
ছবিঃ সংগৃহীত
অনেক সময় আমরা আশ্চর্য হই, কেউ কেউ ষাট কিংবা সত্তরের কোঠায় পৌঁছেও এতটা প্রাণবন্ত আর তরুণ মনের অধিকারী কীভাবে হয়? রহস্যটা খুব সাধারণ, কিন্তু অবহেলিত, তা হলো, তাদের রাত্রীকালীন/সান্ধ্যকালীন কিছু নিয়মিত অভ্যাস। আজ আমরা জানব এমন সাতটি সান্ধ্যকালীন অভ্যাস সম্পর্কে, যেগুলো অনুসরণ করলে বয়স আপনার জন্যশুধুই একটা সংখ্যা হয়ে দাঁড়াবে।
১. দিনের শেষে নিজেকে উইন্ড-ডাউন করা
দিনভর ব্যস্ততা, দৌড়ঝাঁপ, কাজের চাপ—সব মিলিয়ে আমাদের মাথা থাকে বিশৃঙ্খল। যে সব বুমাররা নিজেদের বয়সের তুলনায় অনেক তরুণ বোধ করেন, তাঁরা রাতে উইন্ড-ডাউন রুটিন মেনে চলেন। যেমনঃ বই পড়া, হালকা যোগব্যায়াম বা এক ঘণ্টা আগে স্ক্রিন বন্ধ করে দেওয়া—এসব ছোট্ট অভ্যাসই তাঁদের ঘুমকে করে তোলে শান্তিপূর্ণ ও পুনরুজ্জীবিত।
২. রাতে বেশি না খাওয়া
সকালে রাজা, দুপুরে যুবরাজ আর রাতে দরিদ্রের মতো খাওয়া—এই প্রবাদটা মেনে চলা বুমাররা অনেক তরুণ অনুভব করেন। কারণ দেরি করে ভারী খাবার খাওয়া ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, হজমে সমস্যা করে, এতে করে ক্লান্ত লাগে। যারা রাতে হালকা খাবার খান বা সন্ধ্যার পর আর কিছু খান না, তাঁরা সকালে জেগে ওঠে ফ্রেশ ও এনার্জিতে ভরপুর অনুভব করেন।
৩. সচেতনতার চর্চা
মন সব সময়ই দৌড়াচ্ছে—এটাকে বলে বানর মাইন্ড। বয়স্ক কিন্তু তরুণ অনুভব করা মানুষরা এই বানর মনকে শান্ত করতে পারেন নিয়মিত ধ্যান, নিঃশ্বাসের অনুশীলন, বা কেবল পাঁচ মিনিটের নীরবতায় বসে থেকে। এই অভ্যাস শুধু মনকে শান্ত রাখে না, গবেষণায় দেখা গেছে—এটি কোষের বার্ধক্যও ধীর করে দিতে পারে।
৪. সামাজিক যোগাযোগ ধরে রাখা
মানুষ সামাজিক জীব। রাতে ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, পরিবারের সঙ্গে ডিনার, বা প্রতিবেশীর সঙ্গে হাঁটাহাঁটি—এই ছোট ছোট সংযোগগুলো আমাদের মানসিক সুস্থতা বাড়ায়, মনকে করে হালকা। যারা নিয়মিত মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাঁরা বয়স নিয়ে কম ভাবেন এবং জীবন উপভোগ করতে জানেন।
৫. কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে তিনটি ভালো জিনিসের কথা লিখে রাখা বা ভাবা—এই অভ্যাস মনকে করে দেয় ইতিবাচক ও শান্ত। একটা ভালো কফি, প্রিয়জনের হাসি, কাজের প্রশংসা—এমন হাজারো ছোট বিষয় আছে, যেগুলোর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ হতে পারি। এভাবেই এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি আসে, যা আপনাকে তরুণ রাখে ভেতর থেকে।
৬. নির্দিষ্ট সময়ের ঘুম
রাত ১০টায় ঘুমানো, সকাল ৬টায় ওঠা—এই নিয়মে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি ঠিক থাকে। তাতে ঘুম হয় গভীর, মন সতেজ আর শরীর থাকে চনমনে। তরুণ অনুভব করতে চাইলে শুধু কত ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন তাই নয়, কখন ঘুমাচ্ছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ।
৭. শেখা বন্ধ করা যাবে না
বয়স বাড়লে শেখা বন্ধ করে দিলে মন বুড়ো হয়ে যায়। যারা প্রতিদিন কিছু না কিছু শেখেন—নতুন বই, নতুন রান্না, গান, ভাষা বা অনলাইন কোর্স—তাঁদের জীবন থাকে প্রাণবন্ত। গবেষণা বলছে, নিয়মিত শেখার অভ্যাস মস্তিষ্ককে চাঙা রাখে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
বয়সের ছাপ শরীরে পড়বেই—তবে আপনি কেমন অনুভব করছেন, সেটার মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে। আর তাই এই সাতটি অভ্যাস শুধু আপনাকে সুস্থ রাখবে না, রাখবে তরুণ, প্রাণবন্ত ও আশাবাদী।
সূত্রঃ গ্লোবাল ইংলিশ এডিটিং
আরশি