
ছবি: সংগৃহীত।
প্রেমে পড়া সহজ, কিন্তু প্রেম ধরে রাখা কঠিন। আর এর চেয়েও কঠিন হলো, দিনের পর দিন একই মানুষকে ভালোবাসতে থাকা। এই কঠিন কাজটিই অনেকেই করে থাকেন বৈবাহিক জীবনের মাধ্যমে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—কেন কিছু দম্পতি বছরের পর বছর একসঙ্গে সুখে থাকেন, অথচ অনেক সম্পর্ক পথেই ভেঙে যায়? এর পেছনে মূল কারণ হলো, অনেকে বিয়ের পর সঙ্গীকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ করে দেন, যেখান থেকেই শুরু হয় সমস্যার সূত্রপাত। তবে কিছু দম্পতি ঠিকই টিকিয়ে রাখেন সম্পর্কের উষ্ণতা। চলুন জেনে নিই, কী কারণে তারা সুখী থাকেন—
পরিবারের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট সীমারেখা তৈরি করে
সুখী দম্পতিরা সব সময় একে অপরকে প্রাধান্য দেন এবং একটি দল হিসেবে জীবন চালিয়ে যান। তারা নিজেদের পারিবারিক বিষয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পরিবারের কাছে অভিযোগ করেন না এবং পারিবারিক প্রভাবের বাইরে থেকে সিদ্ধান্ত নেন। সব বিষয়ে পরিবারকে না জড়িয়ে নিজেদের মধ্যেই স্পষ্ট ও খোলামেলা কথা বলেন। তারা নিজেদের একটি স্বতন্ত্র পরিবার হিসেবে বিবেচনা করেন এবং প্রাইভেসি বজায় রাখেন।
একজন আরেকজনের বেস্ট ফ্রেন্ড
সুখী দম্পতিরা শুধু ভালোবাসেন না, বরং একে অপরকে গভীরভাবে বোঝেনও। তারা একে অপরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। কাজ, জীবনদর্শন, মতামত—সব কিছুতেই থাকে মিল। তারা একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং তাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের মজবুত ভিত্তির ওপর।
কঠিন সময়ে পাশে থাকে
বলা হয়, কঠিন সময়ে সত্যিকারের সঙ্গীকে চেনা যায়। সুখী দম্পতিরা একসঙ্গে নানা দুঃখ-কষ্টের সময় পাড়ি দিয়ে এসেছেন। এসব মুহূর্তই তাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় এবং গভীর করেছে।
ত্রুটি গ্রহণ করতে শেখে
মানুষ মাত্রেই ভুল করে। সুখী দম্পতিরা একে অপরের ছোটখাটো ত্রুটি বা ভুলগুলো এড়িয়ে যান এবং বরং সঙ্গীর গুণাবলি তুলে ধরতে পছন্দ করেন। তারা সঙ্গীকে বদলে ফেলার চেয়ে যেভাবে আছেন, সেভাবেই মেনে নিতে অভ্যস্ত। পাশাপাশি ভালোবাসার পাশাপাশি একজন ব্যক্তি হিসেবেও সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন।
ঝগড়া করলেও তা সম্পর্ক নষ্ট করে না
মতবিরোধ বা ঝগড়া থাকা দাম্পত্য জীবনের স্বাভাবিক অংশ। দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের দম্পতিরাও ঝগড়া করেন, তবে তা হয় যথার্থ কারণেই। তারা নিজেদের ভালোবাসেন বলেই প্রত্যাশাও বেশি থাকে এবং সেই প্রত্যাশা থেকেই একে অপরকে শুধরে নিতে চান। ঝগড়ার পরও তারা একসঙ্গে থাকার পথ খুঁজে নেন।
সুখী দাম্পত্য জীবনের রহস্য লুকিয়ে থাকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া ও কঠিন সময়ে একে অপরের পাশে থাকার মধ্যে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইলে প্রয়োজন আন্তরিকতা, সময় দেওয়া এবং নিরন্তর যত্ন। যারা এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দেন, তারাই বছরের পর বছর ভালোবেসে থাকতে পারেন একই মানুষকে।
সায়মা ইসলাম