
ছবি: প্রতীকী
শিশুর জীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে ঘর থেকেই। কঠোর শাসন নয়, বরং ভালোবাসায় গড়ে তোলা কিছু সাধারণ নিয়মই পারে একজন শিশুতে সদ্ব্যবহার, শৃঙ্খলা এবং সহানুভূতিশীল মন গঠন করতে। এসব নিয়ম শুধুই “ভদ্র হওয়ার” পাঠ নয়, বরং অন্যের অনুভূতির মূল্য দেয়া, দায়িত্বশীল হওয়া এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার শিক্ষা দেয়। নিচে রইলো এমন ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম—
যেভাবে নিজে আচরণ পেতে চাও, অন্যের সঙ্গে সেভাবেই আচরণ করো
এটি একটি সোনালী নিয়ম। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে, তার কথাবার্তা বা আচরণ অন্যের মনে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তা ভেবে নিতে। এতে সহানুভূতি তৈরি হয় এবং দয়ালু মন গড়ে ওঠে।
যে জিনিস নষ্ট করবে সেটা পরিষ্কার করো
খেলনা হোক বা ঝগড়ার পরের মানসিক বিশৃঙ্খলা—নিজ দায়িত্বে গুছিয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে দায়িত্ববোধ এবং কাজ শেষ করার মনোভাব।
অন্যের জিনিস ব্যবহার করা যাবে না
শিশুদের শেখাতে হবে, অন্যের জিনিস ব্যবহার করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এতে গড়ে ওঠে গোপনীয়তা, সম্মান এবং সীমানার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ।
দায়িত্ববোধ বাড়লে স্বাধীনতাও বাড়বে
শিশুরা যখন সময়মতো কাজ করে, কথা রাখে, পড়াশোনা শেষ করে—তখন তারা ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জন করে। এ অভ্যাস ভবিষ্যতের আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে তোলে।
কেউ কথা বললে ফোন নামিয়ে রাখো
ডিজিটাল যুগে মনোযোগী থাকা একটা গুণ। কথাবার্তার সময় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয় এবং সম্মান বজায় থাকে।
মেজাজ খারাপ মানেই কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করা নয়
খারাপ দিন সবার আসে, কিন্তু রাগ বা কষ্টের মুহূর্তে কীভাবে কথা বলছি, সেটাই দেখায় আমাদের মানসিক পরিপক্বতা।
মিথ্যা বেশি দিন চাপা থাকে না
শিশুরা যদি ছোট থেকেই শেখে যে মিথ্যা ধরা পড়বেই, তাহলে তারা সত্য বলার গুরুত্ব বুঝতে পারে। এতে গড়ে ওঠে বিশ্বাসযোগ্যতা।
কৃতজ্ঞতা জানাও, সুখী হও
"ধন্যবাদ" বলার সহজ অভ্যাস থেকেই জন্ম নেয় কৃতজ্ঞ মন, যা পরবর্তীতে আনন্দ, বিনয় ও সন্তুষ্টির চর্চা গড়ে তোলে।
মা–বাবা ফোন করলে উত্তর দাও
এটা শুধু নিয়ম নয়, ভালোবাসার প্রতিফলন। দ্রুত উত্তর দেওয়া দায়িত্বশীলতার চিহ্ন এবং পরিবারের সাথে সংযোগ বজায় রাখে।
যা বলবে, মন থেকে বলবে
শুধু মুখে নয়—কোনো প্রতিশ্রুতি, ক্ষমা চাওয়া বা মন্তব্য যদি মন থেকে না হয়, তা আহত করতে পারে। তাই শিশুকে শেখাতে হবে সততা এবং মনোযোগ দিয়ে কথা বলার গুরুত্ব।
প্রতিটি কাজের ফল আছে
ভালো কাজের পুরস্কার যেমন আছে, তেমনি খারাপ কাজের জন্য শাস্তিও রয়েছে। এটা শিশুকে শেখায় আগে চিন্তা করে কাজ করার অভ্যাস।
কোন কিছু ভুল মনে হলে, সেটা সত্যিই ভুল
শিশুরা প্রায়ই ভেতর থেকে কিছু "ভুল" অনুভব করে—তাদের শেখাতে হবে, এই অনুভূতি বিশ্বাস করতে। এতে আত্মবিশ্বাস এবং আত্মরক্ষা গড়ে ওঠে।
কেন বাড়ির নিয়ম শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
এগুলো শিশুদের জন্য নিরাপদ, কাঠামোবদ্ধ ও দায়িত্বশীল জীবনের ভিত্তি তৈরি করে। বাড়ির নিয়ম শিশুদের চিন্তা-ভাবনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক আচরণের দক্ষতা বাড়ায়।
অভিভাবকদেরও কি নিয়ম মানা উচিত?
নিশ্চয়ই। অভিভাবকরা যখন নিজেরাও এই নিয়ম মানেন, তখন সেটা শিশুদের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে পরিবারের সবার মাঝে পারস্পরিক সম্মান ও ন্যায্যতার বোধ তৈরি হয়।
সূত্র: https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/parenting/moments/12-house-rules-that-will-teach-kids-good-manners-and-discipline/photostory/120349037.cms
রবিউল হাসান