ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

ভুল সময়ে খেলে কাজ করবে না সাপ্লিমেন্ট! জানুন কোন ভিটামিন কখন খাবেন

প্রকাশিত: ০০:৪৭, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

ভুল সময়ে খেলে কাজ করবে না সাপ্লিমেন্ট! জানুন কোন ভিটামিন কখন খাবেন

ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী হতে পারে—তবে শর্ত হলো, সেগুলো ঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে খেতে হবে। যেমন খাবারের ক্ষেত্রে হয়, তেমনি ভিটামিন ও মিনারেলও শরীরে সবচেয়ে ভালোভাবে শোষিত হয় নির্দিষ্ট শর্তে। কিছু পুষ্টি উপাদান চর্বির সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করে, কিছু খালি পেটে, আবার কিছু দিনে ভাগ করে খাওয়া বেশি উপযোগী।

ভুল সময়ে খেলে সবচেয়ে কার্যকর সাপ্লিমেন্টও কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে পারে না। তাই জানা জরুরি—কোন ভিটামিন বা মিনারেল কখন খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।

ভিটামিন ডি৩:
ভিটামিন D3 একটি ফ্যাট-সোল্যুবল ভিটামিন, অর্থাৎ এটি সঠিকভাবে শোষিত হতে হলে খাদ্যতালিকায় চর্বি থাকা প্রয়োজন। তাই সকালের নাস্তা—যদি সেখানে ঘি, বাদাম, অ্যাভোকাডো বা ডিমের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে—তখন এটি খাওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত।
সকালে খাওয়ার আরেকটি সুবিধা হলো, এটি শরীরের প্রাকৃতিক রিদমকে সাপোর্ট করে। ভিটামিন D মেজাজ ও শক্তি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ফলে এটি সকালে খেলে মনোযোগ বৃদ্ধি ও ঘুমের ধরণ উন্নত হতে পারে। গবেষণা বলছে, সকালে খেলে এটি মেলাটোনিন লেভেলে বিঘ্ন ঘটায় না, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে।

ওমেগা-৩:
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্যন্ত্র ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হিসেবে পরিচিত। তবে এটি শোষিত হতে হলেও খাদ্যে চর্বি থাকা দরকার। তাই সকালের বা দুপুরের প্রধান খাবারের সঙ্গে এটি খেলে সবচেয়ে ভালো ফল মেলে।
এই সময় খেলে শরীর ভালোভাবে এটি গ্রহণ করে, এবং খালি পেটে খাওয়ার পর যেসব “ফিশি বার্প” বা অস্বস্তি হতে পারে, তা কমে যায়। জলপাই তেল, বাদাম বা বীজ জাতীয় খাবারের সঙ্গে খেলে উপকারিতা আরও বাড়ে।

জিংক :
ইমিউনিটি, ঘা শুকানো এবং ত্বকের স্বাস্থ্যে জিংকের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এটি ক্যালসিয়াম ও আয়রনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে শোষিত হয়, তাই একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।
সবচেয়ে ভালো হয়, খাবার খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে—মধ্যসকাল বা মধ্যদুপুরে একা জিংক খাওয়া। এতে শরীর আগের খাবার হজমের সময় পায় এবং অন্য খনিজের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় না। প্রয়োজন হলে হালকা কোনো নাস্তার সঙ্গে খেতে পারেন, এতে পেটে সমস্যা বা বমি ভাব কমে।

ম্যাগনেসিয়াম:
শরীরকে শান্ত ও শিথিল করতে সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়াম। এটি পেশির চাপ কমায়, ঘুম ভালো করে এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীর দিনে শেষ ভাগে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণে ভালো সাড়া দেয়।
পরামর্শ হলো—মাত্রাটি দুই ভাগে ভাগ করে, এক ভাগ বিকেলে এবং অন্য ভাগ রাতে খাবারের সঙ্গে খাওয়া। এতে উপকারিতা আরও বাড়ে, ঘুমও হয় আরামদায়ক। রাতের খাবারে ডার্ক চকলেট বা পালং শাক থাকলে এর কার্যকারিতা বাড়ে।

আয়রন :
আয়রন সবচেয়ে ভালোভাবে শোষিত হয় খালি পেটে খেলে। তাই সকালের নাস্তার পরে ও দুপুরের আগে সময়টা আদর্শ।
আয়রন খাওয়ার সময় চা ও কফি এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো শোষণে বাধা দেয়। তবে ভিটামিন C যুক্ত কিছু যেমন কমলার রস বা আমলকীর সঙ্গে খেলে আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি পায়। এই সময় খেলে পেটের অস্বস্তিও কম হয় এবং এনার্জি বৃদ্ধি পায়।

সঠিক সময়ে ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে শরীর এগুলোর সর্বোচ্চ উপকার পায়। তাই শুধু কোন সাপ্লিমেন্ট নিচ্ছেন, তা নয়—কখন নিচ্ছেন, সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

 

রাজু

×