
ছবিঃ সংগৃহীত
মানুষের দীর্ঘ, সুখী জীবন-যাপনের স্বপ্ন চিরকালীন। ভালোবাসায় ভরা পরিবার, নাতি-নাতনিদের হাসি, নির্ঝঞ্ঝাট অবসরকাল ও সুস্থ বার্ধক্য, এ চিত্র আমাদের অনেকের মনেই আঁকা।
আধুনিক চিকিৎসা, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার উন্নতির ফলে গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী গড় আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট দেশ ব্যতিক্রমী সাফল্য অর্জন করেছে, যেখানে নাগরিকরা গড়ে ৮৪ বছরেরও বেশি বেঁচে থাকেন।
১. মোনাকো (গড় আয়ু ৮৭ বছর)
ফরাসি রিভিয়েরার কোল ঘেঁষে থাকা মোনাকো বিশ্বের সবার ওপরে। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্ন ও শান্ত পরিবেশ, স্বাস্থ্যকর ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস,নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম- এসব মিলেই তাদের দীর্ঘ জীবন নিশ্চিত করে।
২. হংকং (গড় আয়ু ৮৫.৮ বছর)
হংকংয়ের নাগরিকরা হাঁটার মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন এবং খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর সামুদ্রিক খাবার ও সবজি অন্তর্ভুক্ত থাকে। উচ্চমানের হাসপাতাল, সরকারি বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা, সচেতন জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি জীবনমান উন্নত করেছে।
৩. ম্যাকাও (গড় আয়ু ৮৫.৫ বছর)
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ম্যাকাওতে। শক্তিশালী স্বাস্থ্য অবকাঠামো এবং ঐতিহ্যবাহী স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানুষের আয়ু বাড়িয়েছে।
৪. জাপান (গড় আয়ু ৮৫ বছর)
বিশ্বব্যাপী দীর্ঘায়ুর জন্য পরিচিত জাপান, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। পুষ্টিকর খাদ্য, প্রতিদিনের শারীরিক চর্চা, সামাজিক সংযোগ এবং বিশ্বমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা—সব মিলিয়ে এখানে দীর্ঘ জীবন এক সাধারণ বিষয়।
৫. লিশটেনস্টাইন ( গড় আয়ু ৮৪.৮ বছর)
ছোট অথচ উন্নত ইউরোপীয় দেশ। নির্মল বাতাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উচ্চ জীবনমান—এসব কারণে এখানকার নাগরিকরা দীর্ঘ জীবন উপভোগ করেন।
৬. সুইজারল্যান্ড ( গড় আয়ু ৮৪.৪ বছর)
সুইজারল্যান্ডের সুনাম তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য। স্বাস্থ্যকর খাদ্য, মানসিক চাপমুক্ত জীবন এবং চমৎকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা তাদের দীর্ঘায়ুর মূল চাবিকাঠি।
৭. সিঙ্গাপুর ( গড় আয়ু ৮৪.৩ বছর)
সরকারের স্বাস্থ্যসচেতন নীতি। মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নাগরিকদের দীর্ঘ জীবন নিশ্চিত করেছে।
৮. ইতালি (গড় আয়ু ৮৪.২ বছর)
ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যের জন্য বিখ্যাত ইতালিতে। জলপাই তেল, শাকসবজি, ফলমূল ও সামুদ্রিক খাবারের প্রাধান্য রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ঠ পরিবারিক সম্পর্ক ও শান্ত জীবনযাপন।
৯. ভ্যাটিকান সিটি (গড় আয়ু ৮৪.২ বছর)
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র হলেও, ভ্যাটিকান সিটির নাগরিকরা নিম্নচাপের পরিবেশ এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রার ফলে দীর্ঘ জীবন লাভ করেন।
১০. দক্ষিণ কোরিয়া ( গড় আয়ু ৮৪.১ বছর)
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যশিক্ষা, বৃদ্ধদের জন্য সক্রিয় ageing প্রোগ্রাম এবং ফারমেন্ট করা খাবার, সামুদ্রিক খাবার ও শাকসবজির খাদ্যাভ্যাস তাদের দীর্ঘ জীবন নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখিত সবই দীর্ঘ জীবন লাভের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এসব দেশের উদাহরণ দেখিয়ে দেয় যে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন কেবল স্বপ্ন নয়, বরং সঠিক জীবনধারা গ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব।
সূত্রঃ নিউজ ১৮
আরশি