
ছবিঃ সংগৃহীত
আমি একজন আন্তর্জাতিক রিক্রুটারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য আসলে ক্যান্ডিডেটদের কী করা উচিত? উত্তরে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট শেয়ার করেছিলেন, যেগুলো আজকে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। এই পাঁচটা ভুল ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো যাতে আপনার সিভি আরও ভালো হয়।
১. অতিরিক্ত লম্বা বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্যপূর্ণ সিভি
অনেকেই তাদের সিভি অনেক বড় করে ফেলেন, প্রায় ছয়-সাত পৃষ্ঠা পর্যন্ত, এবং সেখানে নিজের এসএসসি, এইচএসসি ফলাফল থেকে শুরু করে পারিবারিক তথ্যসহ নানান অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে ভরে ফেলেন। এটা মোটেও ভালো নয়। সিভি সাধারণত দুই পৃষ্ঠার বেশি হওয়া উচিত নয়। ব্যক্তিগত তথ্য দিলে আপনার নাম, ঠিকানা, ইমেইল আইডি এবং লিঙ্কডইন আইডি পর্যন্ত থাকতে পারে, কিন্তু ধর্ম, জাতীয়তা, বাবা-মার নাম, রক্তের গ্রুপ, পাসপোর্ট নম্বর এসব অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
২. একঘেয়ে চাকরির দায়িত্বগুলো লেখা
অনেকেই সিভিতে নিজের চাকরির দায়িত্বগুলো কপি-পেস্ট করে দিয়ে দেন। এটা বড় ভুল। সিভিতে চাকরির দায়িত্বের জায়গায় আপনার অর্জন লেখা উচিত, যাতে আপনার মূল্য বাড়ে। এখানে একটা টিপস দিচ্ছি: আপনি STAR মডেল ব্যবহার করতে পারেন—সিচুয়েশন, টার্গেট, অ্যাকশন, রেজাল্ট। এই মডেলটি ব্যবহার করলে আপনার সিভি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
৩. ভুল ফরমেট এবং বিশৃঙ্খল ডিজাইন
অনেকেই সিভিতে নানা ধরনের কালার, শেড, টেবিল ব্যবহার করেন, কিন্তু মনে রাখবেন, এটি ATS (অ্যাপ্লিকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম) পড়তে পারে না। সবসময় আপনার সিভি সিম্পল, ক্লিন এবং প্রফেশনাল রাখতে চেষ্টা করবেন। ফন্ট সাইজ ১০ থেকে ১২ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন এবং স্পেসিং ১ থেকে ১.১৫ রাখার চেষ্টা করবেন।
৪. সিভিতে স্কিল উল্লেখ না করা
৯০% প্রফেশনালদের সিভিতে দেখা যায়, তারা কোন স্কিল উল্লেখ করেন না এবং অন্যের সিভি থেকে কপি-পেস্ট করে স্কিল দিয়ে দেন। এটা মারাত্মক ভুল। নিজের সিভিতে আপনার সফট এবং হার্ড স্কিল মিলিয়ে মোট ১০টি স্কিল অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত।
৫. সিভিতে জব রিলেটেড কীওয়ার্ড বা বাসওয়ার্ড না থাকা
অনেক সিভিতেই সঠিক ক্যারিয়ার সামারি ঠিকভাবে থাকে না, যেটা সিভিকে সাধারণ করে ফেলে। গুগল থেকে কপি-পেস্ট করে “I am a hard-working, dedicated individual seeking a challenging job” এর মতো গদবাধা কথাবার্তা লেখা হয়। বেস্ট প্র্যাকটিস হচ্ছে, আপনি যে চাকরিতে আবেদন করছেন, তার রিকোয়ারমেন্টের উপর ভিত্তি করে আপনার প্রাক্তন অভিজ্ঞতা এবং কোয়ালিফিকেশন অনুযায়ী সিভিটা সাজানো উচিত। সিভির ক্যারিয়ার অবজেক্টিভও সেভাবেই নির্ধারণ করা উচিত। সিভি অবশ্যই কাস্টমাইজড হতে হবে।
বাইরের দেশগুলোতে প্রফেশনালরা অনেক মানুষের সিভি লেখেন এবং ভালোভাবেই সাজান, আর এখন এই প্র্যাকটিস বাংলাদেশেও বাড়ছে। প্রফেশনালরা জানেন কিভাবে অল্প কথায় সুন্দরভাবে আপনার অর্জনগুলো সিভিতে তুলে ধরা যায়।
বোনাস টিপস
বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সিভি শর্ট করার জন্য ATS ব্যবহার করে। ATS আপনার সিভি যদি নির্দিষ্ট কাঠামোতে না থাকে, তবে তা অটোমেটিক্যালি রিজেক্ট করে দেয়। তাই আমার সুপারিশ হচ্ছে, সিভিতে অযথা কালার ব্যবহার না করে এবং বিশৃঙ্খল টেবিল না দিয়ে, সিভিটা যতটা সম্ভব ক্লিন এবং প্রফেশনাল রাখুন।
সূত্রঃ https://www.facebook.com/watch/?v=1392605448545636&rdid=zhVokrpOY8VDz8Ta
ইমরান