ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

জামিনের পরও গ্রেফতার! জানুন কীভাবে এড়াতে পারেন অপ্রত্যাশিত পুলিশি হেনস্তা

প্রকাশিত: ০১:৩২, ২৬ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০১:৩৩, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

জামিনের পরও গ্রেফতার! জানুন কীভাবে এড়াতে পারেন অপ্রত্যাশিত পুলিশি হেনস্তা

“জামিন তো হয়ে গেছে, তবু কেন পুলিশ বাসায় এল?”—এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন অনেকেই। যদিও আইনগতভাবে আপনি কোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন, তারপরও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের কারণে পুলিশ হয়তো রাতের বেলা বা অন্য কোথাও থেকে আপনাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করতে পারে।

 ঘটনার সারসংক্ষেপ
একজন ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে থাকা মামলায় ওয়ারেন্ট হওয়ার পর আইনজীবীর মাধ্যমে কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো এক রাতে পুলিশ তাকে আবারও গ্রেফতার করতে আসে, অথচ তিনি দাবি করেন যে তিনি জামিনে আছেন। কেন এমন হয়?

বুঝে নিন: সমস্যার মূল কারণ
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাটি হয় "পরোনা ফেরত" বা "রিকল অর্ডার" কাগজ থানায় না পৌঁছানোয়। অনেকসময় কোর্ট থেকে জামিন হলেও, সেটা থানা পর্যায়ে পৌঁছাতে দেরি হয়। আর থানা রেজিস্টারে আপনার নাম তখনও ওয়ারেন্টযুক্ত আসামি হিসেবে থেকে যায়।

"যতক্ষণ না থানার ওয়ারেন্ট রেজিস্টার থেকে আপনার নাম কাটা হয়, ততক্ষণ পুলিশ আপনাকে বৈধভাবেই গ্রেফতার করতে পারে", জানান এক সিনিয়র আইনজীবী।

 ওয়ারেন্ট রেজিস্টার কী?
থানায় প্রতিটি ওয়ারেন্ট নিয়ে আলাদা রেজিস্টার রাখা হয়, যেখানে আসামির নাম, মামলা নম্বর, ধারা, ওয়ারেন্ট ইস্যুর তারিখ, আসামির ঠিকানা, এবং কোর্টের নাম উল্লেখ থাকে। পুলিশ এই রেজিস্টার অনুসারে অভিযান পরিচালনা করে।

কি কি সমস্যা হয় সাধারণত?
অনেক সময় জামিন হওয়ার পরেই মানুষ খুশিতে বাড়ি ফিরে যান।

আইনজীবী কাগজ দিতে দেরি করেন বা বলেন “আগামীকাল দিয়ে দেবো।”

তখন পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারে আপনি বাড়িতে, এবং অভিযান চালায়।

আপনি কাগজ দেখাতে না পারলে পুলিশ বাধ্য হয় আপনাকে থানায় নিয়ে যেতে।

আপনার করণীয় কী?
জামিনের পরে "পরোনা ফেরত" বা "রিকল কাগজ" সংগ্রহ করুন।

যতক্ষণ না ওই কাগজ থানায় পৌঁছে যায়, বাসায় না ফিরাই উত্তম।

পুলিশের সামনে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে জামিনের প্রমাণপত্র সাথে রাখুন।

রাতের সময় আইনজীবীর যোগাযোগ অপ্রাপ্তি অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে। তাই প্রস্তুত থাকুন।

বাড়ির অন্য সদস্যদের আগেই বোঝান যেন তারা অপ্রীতিকর আচরণে জড়ায় না।

উল্লেখযোগ্য বিষয়
অনেক সময় দেখা যায় জামিনের দিনটি বিকেল ৫টার পরে হওয়ায় অফিস টাইম শেষ হয়ে যায়। ফলে কাগজ সরাসরি থানায় পৌঁছায় না, যেটা বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আপনার সচেতনতা এই সমস্যা এড়াতে পারে।

জামিন মানেই মুক্তি—এই ধারণা অনেক সময় বিভ্রান্তিকর হতে পারে। আইন বুঝে, কাগজপত্র সঠিকভাবে বুঝে নিলে অনাকাঙ্ক্ষিত গ্রেফতার কিংবা হয়রানি এড়ানো সম্ভব। মনে রাখবেন, “আইন না জানা অপরাধ নয়, তবে সেটির ভুক্তভোগী হওয়া অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক।”

সূত্র ঃ https://www.facebook.com/share/v/16DL4BHWPS/

রাজু

×