
ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের যত্ন বলতে আমরা সাধারণত বুঝি ত্বক চর্চা, খাবারের নিয়ম মেনে চলা কিংবা ব্যায়াম। কিন্তু জানেন কি, আমাদের শরীরে এমন কিছু বিন্দু আছে, যেগুলোর প্রতি যত্ন নিলে ভিতর থেকে সুস্থতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে? ঠিক এমনই এক বিস্ময়কর বিন্দু হলো—নাভি! প্রাচীন আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসা অনুযায়ী, নাভিতে নির্দিষ্ট কিছু প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করলে তা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও রাখে আশ্চর্যজনক প্রভাব।
প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় আয়ুর্বেদ, চীনা একিউপ্রেশার এবং ইউনানি চিকিৎসা ব্যবস্থায় নাভিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। বলা হয়, নাভি হলো শরীরের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে কিছু নির্দিষ্ট তেল প্রয়োগ করলে তা সারা শরীরে শক্তি এবং প্রশান্তি ছড়িয়ে দিতে পারে।
চলুন জেনে নিই, কোন কোন তেল রাতে ঘুমনোর আগে নাভিতে দিলে পাওয়া যায় এই 'মির্যাকেল' উপকার।
১. নারকেল তেল:
ঘুমনোর আগে নাভিতে ২-৩ ফোঁটা কাঁচা নারকেল তেল দিলে ত্বকের শুষ্কতা কমে, হজম শক্তি বাড়ে এবং ঘুম গভীর হয়। এটি ত্বকে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে।
২. তিলের তেল:
তিলের তেল নাভিতে দিলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ অনেকটা হ্রাস পায়। এটি দেহের স্নায়ুকে শান্ত করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৩. গোলাপজল বা গোলাপতেল:
গোলাপের তেল নাভিতে দিলে শরীর ঠান্ডা থাকে ও হরমোনজনিত সমস্যাগুলোর ওপর উপকারী প্রভাব ফেলে। মেয়েদের ঋতুচক্র নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে বলেও দাবি করেন অনেকে।
৪. নিম তেল:
নাভিতে নিম তেল ব্যবহার করলে শরীরের ভেতরের বিষাক্ত উপাদানগুলো সহজে নির্গত হয়। এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও দূর করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
প্রতি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পরিষ্কার হাতে পছন্দের তেলটি ২-৩ ফোঁটা করে নাভিতে দিন। এরপর হালকা করে কিছুক্ষণ মালিশ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনি নিজেই টের পাবেন পরিবর্তন।
সতর্কতা:
• যাদের ত্বক অতিমাত্রায় সংবেদনশীল, তারা আগে একবার প্যাচ টেস্ট করে নেবেন।
• কোনো তেল ব্যবহারে অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া হলে সাথে সাথে বন্ধ করুন।
• চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভবতী নারীরা এসব ঘরোয়া পদ্ধতি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন।
আমাদের শরীর অনেকটা যন্ত্রের মতো, তবে তার যত্নও নিতে হয় ভালোবাসা দিয়ে। আধুনিক ব্যস্ত জীবনে যখন সময়ের অভাব, তখন এভাবে ছোট ছোট ঘরোয়া অভ্যাসই দিতে পারে বড় উপকার। নাভিতে ফোঁটা ফোঁটা তেল ফেলার এই মিরাকেল ট্রিক—হয়তো আপনার জন্যও হয়ে উঠতে পারে এক নতুন স্বাস্থ্য-অভিজ্ঞতা!
নুসরাত