
ছবিঃ সংগৃহীত
শৈশব কেবল একটি বয়স নয়, এটি আমাদের মানসিক গঠন, আত্মপরিচয় এবং সম্পর্কের ধারণাকে গড়ে তোলে। যেসব মানুষ শৈশবে ভালোবাসা বা যত্নের অভাব নিয়ে বড় হন, তাদের প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে কিছু ভিন্ন আচরণ বা মানসিকতা দেখা যায়— যেগুলো সবসময় খারাপ না হলেও, আলাদা ও গভীরভাবে প্রভাবিত হয়।
অতিরিক্ত আবেগগত স্বনির্ভরতা
ভালোবাসাহীন পরিবেশে বড় হওয়া ব্যক্তিরা নিজেই নিজেকে সামলে নেওয়ার প্রবণতা গড়ে তোলে। তারা প্রায়ই মনে করেন, “আমার জন্য কেউ থাকবে না, তাই নিজেকেই নিজের দায়িত্ব নিতে হবে।”
বিশ্বাস করতে অসুবিধা হওয়া
যাদের ছোটবেলায় বারবার ভেঙে পড়া বা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিজ্ঞতা আছে, তারা বড় হয়ে সহজে কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না। সবকিছুতেই সন্দেহ দেখা দেয়, যাতে আবার যেন কষ্ট না পেতে হয়।
অন্যের আবেগ গভীরভাবে বোঝা
তারা প্রায়ই অন্যের মনোভাব ও অনুভূতি খুব সহজেই ধরতে পারে, কারণ শৈশবে টিকে থাকতে এই দক্ষতা তারা রপ্ত করেছে। যদিও এটি সহানুভূতির প্রকাশ, তবুও কখনো কখনো তা মানসিকভাবে ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে।
সবসময় স্বীকৃতি বা প্রশংসা খোঁজা
ভালোবাসার অভাব থেকে জন্ম নেয় এক ধরনের “আমি কি যথেষ্ট?” ভাবনা। এর ফলে তারা অতিরিক্ত চেষ্টা করে যেন অন্যদের ভালো লাগা পায়— বিশেষত কাজ, সম্পর্ক বা সামাজিক ক্ষেত্রে।
প্রতিকূলতার মাঝেও দৃঢ়তা
তারা কঠিন বাস্তবতার মধ্যে নিজেকে গড়ে তোলে। এই মানুষগুলো মানসিকভাবে অনেক বেশি সহনশীল ও আত্মনির্ভরশীল হয়, কারণ তারা জানে কীভাবে একাকী দাঁড়াতে হয়।
প্রত্যাখ্যানের ভয়
ভালোবাসাহীন পরিবেশে বড় হওয়াদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায় গভীরভাবে ভালোবাসতে ভয় পাওয়া। কারণ প্রত্যাখ্যান তাদের কাছে “আমি অযোগ্য” হওয়ার প্রমাণ মনে হয়।
অত্যধিক আত্মনির্ভরতা
নিজের ওপর নির্ভর করার প্রবণতা এতটাই প্রবল হয় যে তারা সাহায্য চাইতে অস্বস্তি বোধ করে, এমনকি যখন সত্যিই প্রয়োজন হয়।
এই অভ্যাসগুলো একদিনে গড়ে ওঠেনি, কিন্তু সঠিক সহায়তা, বোঝাপড়া ও থেরাপির মাধ্যমে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানসিক সুস্থতা এবং পারস্পরিক ভালোবাসা অর্জনের জন্য প্রথম ধাপ হলো আত্মগ্রহণ ও বোঝাপড়া।
এই আচরণগুলো আসলে বেঁচে থাকার কৌশল। কোনো মানুষ হঠাৎ করে এমন হয়নি—তার পেছনে রয়েছে গভীর অভিজ্ঞতা। তাই বিচার না করে বোঝা ও সহানুভূতি দিয়েই সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করা সম্ভব।
সূত্রঃ ডেইলি মোটিভেশন নিউজ
আরশি