
ছবিঃ সংগৃহীত
প্যারেন্টিং মানেই যেন ভালবাসা ও সন্দেহের মাঝের এক দোলাচল। কঠিন দিনে অনেকেই ভাবেন, আমি কি ঠিকভাবে আমার সন্তানকে বড় করছি? তবে অনেক সময় ছোট ছোট আচরণই বলে দেয়—আপনি ঠিক পথেই আছেন। এটি নিখুঁত হওয়ার প্রশ্ন নয়, বরং ভালোবাসা, ধৈর্য, এবং ধারাবাহিক যত্নের ব্যাপার। যদি আপনি নিজে বুঝতে না পারেন যে আপনার প্যারেন্টিং অনেক ভালো চলছে, নিচের কয়েকটি লক্ষণ দেখে বুঝবেন।
সন্তান মনের কথা সহজে বলতে পারে
যদি আপনার সন্তান ভয় বা সংকোচ ছাড়াই নিজের অনুভূতি, ভয়, স্বপ্ন বা মজার গল্প শেয়ার করে, বুঝে নিন সে মানসিকভাবে নিরাপদ অনুভব করছে। এটি এমন এক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয় যেখানে জোর করে কিছু নয়, বরং বিশ্বাসে ভরপুর এক বন্ধন গড়ে উঠেছে।
নিয়ম মানা হয়, কিন্তু ভয় থেকে নয়
আপনার সন্তান যদি সীমা ও নিয়ম মেনে চলে, কিন্তু তাতে অকারণে ভয় না পায়, তা আপনার স্পষ্টতা ও ধারাবাহিকতাকে প্রমাণ করে। শিশুরা নিরাপদ বোধ করে যখন তারা জানে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
কঠিন সময়েও ঘরে হাসি থাকে
যদি ঘরে নানা চাপের মাঝেও হাসির জায়গা থাকে, তাহলে বুঝে নিন, আপনি একটি মানসিকভাবে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছেন। চাপ থাকলেও ভালোবাসা ও আনন্দ টিকে থাকছে।
ভুল হলে তাতে লজ্জা নয়, আলোচনা হয়
যদি আপনার সন্তান ভুল করে আপনাকে জানায় এবং আপনি তা নিয়ে দোষারোপ না করে কথা বলেন, তাহলে আপনি শুধু শাসন নয়, দায়িত্ববোধ শেখাচ্ছেন।
আপনি নিজেও 'স্যরি' বলতে জানেন
শুধু সন্তানের ভুল ধরলেই চলবে না। আপনি যখন নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান, তখন আপনি বিনয় ও পারস্পরিক সম্মান শেখাচ্ছেন, যা শিশুদের চরিত্র গঠনে খুব জরুরি।
শাসনের পরও সন্তান ভালোবাসা অনুভব করে
যখন সন্তান শাসনের পরও আপনাকে জড়িয়ে ধরে বা হাসে, তখন বোঝা যায় সে জানে—ভালোবাসা শর্তহীন। এতে তার আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিতি তৈরি হয়।
অন্যদের সঙ্গে তুলনা হয় না
আপনি যদি সন্তানের গ্রেড, পারফরম্যান্স বা অন্যদের সঙ্গে তুলনা না করে তার ব্যক্তিগত উন্নতির ওপর গুরুত্ব দেন, তাহলে সে নিজের মতো বেড়ে উঠতে শেখে। এতে আত্মমর্যাদা গড়ে ওঠে।
সবসময় ব্যস্ত না রেখে একঘেয়েমির সুযোগ দেন
যদি আপনি শিশুকে সবসময় ব্যস্ত না রেখে কিছুটা বোর হতে দেন, তাহলে সে নিজের মতো চিন্তা করতে শেখে। এখান থেকেই সৃজনশীলতা ও স্বাধীনতা জন্ম নেয়।
ভালোবাসা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ পায়
আপনার সন্তান যদি নিজে থেকেই জড়িয়ে ধরে, ভালোবাসা দেখায় বা কোমলভাবে কথা বলে, তবে বুঝবেন সে মানসিকভাবে সুরক্ষিত ও ভালোবাসায় বড় হচ্ছে।
শিশু বড় করা মানে কেবল নিয়ম, পড়াশোনা বা দোষ ধরা নয়। এগুলো ছাড়াও সন্তান কীভাবে অনুভব করে, বাড়ির পরিবেশ কেমন, আপনি কেমনভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন—এসবই একজন সফল বাবা-মা হওয়ার প্রমাণ।
সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরশি