ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

সকালের ৫টি অভ্যাস যা আপনার কর্মজীবনের সফলতা নিশ্চিত করবে

প্রকাশিত: ২২:০২, ২০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২২:০৮, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সকালের ৫টি অভ্যাস যা আপনার কর্মজীবনের সফলতা নিশ্চিত করবে

ছবি: প্রতীকী

বর্তমানে কর্মজীবনের অনিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতা ও ছাঁটাইয়ের ভয় অনেককেই সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে যাওয়ার ইচ্ছা নষ্ট করে দেয়। কিন্তু আপনি যদি সত্যিই পেশাগত সফলতা চান, তাহলে দিনের শুরুটা কীভাবে করছেন, সেটাই হয়ে উঠতে পারে আপনার ভবিষ্যৎ গঠনের চাবিকাঠি।

 

সম্প্রতি টিকটকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় ashtonhallofficial নামের এক ক্রিয়েটর সকাল ভোরে ঘুম থেকে উঠে সময় ধরে ধরে সকালের রুটিন পালন করছেন। ভিডিওটি ১০৯ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ পেয়েছে, আর সেই সূত্র ধরেই ক্যারিয়ার প্ল্যাটফর্ম Resume.io গবেষণা করে জানিয়েছে—সকালের ৫টি ‘মাস্ট-হ্যাভ’ অভ্যাস কিভাবে কর্মদক্ষতা ও পেশাগত সফলতা বাড়াতে পারে।

 

সফল ব্যক্তিদের সকালের রুটিন কেমন?

জেফ বেজোস (অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পদ: ২০২ বিলিয়ন ডলার):
বেজোস সকাল ৬:৩০টার দিকে ঘুম থেকে ওঠেন। দিন শুরু করেন ধীরগতিতে—স্ক্রিন-মুক্ত সময়ে পরিবার নিয়ে নাশতা করেন ও জার্নাল লেখেন। তার এই ব্যালেন্সড রুটিন প্রমাণ করে সফলতা মানেই তাড়াহুড়া নয়।

মার্ক জাকারবার্গ (মেটার সিইও, সম্পদ: ১৮৮.১ বিলিয়ন ডলার):
তিনি সকাল ৮টায় ঘুম থেকে ওঠেন এবং ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ চেক করেন। প্রতিদিন একই ধরনের পোশাক পরেন যাতে "ডিসিশন ফ্যাটিগ" না হয়। এই অভ্যাস ছিল স্টিভ জবস ও ওবামারও।

 

টিম কুক (অ্যাপলের সিইও, সম্পদ: ২.৪ বিলিয়ন ডলার):
সবচেয়ে আগে ওঠেন—সকাল ৩:৪৫টায়। ঘুম থেকে উঠে ইমেইল চেক করেন, সংবাদ পড়েন এবং ৬টার আগেই শরীরচর্চা করেন। তার মতে, এমন গোছানো রুটিন তাকে সারা দিন ফোকাসড থাকতে সাহায্য করে।

ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ আমান্ডা অগাস্টিনের মতে, সফল হতে হলে ৩টায় ঘুম থেকে ওঠা জরুরি নয়। বরং তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ—নিয়মিততা, ভারসাম্য এবং নিজের মতো করে দিনের শুরু। নিচে দেওয়া হলো তার পরামর্শ অনুসারে ৫টি ‘মাস্ট-হ্যাভ’ অভ্যাস:

নিয়মিত সময় ধরে জাগুন
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। এতে শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ি (সার্কাডিয়ান রিদম) সঠিকভাবে কাজ করবে এবং সকালে ক্লান্তি কেটে গিয়ে আপনি আরও চাঙা থাকবেন।

ঘুম থেকে উঠে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট ফোনমুক্ত থাকুন
ইমেইল বা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকুন। এটি স্ট্রেস কমাবে এবং আপনাকে শান্তভাবে ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দিন শুরু করতে সাহায্য করবে।

প্রাকৃতিক আলোয় কিছু সময় থাকুন
সকালবেলা আলো পাওয়া আপনার ঘুমের চক্রকে ঠিক রাখবে, মেজাজ ভালো করবে এবং রাতে ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করবে।

শরীর নড়াচড়া করুন
হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটা কিংবা ছোট একটি ওয়ার্কআউট করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, মনোযোগ বাড়বে ও সারাদিনে মেজাজ ফুরফুরে থাকবে।

দিনের উদ্দেশ্য ঠিক করুন
সকালে কয়েক মিনিট সময় নিয়ে ১-৩টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ লিখে ফেলুন। এতে আপনি ফোকাসড থাকবেন এবং "ব্যস্ত" থাকার চাপে না পড়ে "উৎপাদনশীল" হবেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের ইতিবাচক চিন্তা আপনার মানসিক অবস্থা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে। দিনের শুরুতে আপনি যেসব ভাবনা মনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন, সেগুলোই আপনার সারা দিনের কর্মক্ষমতা এবং মানসিকতা নিয়ন্ত্রণ করে।

সুতরাং, জীবনে যদি সাফল্য যদি চান—তাহলে আপনার সকালের অভ্যাসগুলোকে নতুনভাবে সাজান।

রবিউল হাসান

×