ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

 চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে? এই ৮টি অভ্যাসে ফিরবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল!

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

 চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে? এই ৮টি অভ্যাসে ফিরবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল!

সংগৃহীত

চুল হলো একজন মানুষের সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ। তবে আজকের ব্যস্ত ও দূষণে ভরা জীবনে অনেকেই অতিরিক্ত চুল পড়া, আগা ফাটা কিংবা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন। শুধু বাইরের যত্ন নয়, ভেতর থেকেও চুলের সঠিক পুষ্টি ও যত্ন জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ ও বিজ্ঞানসম্মত অভ্যাস গড়ে তুললেই চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি অনেকটাই ত্বরান্বিত হতে পারে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই ৮টি কার্যকর উপায়, যা চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে-

১। মাথার তালুতে নিয়মিত এসেনশিয়াল অয়েল ম্যাসাজ
চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন না হলে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন নারকেল, অলিভ, জোজোবা বা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল হালকা গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এটি শুধু চুল পড়া কমায় না, বরং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। রাতে ম্যাসাজ করে রেখে দিলে চুল আরও নরম ও প্রাণবন্ত হয়।

২। প্রতি মাসে সামান্য ট্রিম করুন
অনেকেই মনে করেন, চুল কাটা মানেই চুল ছোট হয়ে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবে চুলের আগা ফাটা, রুক্ষতা বা ভেঙে পড়া রোধ করতে প্রতি মাসে অন্তত একবার চুলের অল্প অংশ ছাঁটা জরুরি। এতে চুল স্বাস্থ্যবান থাকে এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধির গতি বাড়ে।

৩। প্রোটিন ও পুষ্টিতে ভরপুর খাদ্য গ্রহণ করুন
চুলের গঠন কেরাটিন নামক প্রোটিন দিয়ে তৈরি। ফলে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকলে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। ডিম, মাছ, ডাল, বাদাম, মটরশুঁটি, দুধ এবং দইয়ের মতো খাবার চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শুধু বাইরের যত্ন নয়, চুলের গভীরে পুষ্টি পৌঁছাতে হলে ভেতর থেকেও শরীরকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন।

৪। অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং পরিহার করুন
চুল স্টাইল করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় হেয়ার স্ট্রেইনার, কার্লার বা ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করি। কিন্তু নিয়মিত হিট দেওয়া চুলের কিউটিকল নষ্ট করে, যার ফলে চুল হয়ে পড়ে শুষ্ক, ভঙ্গুর ও নিষ্প্রাণ। প্রয়োজন ছাড়া হিট-স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন এবং প্রয়োজনে হিট-প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন।

৫। চুলে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখুন
যেভাবে ত্বক আর্দ্রতা হারালে রুক্ষ হয়ে পড়ে, ঠিক একইভাবে চুলও আর্দ্রতা হারালে রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে যায়। নিয়মিত ভালো মানের কন্ডিশনার ব্যবহার করুন এবং সপ্তাহে একদিন গভীর কন্ডিশনিং মাস্ক বা প্রাকৃতিক হেয়ার প্যাক লাগান। অ্যালোভেরা, মধু ও নারকেল তেল দিয়ে তৈরি প্যাক চুলের জন্য দারুণ উপকারী।

৬। টাইট হেয়ারস্টাইল থেকে দূরে থাকুন
অনেকেই প্রতিদিন চুল টাইট করে বাঁধেন বা ব্রেইড করেন। কিন্তু টানটান করে বাঁধলে চুলের গোড়ায় চাপ পড়ে, ফলে হেয়ার ফলিকল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হেয়ার লস বেড়ে যায়। খোলা বা হালকা করে বাঁধা হেয়ারস্টাইল চুলের জন্য অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

৭। স্ট্রেস কমান, নিজের যত্ন নিন
অতিরিক্ত মানসিক চাপ সরাসরি হরমোনাল ভারসাম্য নষ্ট করে, যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট নিজের জন্য সময় রাখুন-মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা হালকা হাঁটাচলা করুন। পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক প্রশান্তি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অপরিহার্য।

৮। তুলার বালিশ নয়, সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার করুন
তুলার বালিশে ঘর্ষণের কারণে রাতে ঘুমের সময় চুল ছিঁড়ে যায়, যা সময়ের সঙ্গে বোঝা যায় না। সিল্ক বা স্যাটিন কাপড়ের বালিশের কভার ঘর্ষণ কমায় এবং চুলের ভাঙা ও ক্ষতি রোধ করে। এটি চুলে বাড়তি কোমলতা এবং ঘনত্ব বজায় রাখতেও সাহায্য করে।


চুল পড়া বা বাড়তে না পারা সমস্যার কোনো ম্যাজিকাল সমাধান নেই, তবে প্রতিদিনের যত্ন, পুষ্টিকর খাবার, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আপনাকে এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত ফল। মনে রাখবেন, চুলের যত্ন কেবল রূপচর্চার অংশ নয়, এটি আপনার সার্বিক সুস্থতার প্রতিচ্ছবি। তাই আজ থেকেই শুরু হোক যত্ন-আপনার চুল, আপনার আত্মবিশ্বাস!

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/238uzhzs

আফরোজা

×