
ছবি: প্রতিকী
অনেকদিন ধরেই কফি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব চলছিল। প্রাথমিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দিয়েছিল, কফি খাওয়ার ফলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, কফির রয়েছে নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা।
ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পুষ্টি বিভাগের চেয়ারম্যান ফ্রাঙ্ক হু বলেন, 'সাম্প্রতিক প্রমাণগুলো বেশ জোরালোভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, স্বাস্থ্যগত দিক থেকে কফি ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী।' ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল ডিসকভার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষের জন্য, পরিমিত কফি গ্রহণ একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
ফ্রাঙ্ক হু জানান, প্রতিদিন ২ থেকে ৫ কাপ কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, লিভার ও এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার, পারকিনসনস রোগ এবং বিষণ্ণতার ঝুঁকি কমে। এমনকি কফি পানকারীদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও কম হতে পারে।
প্রাথমিক গবেষণাগুলো কফিকে হৃদরোগ ও হাঁপানিসহ নানা রোগের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। তবে ফ্রাঙ্ক হু জানান, সেই গবেষণাগুলোর অনেক অংশগ্রহণকারী ধূমপায়ী ছিলেন, যা গবেষকদের বিভ্রান্ত করেছিল। পরে বোঝা যায়, এসব সমস্যার জন্য ধূমপানই দায়ী ছিল, কফি নয়।
তিনি আরও বলেন, “মানুষ সাধারণত যে জিনিস বেশি উপভোগ করে, সেটিকে সন্দেহের চোখে দেখে। অতীতে অনেকে ভাবতেন, ‘কফি এত সুস্বাদু, নিশ্চয়ই এর কোনো ক্ষতি আছে।’ তবে এখনকার গবেষণা বলছে, বেশিরভাগ মানুষের জন্য কফি কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাই এনে দেয়।”
তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে কফি পান থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুদের ওপর কফির প্রভাব নিয়ে এখনো বেশি কিছু জানা যায়নি। গর্ভাবস্থায়ও ক্যাফেইন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি যারা প্যানিক ডিসঅর্ডার বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে ভুগছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত ক্যাফেইন উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
কফি পানের ক্ষেত্রে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, কফি তৈরি করার সময় কাগজের ফিল্টার ব্যবহার করা উচিত। কারণ, অপরিশোধিত কফি অকালমৃত্যুর হার বাড়াতে পারে এবং এতে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
এছাড়া, কফিতে অতিরিক্ত চিনি বা ক্রিম মেশানো থেকেও বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সূত্র: https://hsph.harvard.edu/news/is-coffee-good-or-bad-for-your-health/
রবিউল হাসান