ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যে সাতটি অভ্যাসে দূর হবে দূর্ভাগ্য!

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ২১ এপ্রিল ২০২৫

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যে সাতটি অভ্যাসে দূর হবে দূর্ভাগ্য!

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্ডারডগ (হতভাগ্য) এই শব্দটি শুনলেই যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক অসম যুদ্ধে লড়াই করা কারো ছবি। তবে মনোবিজ্ঞানিদের মতে, আন্ডারডগ হওয়া কোনো দুর্বলতা নয় বরং এক অসাধারণ শক্তি। এই মানুষগুলো প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করার যে ক্ষমতা রাখেন, তা আসে বিশেষ কিছু মনোভাব ও অভ্যাস থেকে। নিচে তুলে ধরা হলো এমনই সাতটি আচরণ, যা আন্ডারডগদের করে তোলে সাফল্যের পথের যোদ্ধা।

১) বাধাকে বন্ধুর মতো গ্রহণ করা

আন্ডারডগরা কখনো চ্যালেঞ্জ থেকে পালিয়ে যান না। বরং তাঁরা প্রতিকূলতাকে নিজের উন্নতির সুযোগ হিসেবে দেখেন। মনোবিজ্ঞানী আলবার্ট বানডুরা বলেছিলেন, সফল হতে হলে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস, সংগ্রাম এবং দৃঢ়তা। আন্ডারডগরা ঠিক সেই চেতনাতেই এগিয়ে যানহার না মানার মানসিকতা নিয়ে।

২) নিজের উপর অগাধ বিশ্বাস

যখন চারপাশে সবাই সন্দেহ করে, তখন একজন আন্ডারডগ নিজের উপর ভরসা রাখেন। আত্মবিশ্বাসই তাঁদের চালিকাশক্তি।

৩) নম্রতা বজায় রাখা

আন্ডারডগদের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলোনম্রতা। তাঁরা নিজেদের সাফল্য নিয়ে আত্মগর্ব করেন না, বরং কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন। সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেছিলেন, সংগ্রামের সময়গুলোই পরে জীবনের সেরা মুহূর্ত হিসেবে মনে হয়। আন্ডারডগরা সেই সংগ্রামকেই ভালোবাসেন।

৪) জেদ ও অধ্যবসায়

সাইকোলজিস্ট অ্যাঞ্জেলা ডাকওয়ার্থের গবেষণায় দেখা গেছে, সাফল্যের সবচেয়ে বড় পূর্বাভাস হলো grit—অর্থাৎ কঠিন পরিস্থিতিতে অনবরত চেষ্টা করে যাওয়ার মানসিকতা। আন্ডারডগরা ব্যর্থতাকে থামার কারণ নয়, বরং শেখার মাধ্যম হিসেবে দেখেন।

৫) পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানো

জীবনে সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে না। আন্ডারডগরা জানেন কিভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হয়। আলবার্ট এলিস বলেছেন, আপনার জীবন আপনার নিজের, সমস্যাকে দোষারোপ নয়, দায়িত্ব নিয়ে সামলে নিতে হয়। ঠিক সেভাবেই আন্ডারডগরা নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলেন।

৬) সমালোচনা গ্রহণ করা

আন্ডারডগরা সমালোচনাকে ব্যক্তিগত অপমান হিসেবে নেন না। বরং তাঁরা তা থেকে শেখার চেষ্টা করেন। কার্ল ইয়ুং বলেছিলেন, অন্যের যে আচরণে আপনি বিরক্ত হন, তা নিজের সম্পর্কে কিছু বলে। আন্ডারডগরা সেই কথাটা মনে রাখেন এবং প্রতিক্রিয়ার বদলে উপলব্ধি বেছে নেন।

৭) কখনো না থামা

শেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আচরণ হলো, চালিয়ে যাওয়া। সাফল্যের পথে যত বাধাই আসুক, তাঁরা থেমে যান না। মনোবিজ্ঞানী উইলিয়াম জেমস বলেছিলেন, কোনো কঠিন কাজ শুরু করার সময় আমাদের মনোভাবই তার ফলাফলকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। আন্ডারডগরা জানেন, ধারাবাহিক চেষ্টা একদিন না একদিন ফল দেবে।

কেউ একজন আন্ডারডগ মানেই দুর্বল নয়, বরং মানসিক শক্তির প্রতীক। আন্ডারডগ হওয়া মানে পিছিয়ে থাকা নয়। বরং, এটা এমন এক মানসিকতা, যা আপনাকে যেকোনো অসম লড়াইয়ে জয়ী করে তুলতে পারে। আত্মবিশ্বাস, নম্রতা, অধ্যবসায়, অভিযোজন ক্ষমতা আর শেখার মানসিকতাই তাঁদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

সূত্রঃ হ্যাক স্পিরিট

আরশি

×