
রাণী ভবানীর সময়ই ইতিহাসের সেই ভয়ঙ্কর ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ঘটে (১৭৭৬ খ্রি.)। এতে বহুলোকের মৃত্যু ঘটে। ইতিহাসের এই ক্রান্তিলগ্নে নাটোরের রাণী ভবানী নিজের রাজকোষ শূন্য করে লাখ লাখ প্রজার অন্নকষ্ট নিবারণের জন্য মুক্ত হস্তে দান করেছিলেন। ছিয়াত্তরের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সমগ্র বাংলার এক তৃতীয়াংশ লোক মৃত্যু বরণ করেন।
তিনি প্রজাদের জীবন বাঁচানোর নিমিত্তে রাজ্য ভা-ার খুলে দেন। ফলে প্রজারা নিদারুণ খাদ্য কষ্ট থেকে রক্ষা পান।
রাণী ভবানীর কোন পুত্র সন্তান না থাকায় তৎকালীন স্বীয়রাজ্য রক্ষার্থে রামকৃষ্ণ রায় নামক এক যুবককে তিনি দত্তক গ্রহণ করেন। রাণী ভবানীর প্রতি বড় লাট ওয়ারেন হেস্টিংসের দুর্ব্যবহার, দেশে শিল্প বাণিজ্যের অবনতি, নিজ প্রভূত্বের খর্বতা, এ সকল চিন্তা করেই তিনি নিজ দত্তক পুত্র রামকৃষ্ণ রায়ের হস্তে রাজ্যভার অর্পণ করে গঙ্গাবাসে যেতে মনস্থ করেন। রামকৃষ্ণ রায় বয়ঃপ্রাপ্ত হলে দিল্লীর বাদশাহ স¤্রাট শাহ আলম কর্তৃক সনদ প্রাপ্ত হয়ে ‘রাজা উপাধি’ প্রাপ্ত হন। অচিরেই রাণী ভবানীর দত্তক পুত্র রামকৃষ্ণ রায়কে স¤্রাট শাহ আলম মহারাজাধীরাজ ‘পৃথ্বীরাজ বাহাদুর’ খেতাবে ভূষিত করেন।
এ সময়ে তিনি দীর্ঘ সময় মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী ভাগীরথীর অপর তীরে বড় নগরে বসবাস করতেন। নাটোরের মতো বড়নগরকেও তিনি প্রাসাদ, মঠ, মন্দির প্রভৃতি দ্বারা সুসজ্জিত করেছিলেন। কিছুদিন রাজকার্য পরিচালনার পর রামকৃষ্ণ রায়ের মধ্যে হঠাৎ করেই ভাবান্তর দেখা দেয় এবং তিনি বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করেন। হিন্দু আইনে অন্যমত গ্রহণ করলে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে হয়, এ নিয়ম অনুযায়ী রামকৃষ্ণ রায় স্বীয়রাজ্য হারান ও তার স্ত্রী, পুত্র, পরিজন তাকে ত্যাগ করে রাণী ভবানীর সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বড়নগরে বসবাস শুরু করতে থাকেন। রামকৃষ্ণ রায় ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন।
রামকৃষ্ণ রায় সাধক ও সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন। সংসার ধর্মের প্রতি তার কোন আকর্ষণ ছিল না। রাণী ভবানী পুনরায় রাজ্যভার গ্রহণপূর্বক ১৮০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৫০ বছর রাজকার্য পরিচালনা করে ৭৯ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন। রাণী ভবানী যেমন অসাধারণ বুদ্ধিমতি, তেমনি ধর্মনিষ্ঠ, পরদুঃখকাতরা ও আড়ম্বর পরিশূন্যা ছিলেন। এই বাংলার বাঘিনী, স্বাধীনচেতা, পুনরায়ন ব্রতে আপোসহীনা, দূরদৃষ্টিসম্পন্না, নানা গুণের অধিকারিণী ছিলেন।
অসাধারণ বুদ্ধিমতি রাণী ভবানীর বিপুল জমিদারি অল্প কয়েক বছরের মধ্যে হস্তচ্যুত হয়ে যায়, হেস্টিংস ও কর্নওয়ালিসের সময় কালের মধ্যে। ওয়ারেন হেস্টিংস সে সময় তার প্রতি যথেষ্ট দুর্ব্যবহার করেছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
হেস্টিংসের সঙ্গে রানী ভবানীর কি কারণে মনোমালিন্য বেধে ছিল ইতিহাসে এটার সত্যতা জানা যায় না। তবে অনেকের মতে, রাণী ভবানী ইংরেজদের কর দিতে মোটেই ইচ্ছুক ছিলেন না। দূরদর্শিনী রানী ভবানী জানতেন এই বিদেশী বেনিয়া, খাজনা আদায়কারীরা সুযোগ পেলে একদিন এ দেশের সর্বেসর্বা হয়ে বসবে।
হেস্টিংস রাণীর গতিবিধি, চলাফেরা প্রভূত্ব খর্ করেছিলেন। এককথায তার স্বাধীনতা হরণ করেছিলেন একথা নিঃশংসয়ে বলা যেতে পারে। এছাড়াও লর্ড কর্নওয়ালিশের ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের’ সময় নাটোর রাজ্যের ওপর অত্যধিক রাজস্ব ধার্য করা হয়েছিল। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস তার সমস্ত জমিদারি বলপূর্বক বাজেয়াপ্ত করে তার সমর্থনকারী রাজা, জমিদারদের মধ্যে বণ্ঠন করেছিলেন (রানী ভবানীর জমিদারি)। শুধু জীবিকার জন্য রানী ভবানীকে দিয়েছিলেন সামান্য ভাতা। অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই রাণী ভবানীর দেড় কোটি টাকা আদায়ের জমিদারি নিলামে উচ্ছন্ন ও ধ্বংস হয়ে যায়।
রাজার বাদ, ভিতর বন্ধ ও গয়াবাড়ী পরগনা দান করা হয় কাশিম বাজারের নব্য জমিদার কান্ত মুদীকে। কান্ত নন্দী ইতিহাসে কান্ত মুদী থেকে মহারাজা হয়েছিলেন, সে আর এক ইতিহাস। ভাগ্যবান কান্ত মুদীকে রাণী ভবানীর জমিদারির বহু পরগনা স্বেচ্ছায় দান করেন ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে।
রাণী ভবানীরও দুর্ভাগ্য ১৫ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। ৩২ বছর বয়সে তিনি বিধবা হন। ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামকান্ত মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্বয়ং রাজ্যভার গ্রহণ করেন। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে তার প্রাণপ্রিয় স্বামী রামকান্ত মারা যান। তখন রাণী ভবানীর একমাত্র কন্যা সন্তান ছিলেন তারা। তারার স্বামী রঘুনাথ লাহিড়ীও মারা যান অল্প বয়সে ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। শুভ্র বসন ও শাখা পরিধান করে রাণী ভবানী সারাজীবন বিধবার বাস আরম্ভ করলেন। একমাত্র মেয়ে তারাও বিধবা হলেন তরুণী বয়সে। পরপর দুটি মৃত্যু তাকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে গেল।
রাণী ভবানীর মৃত্যুর পর নাটোর রাজবংশ বড় তরফ ও ছোট তরফে দু’অংশে বিভক্ত হয়ে দুজন রাজার দ্বারা রাজকার্য পরিচালিত হতে থাকে। বড় তরফে রাজা বিশ্বনাথ রায় ও ছোট তরফে রাজা শিবনাথ রায়। উভয়ের পিতা ছিলেন রাজা রামকৃষ্ণ রায়। রাজা বিশ্বনাথের পর যারা পর্যায়ক্রমে রাজকার্য পরিচালনা করেন তারা হলেন যথাক্রমে রাজা গোবিন্দনাথ রায়, তৎপুত্র রাজা গোবিন্দ চন্দ্র রায়, তৎপুত্র দত্তক রাজা জগদিন্দ্রনাথ রায়, তৎপুত্র রাজা যোগীন্দ্রনাথ রায়। যোগীন্দ্রনাথ রায়ের দু’পুত্র ছিলেন।
যথাক্রমে কুমার জয়ন্তনাথ রায় ও কুমার ইন্দ্রজীত রায়। অন্যদিকে ছোট তরফের রাজা শিবনাথের মৃত্যুর পর যারা রাজা হন তারা হলেন তৎপুত্র আনন্দনাথ রায়, তৎপুত্র কুমার চন্দ্রনাথ রায়, কুমুন্দনাথ রায় ও মহারাজা যোগেন্দ্রনাথ রায়। রাজা যোগেন্দ্রনাথ রায়ের রাণী ছিলেন হেমাঙ্গিনী দেবী। তিনি দানশীলা ও বিদুষী মহিলা হিসাবে খ্যাত ছিলেন। রাজা যোগেন্দ্রনাথ রায়ের দু’পুত্র। যথাক্রমে জীতেন্দ্রনাথ রায় ও বীরেন্দ্রনাথ রায়।
তন্মন্ধে শেষোক্ত জন রাজা হন। ইনি পাগলা রাজা নামে সমধিক প্রসিদ্ধ ছিলেন। রাজা বীরেন্দ্রনাথ রায়ের চারটি কন্যা সন্তান ছিল। তারা হলেন যথাক্রমে লীলা দেবী, কোহিনূর দেবী, শিপ্রাদেবী ও কল্যাণী দেবী। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভক্তির পর বীরেন্দ্রনাথ সপরিবারে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
রাণী ভবানী জনহিতার্থে ও হিন্দুধর্মের উন্নতির জন্য অনেক কীর্তি রেখে গেছেন। তার স্থাপিত কীর্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আনন্দ কালী, তারা কেশ্বর, জল টুঙ্গী ও গোপী নাথ নামক কয়েকটি সুবৃহৎ দীঘি ও রাজবাড়ীর চতুর্দিকে পরিখা খনন করেন। মঠ ও মন্দিরের মধ্যে জয়কালী মাতা মন্দির, বগুড়া জেলার ভবানীপুরের ভবানী মন্দির বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য।
রাণী ভবানীর প্রাসাদ থেকে অর্ধমাইল উত্তরে বগুড়া, নাটোর রোডের পার্শ্বে আরও একটি প্রাসাদ রয়েছে, এটি হলো দীঘা পাতিয়া রাজ ভবন ও বর্তমানে উত্তরা গণভবন।
দীঘা পাতিয়া রাজবংশের প্রথম রাজার নাম দয়ারাম রায়। তিনি ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। এবং ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। দয়ারাম প্রথম জীবনে নাটোর রাজ এস্টেটে চাকরি করতেন। ভূষণার রাজা সেতাব রায়ের সঙ্গে মুর্শিদকুলী খানের যুদ্ধের সময় রাজা রাম জীবনের সঙ্গে তিনিও যুদ্ধে যোগ দান করেন এবং সেতাব রায় পরাজিত হলে তার গৃহে দেবতার মূর্তি এনে দীঘা পাতিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করেন।
দীঘা পাতিয়া রাজবংশের তালিকা:
রায় রায়ান দয়ারাম রায় (১৬৪০-১৭৬০ খ্রি.)
রাজা জগন্নাথ রায় (১৭৪৫-১৭৯০ খ্রি.)
রাজা প্রাণনাথ রায় (১৭৮৬-১৮৫৭ খ্রি.)
রাজা প্রসন্ন নাথ রায় (দত্তক ১৮২৬-১৮৮৩ খ্রি.)
রাণী ভবসুন্দরী দেবী (১৮৮৩-১৯৭৯ খ্রি.)
রাজা প্রমথনাথ রায় বাহাদুর (১৮৪১-১৮৯৩ খ্রি.)
রাজা দেবনাথ রায় (১৮৭৬-১৯২৫ খ্রি.)
রাজা প্রমথনাথ রায়ের ছেলে মেয়েরা হচ্ছেন যথাক্রমে কুমার বসন্ত রায়, শরৎকুমার রায়, হেমেন্দ্রনাথ রায়, মহেন্দ্রনাথ রায় ও কন্যা রাজকুমারী ইন্দ্রপ্রভা। রাজা দেবনাথ রায়ের ছেলেরা হলেন রাজা প্রতিভানাথ (১৮৯৪-১৯৭১ খ্রি.)
প্রতিভা নাথ রায়ের সন্তান-সন্ততিরা হচ্ছেন যথাক্রমে ১) রাজকুমারী উষা প্রভা ২) কুমার বীজেন্দ্রনাথ রায় ৩) শৈলেন্দ্রনাথ রায় ৪) চঞ্চল রায় ৫) তুষার রায় ৬) কুমারী নীলিমা প্রভা ৭) কুমার সুরেন্দ্রনাথ রায়।
নাটোর রাজবংশে রাণী ভবানী বাংলার ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। অসাধারণ দেশ প্রেমিক নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে তিনি পুত্রবৎ স্নেহ করতেন। তিনি সিরাজ উদ্দৌলাকে ইংরেজদের উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘বাবা তুমি খাল কেটে কখনই যেন কুমির না আনো’। রাণীর সেই দূরদৃষ্টি বাণী একদিন সত্যে পর্যবসিত হয়েছে। এর পরপরই বাঙলার স্বাধীনতা নস্যাৎ। সেই দু’শ’ বছরের গোলামির জিঞ্জির।