
ছবি: সংগৃহীত।
বর্তমান জীবনের চাপ, অনিশ্চয়তা ও একাকীত্ব আমাদের অনেকের মনোজগতকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। আপনার কোনো কাছের মানুষ যদি মনমরা, উদ্বিগ্ন বা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সেটা শুধু তাদের নয়, আপনাকেও গভীরভাবে নাড়া দিতে পারে। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন যে তাদের সহায়তার প্রয়োজন? আর আপনি কীভাবে পাশে দাঁড়াতে পারেন, যাতে তারা বোঝেন — তারা একা নন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানাই আজকের প্রতিবেদনে।
কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন প্রিয়জন মানসিক চাপের মধ্যে আছেন?
প্রথম ধাপ হলো সচেতন থাকা। কিছু সাধারণ লক্ষণ যা আপনাকে সতর্ক করবে:
- আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন — যেমন চুপচাপ হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত রাগান্বিত হওয়া
- আগ্রহের অভাব — যে কাজগুলো একসময় আনন্দ দিত, তা থেকেও সরে আসা
- ঘুম ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন
- একাকীত্বের প্রবণতা বা সামাজিক দূরত্ব তৈরি করা
- নেতিবাচক কথা বলা বা জীবনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করা
কীভাবে পাশে থাকবেন?
১. শ্রোতা হন:
তাদের অনুভূতির কথা মন দিয়ে শুনুন। কথা থামিয়ে পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা না করে আগে বুঝতে চেষ্টা করুন।
২. আস্থার পরিবেশ তৈরি করুন:
উপদেশ না দিয়ে জানান যে, তারা যেমন অনুভব করছেন, তা স্বাভাবিক। বিচার-বিবেচনা ছাড়াই তাদের কথার প্রতি সম্মান দেখান।
৩. উৎসাহিত করুন পেশাদার সহায়তা নিতে:
যদি পরিস্থিতি জটিল মনে হয়, তাহলে কৌশলে কাউন্সেলর, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের কথা তুলুন। মনে রাখবেন, মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা শরীরের চিকিৎসার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
৪. নিজের সীমা বোঝুন:
আপনি যতই চেষ্টা করুন, সব দায়িত্ব একা নিতে পারবেন না। প্রয়োজন হলে নিজেও সাহায্য চেয়ে নিন — পরিবারের অন্য সদস্য, বন্ধু বা পেশাদারদের কাছ থেকে।
৫. একসঙ্গে সময় কাটান:
হালকা হাঁটাহাঁটি, সিনেমা দেখা, কিংবা চা-আড্ডার মতো সহজ সময়ে তারা মন খুলে কথা বলতে পারেন। কখনো কখনো ছোট ছোট মুহূর্তই বড় পরিবর্তনের সূচনা করে।
কেন এই যত্ন প্রয়োজন?
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা লুকিয়ে রাখলে তা ধীরে ধীরে বড় হতে পারে। প্রিয়জনের পাশে থাকা মানে শুধু সহানুভূতি নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিপদ ঠেকাতেও সাহায্য করা। সময়মতো আন্তরিক সহায়তা তাদের জীবনে আশার আলো হয়ে উঠতে পারে।
নুসরাত