ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সাব-অল্টার্ন তত্ত্ব

প্রকাশিত: ০০:৫৪, ৩০ এপ্রিল ২০২১

সাব-অল্টার্ন তত্ত্ব

এ বছর বইমেলায় প্রকাশিত সাব-অল্টার্ন তত্ত্ব : উদ্ভব, বিকাশ ও প্রভাব (Subaltern Theory : Origin, development and influence) গ্রন্থটিতে সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ গোষ্ঠীর তত্ত্বকে ফিরে দেখা হয়েছে, একই সঙ্গে তার প্রভাব ও প্রবণতা। সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ ছিল আশির দশকে তৈরি একটি প্রকল্প, হয়ত অন্য সময়ে অন্য ধরনের আরেক প্রকল্প চালু হবে। কিন্তু সাব-অল্টার্ন গবেষণা কী পেয়েছিল তা খুঁজে বের করা, কোন কোন বিষয় নিয়ে গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছিলেন-তার অনুপুঙ্খ বিবরণ লিপিবদ্ধ করা আছে এ গ্রন্থে। ১৯৮২ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত মোট ১২ খণ্ডের সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ সঙ্কলন নিবিড় পর্যবেক্ষণে প্রাসঙ্গিকতার সূত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। উপরন্তু রণজিৎ গুহ থেকে শুরু করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র প্রমুখ তাত্ত্বিকের গ্রন্থ ও প্রবন্ধসমূহও ড. মিল্টন বিশ্বাস সচেতনভাবে পর্যালোচনা করেছেন। এমনকি এই গোষ্ঠীর তত্ত্ব নিয়ে যারা বিতর্কে অবতীর্ণ হয়েছেন তাদের মতামতও বিশ্লেষণ করেছেন। ইংরেজী ভাষায় বেশিরভাগ গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াতে সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ গোষ্ঠীর লেখকদের নাম প্রায়ই উচ্চারিত হয়ে থাকে। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসতত্ত্ব বিশ্বজয় করেছে সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ প্রকাশনার মধ্য দিয়ে। নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার সূচনা থেকে কেবল কৃষক বিদ্রোহ নয় সাহিত্য, সমাজ, নৃতত্ত্ব, দর্শন, ন্যায়শাস্ত্র, ধর্ম, বর্ণ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। অর্থাৎ নিম্নবর্গের ইতিহাস কোন একক অথবা পৃথক জ্ঞানকা- নয়। ২০১২ সালে এ গোষ্ঠীর প্রকাশনা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ সঙ্কলন আর বের হচ্ছে না। কিন্তু ২০২১ সালে এসেও সাব-অল্টার্ন তত্ত্বের আলোচনা-সমালোচনা-ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এ তত্ত্বের প্রভাব এখনও বহাল আছে তা এই গ্রন্থ পাঠ করলে জানা যায়। বাংলাদেশের নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চায় এই গবেষণা গ্রন্থটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হবে। অন্যদিকে সাহিত্য সমালোচনার তত্ত্বে সাব-অল্টার্ন তত্ত্ব : উদ্ভব, বিকাশ ও প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় সাব-অল্টার্ন তত্ত্ব নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনার কৃতিত্ব অবশ্যই ড. মিল্টন বিশ্বাসের প্রাপ্য। অনিমেষ পাল
×