ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

ভালো ও সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে গড়তে সন্তানকে যে ৭ টি বিষয় শেখানো উচিত

প্রকাশিত: ০১:১৪, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

ভালো ও সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে গড়তে সন্তানকে যে ৭ টি বিষয় শেখানো উচিত

ছবি: সংগৃহীত

ভদ্রতা মানে শুধু "দয়া করে", "ধন্যবাদ", বা "দুঃখিত" বলা নয়। এটি টেবিলে সঠিকভাবে বসা কিংবা বাইরে সুন্দর ব্যবহার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রকৃত ভদ্রতা আমাদের মূল্যবোধ, সহানুভূতি এবং অন্যদের প্রতি সচেতনতার প্রতিফলন। একজন শিশু যেন ভবিষ্যতে সংবেদনশীল, দায়িত্ববান ও সামাজিকভাবে সচেতন মানুষ হয়ে উঠতে পারে, তার জন্য শৈশব থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ আচরণ শেখানো অত্যন্ত জরুরি।

নিচে তুলে ধরা হলো এমন ৭টি শিক্ষা, যা প্রতিটি শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক হতে পারে—

১. অপেক্ষার গুণ শেখানো:
শিশুকে বুঝিয়ে দিতে হবে, সব কিছুই তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায় না, এবং সবসময় মাঝখানে কথা বলা ঠিক নয়। ধৈর্য শেখানো মানে কেবল শৃঙ্খলা নয়, বরং এটি আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অন্যের ব্যক্তিগত জায়গার প্রতি সম্মান দেখানোর শিক্ষা।

২. ব্যক্তিগত সীমার প্রতি সম্মান:
ভদ্রতার চর্চা শুরু হয় ঘর থেকেই। ভাইবোন, পোষা প্রাণী বা অভিভাবকদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে, সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের ঘরে অনুমতি ছাড়া না ঢোকা, জিনিসপত্র নাড়াচাড়া না করা—এই ছোট ছোট বিষয়গুলো থেকেই ভবিষ্যতের শ্রদ্ধাশীল আচরণের ভিত্তি তৈরি হয়।

৩. মনোযোগ দিয়ে শোনা শেখানো:
শুধু চুপ করে থাকা শোনার প্রতীক নয়। শিশুকে শেখাতে হবে কীভাবে মনোযোগ দিয়ে কাউকে শোনা যায়, যেন তারা শুধু ভালো শ্রোতাই নয়, বরং আরও সহানুভূতিশীল এবং চিন্তাশীল মানুষে পরিণত হতে পারে।

৪. ভদ্রভাবে "না" বলা এবং অন্যের "না" বোঝা:
সব কিছুর সঙ্গে একমত হওয়া কখনোই ভদ্রতার মানে নয়। শিশুকে শেখাতে হবে কীভাবে বিনয়ের সঙ্গে নিজে না বলতে হয় এবং অন্যের না-কে কীভাবে সম্মান করতে হয়। এটি সম্মতি এবং ব্যক্তিগত সীমার প্রতি সচেতনতা গড়ে তোলে।

৫. দায়িত্ব নেওয়া ও ভুল থেকে শেখা:
শুধু খেলনা গুছিয়ে রাখা নয়, ভুল করলে তা স্বীকার করাও গুরুত্বপূর্ণ। “আমি ভুল করেছি”, “দুঃখিত”, কিংবা “আমি আবার চেষ্টা করব”—এই ধরনের বাক্য ব্যবহার করতে শেখানো একটি শিশুকে দায়িত্ববান মানুষ হতে সাহায্য করে।

৬. নিজের ইচ্ছা থেকেই সাহায্যের হাত বাড়ানো:
ভদ্রতা নির্দেশ পেলে কাজ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিশুকে শেখানো উচিত কীভাবে কারও পাশে দাঁড়াতে হয় বা প্রয়োজনে নিজে থেকে সাহায্য করতে হয়। এতে তার মধ্যে সহানুভূতি ও মানবিকতা বিকশিত হয়।

৭. ভিন্নতাকে গ্রহণ করা ও সম্মান করা:
ভদ্রতা মানে বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোও। ধর্ম, গায়ের রঙ, শারীরিক সক্ষমতা বা মতের ভিন্নতা—সব কিছুতেই শিশুকে সহনশীল হতে শেখাতে হবে। এই শিক্ষা তাকে ভবিষ্যতে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়বোধসম্পন্ন এবং পক্ষপাতহীন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

ভদ্রতা কেবল বাইরের আচরণ নয়, এটি একেবারে গভীর চরিত্র গঠনের অংশ। তাই শিশুকে এসব শিক্ষা দেওয়া শুরু হওয়া উচিত একদম ছোটবেলা থেকেই। কারণ, ভালো মানুষ গড়ে ওঠে ছোট ছোট শিক্ষার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে.

×