ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

এলার্জিতে জীবন অতিষ্ঠ? এবার জেনে নিন মুক্তির গোপন রহস্য!

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

এলার্জিতে জীবন অতিষ্ঠ? এবার জেনে নিন মুক্তির গোপন রহস্য!

ছবি: সংগৃহীত।

একবিংশ শতাব্দীতে পরিবেশ দূষণ, খাদ্যে কেমিক্যালের ব্যবহার ও জীবনযাত্রার দ্রুত পরিবর্তনের ফলে এলার্জি একটি সাধারণ ও বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাঁচি, চোখ ও ত্বকে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট কিংবা ত্বকে ফুসকুড়ি—এসবই এলার্জির বহিঃপ্রকাশ। অনেকেই জানেন না, এলার্জি থেকে পুরোপুরি মুক্তি সম্ভব না হলেও নিয়মিত সতর্কতা ও কিছু ঘরোয়া অভ্যাস পালনের মাধ্যমে এলার্জিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এলার্জি থেকে মুক্তির কার্যকর কিছু উপায়।

১. এলার্জির উৎস চিহ্নিত করুন
প্রথম ধাপ হচ্ছে আপনার এলার্জির কারণ বা ‘ট্রিগার’ শনাক্ত করা। এটি হতে পারে ধুলাবালি, পোলেন, কিছু নির্দিষ্ট খাবার, পশুর লোম, অথবা কোনো ওষুধ। চিকিৎসকের পরামর্শে এলার্জি টেস্ট করিয়ে নিলে এটি সহজেই জানা সম্ভব।

২. ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখুন
ধুলাবালি ও ছাঁচ (mold) এলার্জির বড় উৎস। ঘর নিয়মিত ঝাড়ু ও মপ দিয়ে পরিষ্কার করা, বিছানার চাদর ও পর্দা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলা, এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করা ইত্যাদি খুব কার্যকর পদ্ধতি।

৩. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
অনেক সময় কিছু খাবার এলার্জির কারণ হতে পারে—যেমন বাদাম, দুধ, ডিম, সয়াবিন, চিংড়ি ইত্যাদি। এলার্জির লক্ষণ দেখা দিলে ডায়েরি রাখুন এবং কোন খাবারের পর সমস্যা বাড়ছে তা লক্ষ্য করুন।

৪. ঘরোয়া উপায় ও হারবাল চিকিৎসা
কালোজিরা: কালোজিরার তেল বা গুঁড়া নিয়মিত গ্রহণ করলে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মধু: বিশেষ করে স্থানীয় মৌচাষের মধু এলার্জি কমাতে সহায়তা করতে পারে।

তুলসীপাতা ও আদা চা: এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা ও সর্দিজনিত এলার্জির বিরুদ্ধে কার্যকর।

৫. ওষুধ গ্রহণ ও চিকিৎসকের পরামর্শ
অ্যান্টিহিস্টামিন, ইনহেলার, বা অন্য ওষুধ প্রয়োগে এলার্জির উপসর্গ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে এসব ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।

৬. ইমিউনোথেরাপি (Allergy Shots)
যাদের এলার্জি দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র, তাদের জন্য ইমিউনোথেরাপি বা অ্যালার্জি শট একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে শরীরকে নির্দিষ্ট এলার্জেনের সঙ্গে অভ্যস্ত করে তোলে।


এলার্জি যেহেতু একপ্রকার শারীরিক প্রতিক্রিয়া, তাই একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতনতা, নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা গ্রহণই হতে পারে একমাত্র পথ। এলার্জিকে অবহেলা না করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে প্রয়োজন সচেতনতার।

নুসরাত

×