
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে খাবারজনিত অসুস্থতার হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কনজিউমার রিপোর্টস (CR)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন ১০টি খাবারের তালিকা, যেগুলো ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি বার রিকল করা হয়েছে এবং অসুস্থতার ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে সিডিসি (CDC), এফডিএ (FDA) এবং কৃষি বিভাগের তথ্যের ভিত্তিতে। তাতে দেখা গেছে, গত বছর খাদ্য রিকলের হার বেড়েছে ৪১ শতাংশ। খাদ্যবাহিত রোগের নিশ্চিত ঘটনা বেড়েছে ২০ শতাংশ, আর হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
CR জানায়, এসব খাবার থেকে সালমোনেলা, ই. কোলাই ও লিস্টেরিয়ার মতো মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে। নিচে রয়েছে সেই ১০টি খাবার এবং সেগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির বিস্তারিত:
১. ডেলি মিট
শীতল মাংসজাত পণ্য হিসেবে পরিচিত ডেলি মিট ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ খাবার। ২০২৪ সালে এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৫ জন এবং ৮৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। Boar’s Head কোম্পানির লিভারওয়ার্স্ট থেকে ছড়ায় লিস্টেরিয়া, যা ১৯টি রাজ্যে ১০ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। কোম্পানিটি প্রায় ৭ মিলিয়ন পাউন্ড পণ্য রিকল করে।
২. শসা
২০২৪ সালে শসা থেকে সালমোনেলা ছড়িয়ে ৬৬৪ জন আক্রান্ত হন, যার মধ্যে ১৭৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। সুপারমার্কেটের পুরো শসা এবং তৈরি সালাদে ব্যবহৃত শসায় মিলেছে দূষণ।
৩. কাঁচা দুধ ও চিজ
Raw Farms-এর অপরিশোধিত দুধ ও চিজ থেকে ছড়িয়েছে ই. কোলাই ও সালমোনেলা। এতে আক্রান্ত হন ১৮২ জন, যার মধ্যে ২৯ জনকে হাসপাতালে নিতে হয়।
৪. কটিজা ও কেসো ফ্রেস্কো চিজ
এই সফট চিজগুলো লিস্টেরিয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। গত বছর এতে ২৬ জন অসুস্থ হন এবং ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
৫. ডিম
ডিমে থাকা সালমোনেলা সংক্রমণে ৯৩ জন আক্রান্ত হন এবং ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ভাঙা ডিম পরিহার এবং ভালোভাবে সিদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৬. পেঁয়াজ
McDonald’s-এর কোয়ার্টার পাউন্ডারে ব্যবহৃত হলুদ পেঁয়াজ থেকে ই. কোলাই ছড়িয়ে পড়ে। এতে ১০৪ জন অসুস্থ হন এবং একজনের মৃত্যু হয়।
৭. পাতাযুক্ত সবজি
লেটুসসহ পাতাযুক্ত সবজিতে পশুর বর্জ্য থেকে জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। CR বলছে, হাইড্রোপনিকভাবে উৎপাদিত লেটুস তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
৮. কাঁচা গাজর
গ্রিমওয়ে ফার্মস-এর গাজর থেকে ই. কোলাই সংক্রমণে ১৯টি রাজ্যে ৪৮ জন আক্রান্ত হন, যার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়।
৯. অর্গানিক তুলসী পাতা (বেসিল)
অর্গানিক বেসিলে সালমোনেলার উপস্থিতিতে ৩৬ জন আক্রান্ত হন এবং ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
১০. রান্না করা মাংস ও পোলট্রি
রান্না করা মাংসে লিস্টেরিয়া মিললেও কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে ফ্রোজেন মাংস ভালোভাবে গরম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
CR-এর খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ড. জেমস ই. রজার্স বলেন, “সঠিক প্রস্তুতি ও রান্না, সাবধানতা অবলম্বন এবং ভালো উৎস থেকে খাবার কিনলে এসব ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।”
তাই বাজার থেকে কাঁচা বা প্রস্তুত খাবার কিনে তা যথাযথভাবে ধোয়া, খোসা ছাড়ানো এবং প্রয়োজনে সেদ্ধ করে খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। নিরাপদ খাবার মানেই সুস্থ জীবন।
সূত্র: https://shorturl.at/QZ9Oo
মিরাজ খান