ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

আজই চাকরি ছাড়ুন, যদি সত্যিই বাঁচতে চান!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:২৫, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

আজই চাকরি ছাড়ুন, যদি সত্যিই বাঁচতে চান!

ছবি: সংগৃহীত

এই যুগে সবচেয়ে বড় অপচয় হলো প্রতিভার অপচয়। কোটি কোটি মানুষ রয়েছেন যারা চাইলে পৃথিবীকে বদলে দিতে পারেন, কিন্তু করছেন না। বিশেষ করে এমন সব মানুষ, যাদের নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার স্বাধীনতা আছে, কিন্তু তাদের সিভি দেখলে সেটা বোঝার উপায় নেই। তারা মেধাবী, সম্ভাবনাময়, কিন্তু আটকে পড়েছেন একঘেয়ে, অর্থহীন কিংবা সমাজের জন্য ক্ষতিকর চাকরিতে।

এই অপচয়ের প্রতিষেধক হতে পারে—নৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা। এটি এমন এক মানসিকতা, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের কর্মজীবন উৎসর্গ করে দেয় সময়ের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য। যেমন জলবায়ু সংকট, দুর্নীতি, অসমতা কিংবা ভবিষ্যতের মহামারি। এটা এক ধরনের গভীর তাড়না। পৃথিবীতে ইতিবাচক প্রভাব রাখার এবং এমন একটি উত্তরাধিকার রেখে যাওয়ার, যা সত্যিই অর্থবহ।

নৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা শুরু হয় একটি সহজ উপলব্ধি থেকে: আমাদের জীবন একটাই। পৃথিবীতে কাটানোর সময়ই আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। সময় কিনে নেওয়া যায় না। একটি পূর্ণকালীন চাকরিজীবন মানে প্রায় ৮০,০০০ ঘণ্টা। এই সময় আপনি কীভাবে ব্যয় করছেন, সেটাই হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় নৈতিক সিদ্ধান্ত।
 
না উচ্চাকাঙ্ক্ষী, না আদর্শবাদী:
অনেক কাজ আছে যেগুলোর কোনো স্পষ্ট মূল্য নেই। যেমন—এমন রিপোর্ট লেখা যা কেউ পড়ে না, বা এমন কর্মীদের ব্যবস্থাপনা করা যাদের ব্যবস্থাপনা দরকারই নেই। প্রায় ৮% কর্মী মনে করেন তাদের কাজ সম্পূর্ণ অর্থহীন। ১৭% কর্মী সন্দিহান যে তাদের কাজ সমাজে কোনো অবদান রাখে কি না।

এই ধরনের চাকরির একটি নাম দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড গ্রেবার, “বুলশিট জবস”। এর মধ্যে পড়েন অনেক কর্পোরেট ব্যবস্থাপক, লবিস্ট, ইনফ্লুয়েন্সার বা পরামর্শক, যাদের কাজ না থাকলেও দুনিয়ায় খুব একটা পার্থক্য হতো না।

অনেকে এসব কাজ থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান "ফিনান্সিয়াল ফ্রিডম"-এর মাধ্যমে অর্থাৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধনী হয়ে বিশ্রামে চলে যাওয়া। কিন্তু জীবনের অর্থ কি শুধু আয় করে অলস জীবনযাপন?

উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু আদর্শবাদহীন: এই গোষ্ঠী অনেক সফল মানুষকে নিয়ে গঠিত, যারা উচ্চতর বেতনের চাকরি করেন, যেমন—ব্যাংকার, কর্পোরেট আইনজীবী বা পরামর্শক। কিন্তু এসব পেশার সামাজিক প্রভাব প্রায় শূন্য, বরং কখনো কখনো নেতিবাচক। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন কর্পোরেট আইনজীবী বছরে সমাজের প্রায় ৩০,০০০ ডলার ক্ষতি করেন।

 আদর্শবাদী, কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষাহীন:  অনেক তরুণ আদর্শবাদী হলেও ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে অনাগ্রহী। তারা ছোট পরিসরে কাজ করতে চান, অল্প সময় কাজ করে বাকিটা সময় ‘লাইফস্টাইল’ উপভোগ করতে চান। “ছোটটাই সুন্দর” বা “গ্লোবাল ভাবো, লোকালি কাজ করো” এই আদর্শে তারা যেন এক ধরনের আত্মতৃপ্তি খুঁজে পান।
 

শহীদ

×