
ছবি সংগৃহীত
সুখী জীবন সবাই চায়, তবে কিছু আচরণ আমাদের মানসিক শান্তি ও সুখে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু অভ্যাস কিংবা আচরণ যদি জীবনের অংশ হয়ে ওঠে, তবে তা সুখী হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
১. লজ্জা, অপরাধবোধ এবং চিন্তা
লজ্জা, অপরাধবোধ এবং অতিরিক্ত চিন্তা মানুষের সুখের প্রধান বাধা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব অনুভূতি কাটিয়ে ওঠার জন্য স্ব-সহানুভূতির অনুশীলন করা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে আমরা নিজের প্রতি সদয় হতে শিখি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মনের ভার কমাতে পারি।
২. মন্দ সম্পর্ক বা কাজের মধ্যে আটকে থাকা
একটি দুর্দশাগ্রস্ত সম্পর্ক বা চাকরি মানুষকে আস্থাহীন করে, সেখানে থাকলে সুখের পথে কোনোভাবেই অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়। জীবনে এমন পরিস্থিতি থেকেও বেরিয়ে আসা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেকোনো মন্দ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে নতুন এবং সুখী পথে চলতে ইচ্ছাশক্তি ও পদক্ষেপের প্রয়োজন।
৩. নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিনের অন্যদের জীবন দেখার পর নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে হতে পারে। তবে এটি খুবই ক্ষতিকর, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। আমাদের জীবন একেবারেই আলাদা, এবং অন্যদের সঙ্গে তুলনা না করেই আমরা সুখী হতে পারি।
৪. অন্যদের সন্তুষ্ট করার জন্য নিজেকে উপেক্ষা করা
অনেকেই অন্যদের খুশি করার জন্য নিজের চাওয়া-পাওয়া ভুলে যান, যার ফলে পরে আফসোস এবং হতাশা আসে। পরামর্শ দেওয়া হয়, নিজের চাওয়া-পাওয়া অন্যদের খুশির জন্য ত্যাগ করবেন না। এটি দীর্ঘমেয়াদী হতাশা তৈরি করতে পারে। একজন ব্যক্তির আনন্দ তাদের নিজের ইচ্ছার মধ্যে রয়েছে।
৫. “চাহিদা” বা “দাবি” ভাবনা পুনরাবৃত্তি করা
যখনই আমরা বলি, "আমাকে আরও ভালো হতে হবে," বা "আমাকে এই অবস্থায় পৌঁছানো উচিত," তখন আমরা ভবিষ্যতের প্রতি এক ধরনের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমাদের উচিত বর্তমানকে উপভোগ করা, এটি আমাদের সুখের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
৬. গভীর সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করা
পুরনো আঘাত বা অমীমাংসিত বিষয়ের ওপর চাপ দেওয়া কখনোই আমাদের সুখের জন্য সহায়ক নয়। এগুলো যতই চাপানো হোক না কেন, আমাদের জীবনে বাধা হিসেবে থেকেই যাবে। সমস্যা সমাধানের জন্য থেরাপি বা আত্মবিশ্লেষণের মাধ্যমে এগুলোকে সমাধান করা প্রয়োজন।
৭. একাকিত্ব
মানুষ সামাজিক প্রাণী এবং একাকিত্ব আমাদের মনের শান্তির জন্য ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা জানান, একাকিত্ব দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে এটি অবসাদ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা মানুষের সুখ এবং মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সুখী জীবন সৃষ্টির জন্য একে একে এই অভ্যাসগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করা দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিজের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে, প্রত্যেক মুহূর্তে সচেতন থাকা এবং মিথ্যাচারের চেয়ে বাস্তবিক পথে চলা সুখের মূল চাবিকাঠি।
এসএফ