ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ফিনল্যান্ডের পথে পথে..

শিউলী আহমেদ

প্রকাশিত: ১৫:২১, ১০ অক্টোবর ২০২৪

ফিনল্যান্ডের পথে পথে..

মাত্র কয়েকদিন আগেই শুভ ঢাকার রাস্তায় চলেছে বিশাল যানজটে নাকাল হয়ে। এখানে বাস দাঁড়িয়ে থাকে রোডের মধ্যে, কোনাকুনিভাবে, পেছনে থাকবে অসংখ্য গাড়ির লাইন। প্যাঁ পু শব্দে কান ঝালাপালা। বাস ড্রাইভার সিএনজি ড্রাইভারকে বকা দিবে, সিএনজি ড্রাইভার বকা দিবে বাইকওয়ালাকে, বাইকওয়ালা রিক্সাওয়ালাকে, রিক্সাওয়ালা পথচারীকে। শুভ’র ভাষ্যমতে- ‘এমন হলেই তো মনে হবে রোডের মধ্যে আছি’! সে যেন আকাশ থেকে ধপাস করে পড়লো! অবিশ্বাস্য দৃষ্টি নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো জেব্রা ক্রসিং ধরে। আবেগে চোখে পানি এসে গেছে! এ ও সম্ভব! এত নির্বিঘ্নে রাস্তা পার হচ্ছে সে!

পড়ালেখার জন্যে শুভ সম্প্রতি স্ব-স্ত্রীক পাড়ি জমিয়েছেন ফিনল্যান্ডে। সেখানে হেঁটে হেঁটে তিনি পথের বর্ণনা করছিলেন। রাস্তা পার হওয়াটা খুব আনন্দের সেখানে। সিগনাল মেনে চলে সবাই। আর সেখানে কোনো সিগনাল লাইটও নেই। আপনি জেব্রা ক্রসিংয়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালে দুই পাশ থেকে আসা গাড়িই থেমে যাচ্ছে! তাদের পার হওয়ার সুযোগ থাকলেও আপনাকে রাস্তা পার হতে দেওয়ার জন্য থেমে যাচ্ছে। আপনার মনে হবে আপনি জেব্রা ক্রসিং না, লাল কার্পেটের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আর দুই পাশে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আপনাকে গার্ড অব অনার দিচ্ছে। কেউ একটু দুই পাশ থেকে ফুল ছিটিয়ে দিলেই একদম দুর্দান্ত অবস্থা হয়ে যাবে!প্রথমদিন যখন সিগন্যাল ছাড়াই এভাবে গাড়ি থেমে তাদের যেতে দিল, কিছু না বুঝে শুভ জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার স্ত্রী বললো, তোমাকে যাওয়ার সুযোগ দিতেই গাড়ি এখানে থেমে আছে। অবিশ্বাস্য লাগছিল তার কাছে! কেউ কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে তো দূরের কথা, হর্ণও বাজায় না! আমাদের দেশে এইটা ভাবাই যায় না! অকারণেই হর্ণ বাজাতে থাকে।

ফিনল্যান্ডে আপনি আনন্দ নিয়ে চলাফেরা করতে পারবেন। কেউ আপনাকে জাজ করতে আসবে না। কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব-কলহ করার বা কাউকে নিয়ে ভাবার সময়ও ফিনিশদের নেই। এরা পারত:পক্ষে কথাই বলে না। খুবই লাজুক এবং আত্মকেন্দ্রিক একটা জাতি। তবে আপনি যদি তাদের সঙ্গে কথা বলেন, তারা খুবই আন্তরিকভাবে কথা বলবে।

রাজু

×