ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

পিরিয়ড চলাকালে কী খাবেন, আর কী এড়িয়ে চলবেন

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

পিরিয়ড চলাকালে কী খাবেন, আর কী এড়িয়ে চলবেন

ছবি: প্রতিকী

মাসিক চলাকালে সঠিক খাবার খাওয়া অনেক সময় অস্বস্তিকর উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে। বিশেষ করে কিছু ফলমূল শাকসবজি খেলে উপসর্গ কমতে পারে, আবার মসলাদার খাবার লাল মাংসের মতো কিছু খাবার উপসর্গ আরও বাড়াতে পারে।

মাসিকের সময় অনেকের পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমিভাব, ক্লান্তি, পেট ফাঁপা, মুডের পরিবর্তন এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে এই উপসর্গগুলো অনেকটাই সহজ হতে পারে।

কী খাবেন

. পানি:
পর্যাপ্ত পানি পান মাসিকের সময় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এটি ডিহাইড্রেশনজনিত মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে এবং পানি জমে ফাঁপা ভাব কমায়।

. ফলমূল:
তরমুজ, শশার মতো পানি-সমৃদ্ধ ফল শরীরকে হাইড্রেট রাখে। আবার মিষ্টি ফল প্রাকৃতিকভাবে চিনি চাহিদা মেটায়, ফলে রিফাইন্ড সুগার খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

. পাতাযুক্ত সবজি:
গাঁটের ব্যথা ক্লান্তি কমাতে পালং শাক কালের মতো আয়রনসমৃদ্ধ শাকসবজি খাওয়া উপকারী।

. আদা:
আদা চা ব্যথা বমিভাব কমাতে সহায়তা করে। তবে দিনে গ্রাম এর বেশি আদা না খাওয়াই ভালো।

. মুরগির মাংস:
প্রোটিন আয়রন সমৃদ্ধ মুরগির মাংস শরীরে শক্তি জোগায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

. মাছ:
মাছের ওমেগা- ফ্যাটি অ্যাসিড ব্যথা মন-মেজাজের পরিবর্তন কমাতে ভূমিকা রাখে।

. হলুদ:
হলুদের সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং পিএমএসের উপসর্গ হ্রাস করে।

. ডার্ক চকলেট:
আয়রন ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট পিএমএস উপসর্গ কমাতে সহায়ক।

. বাদাম:
বাদামে রয়েছে ওমেগা- ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন ম্যাগনেশিয়াম, যা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

১০. ফ্ল্যাক্সসিড তেল:
এটি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করতে পারে।

১১. কুইনোয়া:
আয়রন, প্রোটিন ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ কুইনোয়া শক্তি বজায় রাখে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।

১২. ডাল মসুর:
প্রোটিন আয়রনের চমৎকার উৎস হওয়ায় এগুলো নিরামিষভোজীদের জন্য দারুণ বিকল্প।

১৩. দই:
প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ দই যোনি সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক এবং ম্যাগনেশিয়াম ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।

১৪. টোফু:
আয়রন, ক্যালসিয়াম ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ টোফু নিরামিষপ্রেমীদের জন্য আদর্শ।

১৫. পুদিনা চা:
পুদিনা চা পিরিয়ডের ব্যথা, বমিভাব ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে।

১৬. কম্বুচা:
প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ এই ফারমেন্টেড চা দইয়ের বিকল্প হতে পারে, তবে চিনি কম থাকা কম্বুচা বেছে নেওয়া ভালো।

কী এড়িয়ে চলবেন

. লবণ:
অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে পানি জমে ফাঁপা ভাব বাড়ে।

. চিনি:
চিনির আধিক্য এনার্জি দ্রুত বাড়িয়ে আবার দ্রুত কমিয়ে দেয়, ফলে মুড খারাপ হয়।

. কফি:
ক্যাফেইন পানির ভারসাম্য বিঘ্ন করে, মাথাব্যথা বাড়াতে পারে এবং পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

. অ্যালকোহল:
অ্যালকোহল পান করলে ডিহাইড্রেশন হয়, ফলে মাথাব্যথা, বমি ক্লান্তি বাড়তে পারে।

. মসলাদার খাবার:
অনেকে মসলাদার খাবারে ডায়রিয়া পেটের ব্যথায় ভোগেন, তাই সময় এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

. লাল মাংস:
লাল মাংসে থাকা উচ্চমাত্রার প্রসটাগ্ল্যান্ডিন মাসিকের ব্যথা বাড়াতে পারে।

. যেসব খাবারে অস্বস্তি হয়:
যে কোনো ফুড সেনসিটিভিটি থাকলে তা এড়িয়ে চলুন, কারণ সময়ে হজমের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

 

কী খাবেন আর কী খাবেন না তা নির্ভর করে ব্যক্তিগত উপসর্গ এবং সহনশীলতার ওপর। তবে মাসিক চলাকালে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শরীরকে ভালো রাখতে এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। তবে যদি মাসিকের ব্যথা খুব বেশি হয় বা দৈনন্দিন কাজে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

সূত্র: https://www.healthline.com/health/womens-health/what-to-eat-during-period#takeaway

রবিউল হাসান

×