
ছবি: সংগৃহীত
চুল বা দাড়ি পাকা বললেই অনেকের মনে হয়—এটা বয়স বাড়ার স্বাভাবিক লক্ষণ। কিন্তু ইদানীং এমনটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না? ২০ কিংবা ২৫ বছরের মধ্যেই অনেকের মাথায় একগুচ্ছ পাকা চুল, মুখে পাকা দাড়ি! কেবল বংশগত কারণে নয়, এর পেছনে আছে আরও গভীর বৈজ্ঞানিক কারণ।
আমাদের চুল বা দাড়ির স্বাভাবিক রঙ মূলত নির্ভর করে ‘মেলানিন’ নামের একটি রঞ্জকের (pigment) উপর। এই মেলানিন তৈরি করে মেলানোসাইট নামক কোষ, যেগুলি চুলের গোড়ায় (hair follicle) অবস্থান করে।
এই মেলানোসাইটের উৎপত্তি আবার হয় স্টেম সেল থেকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই স্টেম সেল ও মেলানোসাইট কোষ ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় বা অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে মেলানিন কমতে থাকে → চুলের রঙ বদলায় → চুল ও দাড়ি পাকা শুরু করে।
চিকিৎসকদের মতে, অল্প বয়সে চুল বা দাড়ি পাকার কারণ হতে পারে একাধিক:
জিনগত (Genetic): পরিবারের কারও যদি কম বয়সে চুল পাকার ইতিহাস থাকে, তাহলে সেটি উত্তরাধিকারসূত্রে আসতে পারে।
অপর্যাপ্ত পুষ্টি: ভিটামিন বি১২, আয়রন, কপার বা জিঙ্ক-এর অভাব সরাসরি প্রভাব ফেলে চুলের রঙে।
অক্সিডেটিভ স্ট্রেস: শরীরে অতিরিক্ত ফ্রি র্যাডিক্যাল জমা হলে মেলানোসাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে চুল পাকে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: থাইরয়েড বা অন্যান্য হরমোনজনিত সমস্যা চুল পাকার অন্যতম কারণ হতে পারে।
ধূমপান ও দূষণ: নিয়মিত ধূমপান এবং দূষণের প্রভাবে চুলের কোষগুলিতে অক্সিডেটিভ ক্ষতি হয়, যা চুল পাকায়।
মানসিক চাপ ও অনিদ্রা: দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক চাপ থাকলে শরীরের স্বাভাবিক কোষক্রিয়া ব্যাহত হয়, যার প্রভাব পড়ে চুলে।
পাকা চুল উঠলেও আতঙ্কিত না হয়ে প্রথমে পুষ্টি ও জীবনধারা ঠিক করুন। অতিরিক্ত চুল পাকলে রক্ত পরীক্ষা করে হরমোন ও ভিটামিনের মাত্রা দেখা জরুরি। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন। ধূমপান ও অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের অভ্যাস ত্যাগ করুন। বয়স কম হোক বা বেশি, চুল পাকার পেছনে সব সময় বয়স দায়ী নয়। দেহের ভিতরের সংকেত বুঝে আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে প্রতিরোধ করা যায় এই অকাল চুল পাকা। তাই সময় থাকতে নজর দিন নিজের স্বাস্থ্য ও জীবনধারার দিকে।
ফারুক