
ছবিঃ সংগৃহীত
কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী, বস, এবং কাজের পরিবেশ—সবকিছুরই আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব পড়ে। একজন সহানুভূতিশীল সহকর্মী যেমন কর্মক্ষেত্রকে আনন্দদায়ক করে তোলে, তেমনই একজন বিষাক্ত সহকর্মী নিঃশব্দে টিম স্পিরিট নষ্ট করতে পারে এবং আমাদের মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে। মনোবিজ্ঞান বলছে, এ ধরনের মানুষদের আচরণ সাধারণত সূক্ষ্ম এবং ধরা কঠিন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে খুবই ক্ষতিকর হতে পারে।
মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে চিনবেন একজন বিষাক্ত সহকর্মীকে:
সবসময় নিজেকে 'ভিকটিম' ভাবে:
এ ধরনের সহকর্মীরা নিজেদের সবসময় ভুল বোঝা, অত্যাচারিত বা অবমূল্যায়িত বলে উপস্থাপন করেন। তারা নিজের দোষ স্বীকার না করে সবসময় দায় চাপিয়ে দেন অন্যদের ওপর। এটি একধরনের মানসিক কৌশল যাতে তারা করুণা আদায় করতে পারে এবং দায় এড়াতে পারে।
গসিপ আর নাটক ভালোবাসে:
মনোবিজ্ঞান বলছে, গসিপ একধরনের পরোক্ষ আক্রমণ যার মাধ্যমে সরাসরি কিছু না বলেও অন্যের সুনাম ক্ষুণ্ন করা যায়। এরা গুজব ছড়িয়ে নিজের পক্ষে পরিবেশ তৈরি করতে চায় এবং অন্যদের একঘরে করতে চেষ্টা করে।
সতর্কভাবে আপনার ক্ষতি করে:
তারা সরাসরি কিছু না বললেও নানা কৌশলে আপনার সম্মান বা কাজকে ছোট করে দেখাতে পারে। কখনও গুরুত্বপূর্ণ মেইলে আপনাকে বাদ দিয়ে দেয়, কখনও আপনার আইডিয়া নিজের বলে চালিয়ে দেয়। এটি ‘প্যাসিভ-অ্যাগ্রেসিভ’ আচরণ বলে পরিচিত।
অতিরিক্ত চাটুকারিতার আশ্রয় নেয়:
সব বিষাক্ত সহকর্মী কিন্তু বিরক্তিকর নন—কেউ কেউ অত্যন্ত আকর্ষণীয়, মিশুক এবং মার্জিত। তারা তাদের কথার জাদুতে মানুষকে প্রভাবিত করে এবং নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে। কিন্তু এদের আচরণে ধীরে ধীরে আপনি খেয়াল করবেন কতটা কৌশলীভাবে তারা মানুষ ব্যবহার করে।
আপনার মানসিক শক্তি নিঃশেষ করে দেয়:
মনোবিজ্ঞানীরা এই ধরনের মানুষকে বলেন ‘ইমোশনাল ভ্যাম্পায়ার’। এদের সঙ্গে কথা বলার পর আপনি হয়তো ক্লান্ত, উদ্বিগ্ন বা হতাশ বোধ করবেন। কারণ তারা সবসময় আপনার কাছ থেকে সময়, মনোযোগ এবং সহানুভূতি চায়, কিন্তু বিনিময়ে কিছুই দেয় না।
এমন সহকর্মীদের চিনে দূরত্ব বজায় রাখা সবচেয়ে ভালো। কর্মস্থলে ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখতে হলে বিষাক্ত আচরণকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং প্রয়োজনে পেশাগতভাবে সীমানা নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।
রিফাত