
দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসের পরিবর্তনই মেদ কমানোর বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কঠোর পরিশ্রম নয়, বরং নিয়মিত কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তুললেই ধীরে ধীরে আপনার শরীরে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন। চলুন জেনে নিই, প্রতিদিনের কোন ৬টি অভ্যাস আপনাকে মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে।
সকালে উঠে প্রথমেই পানি পান করুন
দিনের শুরুতেই এক গ্লাস পানি পান করা আপনার বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) সক্রিয় করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়তা করে। হাইড্রেশন বা শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা মেদ কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শরীরকে চাঙ্গা রাখে, ক্ষুধা কমায় এবং হজমপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। ঘুম থেকে উঠে অন্তত ৫০০ মিলিলিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন। সারাদিন এর সুফল পাবেন।
প্রতিটি খাবারে প্রাধান্য দিন প্রোটিনকে
আপনার প্রতিটি খাবারে প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করা বিপাকক্রিয়া বাড়াতে, ক্ষুধা কমাতে এবং পেশির গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে মেদ ঝরাতে ভূমিকা রাখে। ডিম, ডাল, চর্বিমুক্ত মাংস বা টোফু—যেকোনো উৎস থেকেই হোক না কেন, প্রতিদিনের প্রতিটি খাবারে কিছু না কিছু প্রোটিন রাখুন। এটি আপনাকে দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভব করাতে সাহায্য করবে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমাবে।
লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন
ছোট এই পরিবর্তনটি দীর্ঘমেয়াদে বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারে। সিঁড়ি ভাঙা শরীরের একাধিক মাংসপেশিকে সক্রিয় করে, হৃদ্স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করতে সাহায্য করে। আলাদা করে সময় না বের করেও দৈনন্দিন রুটিনে সহজেই একটু বেশি শারীরিক পরিশ্রম যোগ করার এটি দারুণ উপায়। এ ধরনের ছোট ছোট অভ্যাসই সময়ের সাথে সাথে দৃশ্যমান মেদ কমানোর ফল দেয়।
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
ঘুমের ঘাটতি শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে, ফলে মেদ কমানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে। গুণগত মানসম্পন্ন ঘুম শরীরের বিপাকপ্রক্রিয়া সচল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন যেমন গ্রেলিন ও লেপ্টিনের কার্যক্রম সঠিক রাখে। প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা মানসম্মত ঘুমের চেষ্টা করুন যাতে শরীর পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং স্বাভাবিকভাবে মেদ ঝরানোর প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারে।
খাদ্য গ্রহণের হিসাব রাখুন
খাবারের হিসাব রাখা মানে কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা নয়; বরং আপনি কী খাচ্ছেন সে সম্পর্কে সচেতন হওয়া। একটি খাদ্য-জার্নাল বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতিদিনের খাবার নথিভুক্ত করুন। এতে কোথায় পরিবর্তন আনা দরকার তা সহজেই বুঝতে পারবেন এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমবে। সহজ অথচ কার্যকর এই অভ্যাস আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে মেদ কমানোর পথে এগিয়ে রাখবে।
দিনের মাঝে ছোট ছোট হাঁটার সময় রাখুন
প্রতিটি খাবারের পর ১০ মিনিটের ছোট একটি হাঁটা হজমে সাহায্য করে এবং মেদ ঝরাতে সহায়তা করে। এটি শরীরে বাড়তি চাপ না দিয়ে দৈনন্দিন শারীরিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর দারুণ উপায়। ছোট ছোট এই হাঁটাচলা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফুলে যাওয়ার সমস্যা কমায় এবং অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। অফিস হোক কিংবা বাসা, সুযোগ পেলেই একটু হাঁটা শুরু করুন,সময় গড়ালে এর ইতিবাচক পরিবর্তন নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।
সূত্র:https://tinyurl.com/bddk29c7
আফরোজা