ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

বুদ্ধিমান মানুষেরা এই ৭টি কাজ কখনও করেন না

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

বুদ্ধিমান মানুষেরা এই ৭টি কাজ কখনও করেন না

ছবি: প্রতিকী

সামাজিক পরিস্থিতি সামলানো সবসময় সহজ নয়। অনেক সময় মনে হয় এটি এক ধরনের সূক্ষ্ম কাজ তাই একটি ভুল পদক্ষেপেই তৈরি হতে পারে অস্বস্তিকর মুহূর্ত বা ভুল বোঝাবুঝি।

তবে একটি বিষয় পরিষ্কারযদি আপনি এই ৭টি আচরণ এড়িয়ে চলেন, তবে আপনি হয়তো অধিকাংশ মানুষের চেয়ে বেশি সামাজিক বুদ্ধিমত্তার অধিকারী।

সামাজিক বুদ্ধিমত্তা মানে হলো অন্যদের বোঝার ক্ষমতা এবং তাদের সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করা। এটি শুধু কথোপকথনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়বরং শরীরী ভাষা আবেগের সূক্ষ্ম ইঙ্গিত বোঝার মাধ্যমেও এটি প্রকাশ পায়।

নিচে সেই সাতটি আচরণ তুলে ধরা হলো, যেগুলো সামাজিকভাবে বুদ্ধিমান মানুষরা সাধারণত এড়িয়ে চলেন।

. সবসময় কথোপকথনে আধিপত্য বিস্তার করা

সব সময় এমন কেউ থাকেন, যিনি নিজের কথা বলতেই ব্যস্ত থাকেন, অন্যের কথা শোনার সময় দেন না। অথচ কথোপকথন একটি দুইমুখী রাস্তাশোনার এবং বলার ভারসাম্য থাকা দরকার।

সামাজিকভাবে বুদ্ধিমান মানুষরা মনোযোগ দিয়ে শোনেন, চিন্তা করে উত্তর দেন এবং এমন প্রশ্ন করেন, যা অন্যদের মতামত প্রকাশে উৎসাহিত করে। এতে বোঝানো হয়, "আমি তোমার কথা শুনছি এবং মূল্য দিচ্ছি।"

আপনি যদি কথার আধিপত্য না করেন, বরং অন্যদের কথা বলার সুযোগ দেন, আপনি ইতিমধ্যেই সামাজিক বুদ্ধিমত্তার বড় একটি দিক অনুশীলন করছেন।

. দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া

আমরা অনেক সময় সীমিত তথ্য দেখে মানুষের সম্পর্কে ভুল ধারণা করে ফেলি। কিন্তু সামাজিক বুদ্ধিমত্তার মূল হচ্ছে মানুষের আচরণের পেছনের কারণ বোঝার চেষ্টা করা।

যারা সামাজিকভাবে সচেতন, তারা আগে বোঝেন, পরে বিচার করেন। তারা জানেন প্রতিটি মানুষের জীবনে এমন অনেক কিছু চলছে, যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না।

আপনি যদি মানুষকে সময় দেন এবং তাদের সত্যিকারের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করেন, তবে আপনি অনেকের চেয়ে এগিয়ে।

. অন্যের অনুভূতি অবহেলা করা

মানুষের আবেগ সংক্রামক হতে পারেএটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তাই সামাজিকভাবে বুদ্ধিমান মানুষরা অন্যের অনুভূতিকে অবহেলা করেন না, বরং সম্মান করেন।

তারা সহানুভূতিশীল হয়ে একটি নিরাপদ আবেগী পরিবেশ তৈরি করেন, যেখানে মানুষ খোলামেলা ভাব প্রকাশ করতে পারে। এতে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।

 

. নিজের মতামতের প্রতি অতিরিক্ত কঠোর থাকা

বিশ্ব নানা মত বিশ্বাসে পূর্ণ। আপনার ভাবনা যেমন সত্যি হতে পারে, তেমনই অন্যের ভাবনাও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।

সামাজিক বুদ্ধিমান মানুষরা মতবিরোধে উত্তেজিত হন না। তারা শ্রদ্ধাশীল বিতর্কে বিশ্বাস করেন এবং নিজেকে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বোঝার চেষ্টা করেন।

আপনি যদি নমনীয় মানসিকতা নিয়ে চলেন, তবে আপনি ইতিমধ্যেই সামাজিকভাবে সচেতন এক ব্যক্তিত্ব।

. নিজের যত্নে অবহেলা করা

নিজেকে সময় না দিলে, অন্যের জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব নয়। সামাজিকভাবে সচেতন মানুষরা জানেননিজের মানসিক শারীরিক সুস্থতা আগে নিশ্চিত করতে হয়।

তারা বিশ্রাম নেন, নিজেকে ভালো রাখেন এবং বুঝে চলেনএভাবেই অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা সম্ভব।

. সীমারেখা না টানা

সীমারেখা টানা মানে হলো নিজের প্রয়োজন, সময় সম্মানকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া। এটি সম্পর্ক নষ্ট করে না, বরং আরও দৃঢ় করে।

সামাজিকভাবে বুদ্ধিমান মানুষরানাবলতে শেখেন এবং অপরাধবোধ ছাড়াই তা করেন। এতে তাদের আত্মমর্যাদা বজায় থাকে এবং সম্পর্কেও স্পষ্টতা থাকে।

. শরীরী ভাষার সংকেত উপেক্ষা করা

শুধু মুখে বলা নয়, যোগাযোগ হয় চোখের চাহনি, ভঙ্গি, শব্দের টোন এবং নীরবতার মাধ্যমেও। সামাজিক বুদ্ধিমান মানুষরা এই অশব্দ বার্তা বুঝতে পারেন এবং তা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানান এতে তারা গভীরতর সংযোগ গড়তে পারেন।

আপনি যদি কারও শরীরী ভাষা লক্ষ্য করেন এবং তার ইঙ্গিত বোঝার চেষ্টা করেন, আপনি নিঃসন্দেহে সামাজিক বুদ্ধিমত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক চর্চা করছেন।

 

ড্যানিয়েল গোলম্যানের মতে, সামাজিক বুদ্ধিমত্তা মানে এমন আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা যা অন্যকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করে। এটি একদিনে অর্জন করা যায় না, তবে চর্চার মাধ্যমে প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ানো সম্ভব।

 

সূত্র: https://hackspirit.com/kir-if-you-avoid-these-behaviors-youre-probably-more-socially-intelligent-than-most/

রবিউল হাসান

×